রথ যাত্রার ইতিকথা
উড়িষ্যার প্রাচীন পুঁথি ‘ব্রহ্মাণ্ডপুরাণ’ এ জগন্নাথদেবের রথযাত্রার ইতিহাস প্রসঙ্গে বলা হয়েছে যে, এই রথযাত্রার প্রচলন হয়েছিল প্রায় সত্যযুগে। সে সময় উড়িষ্যা মালবদেশ নামে পরিচিত ছিল। সেই মালবদেশের সূর্যবংশীয় পরম বিষ্ণুভক্ত রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন স্বপ্নাদিষ্ট হয়ে ভগবান বিষ্ণুর জগন্নাথরূপী মূর্তি নির্মাণ করেন এবং রথযাত্রারও স্বপ্নাদেশ পান। পরবর্তীতে তাঁর হাত ধরেই পুরীতে জগন্নাথ মন্দির নির্মাণ ও রথযাত্রার প্রচলন শুরু হয়।
বাংলায় রথ প্রচলনের আবার ভিন্ন প্রেক্ষাপট। পুরাবিদদের মতানুযায়ী, পুরীর জগন্নাথদেবের রথযাত্রা থেকে বাংলায়ও রথযাত্রার সূচনা৷ চৈতন্য মহাপ্রভু নীলাচল থেকে এই ধারাটি বাংলায় নিয়ে আসেন৷ চৈতন্যভক্ত বৈষ্ণবরা বাংলায় পুরীর অনুকরণে রথযাত্রার প্রচলন করেন। এখন বাংলার বহু জায়গাতেই এই রথযাত্রা অত্যন্ত জনপ্রিয়৷
বাংলা আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে রথ উৎসব হয়ে থাকে। এই দিন দাদা বলরাম ও বোন সুভদ্রার সঙ্গে গুন্ডিচা মন্দিরে যান জগন্নাথ। সেখান থেকে সাতদিন পর নিজ মন্দিরে ফিরে আসেন। যাওয়ার দিনকে বলে সোজা রথ এবং একই পথে নিজ মন্দিরে ফিরে আসাকে বলে উলটা রথ।
পরপর তিনটি সুসজ্জিত রথে চেপে যাত্রা শুরু করেন তারা। গুন্ডিচা মন্দির ভ্রমণকেই আবার মাসির বাড়ি যাওয়া মনে করেন অনেকে। পুরাবিদেরা বলেন, রাজা ইন্দ্রদ্যুম্নের স্ত্রীই ছিলেন গুণ্ডিচা। তবে এ নিয়ে পণ্ডিতদের মধ্যে মতবিভেদ দেখা যায়।