সম্প্রীতির নজির! পিছনের সিটে ক্যাব চালককে নামাজ পড়তে দিয়ে সামনের আসনে বসলেন যাত্রী
রাজনৈতিক নেতাদের দিনভর ঘৃণা-ভাষণ। রাস্তার একপারে ‘জয় শ্রীরাম’ তো অন্য পারে ‘আল্লা হু আকবর’। এই খণ্ড দৃশ্যের বাইরেও ছড়িয়ে আছে সেই অখণ্ড ভারত, যেখানে বসবাস করে যারা, তাদের পরিচয় শুধুই মানুষ। তেমনই এক নজির রাখলেন প্রিয়া সিং। নেতাদের মতো লোকদেখানো বিরাট মহোৎসব করে জনহিতৈষী সেবা নয়। একটি অ্যাপনির্ভর ক্যাব-চালকের গাড়ির পিছনের আসনে রমজান মাসের সান্ধ্যকালীন নমাজ পড়ার ছবি সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করে দেশবাসীর অকুণ্ঠ প্রশংসা কুড়িয়েছেন প্রিয়া।
সেই ছবি গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়া মাত্র লাখখানেকেরও বেশি মানুষ তাঁদের পছন্দ প্রকাশ করেছেন। হাজার পাঁচেকেরও বেশি লোক মন্তব্য করেছেন। ছবিতে কী লিখেছেন প্রিয়া? তিনি লিখেছেন, বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে আমি একটি উবর নিয়েছিলাম। ১০ মিনিট পরই ড্রাইভারের মোবাইলে আজান বেজে ওঠে। আমি তাঁর কাছে জানতে চাই, আপনি ইফতার করেছেন? তিনি উত্তর দেন, হ্যাঁ আজ রাস্তাতেই করেছি, কারণ আজ আমার রেন্টাল ডিউটি ছিল। আমি তাঁকে আবার বলি, আপনি কি নমাজ পড়তে চান! উনি বলেন, নমাজ পড়তে দেবেন আপনি! তখন আমি তাঁকে গাড়ি রাস্তার ধারে পার্ক করতে বলি। আমি সামনের আসনে গিয়ে বসি। উনি পিছনের সিটে গিয়ে নমাজ পড়েন।
প্রিয়া আরও লিখেছেন, এটাই সেই ভারত, যার সম্পর্কে আমার বাবা-মা আমাকে চিনতে শিখিয়েছেন। তাঁদের কাছ থেকে এই শিক্ষাই আমি পেয়েছি।
ব্যস, এইটুকুই! এটুকুই লিখেছেন তিনি। আর তাতেই সমাজ-দুনিয়ায় আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের গালে এক চরম থাপ্পড় মেরে দিয়েছেন প্রিয়া। পরধর্মের প্রতি এই মমত্ব, শ্রদ্ধা ও সহনশীলতাই তো ভারতের শিক্ষা, মন্তব্য করেছেন কেউ কেউ। আসিফ খান নামে একজন মন্তব্য করেছেন, খবরে আমরা যা দেখি, আমাদের ভারত যে তার থেকে ভিন্ন, তা জেনে খুব ভালো লাগল। বিবেক চতুর্বেদী নামে আরও একজন লিখেছেন, আমাদের ভারতীয়দের রক্তে যা আছে, আপনি সেটাই করে দেখিয়েছেন। একমাত্র ভারতীয়দের মধ্যেই সব মানুষের প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা রয়েছে। এই রকম কাজ আরও হোক।