বাছাই করা নেতারাই অমিত শাহের বৈঠকে? কোন্দল এড়ানোর চেষ্টা বঙ্গবিজেপির?
কলকাতায় অমিত শাহর (Amit Shah) সাংগঠনিক বৈঠকে আমন্ত্রিতদের তালিকায় কাদের রাখা হবে বাছাই শুরু করল বঙ্গ বিজেপির ক্ষমতাসীন শিবির। ক্ষোভ-বিক্ষোভ রুখতে পছন্দের ও নিজের গোষ্ঠীর লোককেই বৈঠকে আমন্ত্রণ করা হচ্ছে বলে খবর। বস্তুত, এই কারণেই দলের রাজ্য সংগঠন নিয়ে কোনও ক্ষোভের কথা সরাসরি শাহকে বলার সুযোগ পাচ্ছেন না বিদ্রোহীরা। কারও কিছু বলার থাকলে লিখিত দেওয়ার নির্দেশিকাও জারি হতে চলেছে।
যদিও সুকান্ত-শুভেন্দুদের (Suvendu Adhikari) নেতৃত্বে চলা বর্তমান রাজ্য কমিটিতে যে সাংগঠনিক ত্রুটি-বিচ্যুতি রয়েছে, তা আটকাতে ক্ষমতাসীন শিবিরের নাম বাছাইয়ের প্রচেষ্টা কতটা সফল হবে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। কারণ, বিক্ষুব্ধ শিবিরের নেতারাও পালটা কোমর বেঁধে তৈরি হচ্ছেন। নব্য ও তৎকাল নেতারা যেভাবে পুরনো ও অভিজ্ঞ নেতাদের সাইডলাইনে পাঠিয়ে দিয়েছেন সেই ক্ষোভের কথা শাহকেই উগড়ে দিতে চান বিদ্রোহী নেতারা। ইতিমধ্যেই অবশ্য বঙ্গ বিজেপির আভ্যন্তরীণ কোন্দল ও দল পরিচালনার ক্ষেত্রে বর্তমান রাজ্য নেতৃত্বের সামগ্রিক ব্যর্থতা নিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট গিয়েছে অমিত শাহর কাছে। স্বভাবতই বঙ্গ বিজেপির সংগঠনের বেহাল দশা নিয়ে তিনি যে ওয়াকিবহাল তা মানছেন দুই শিবির।
বিজেপি (BJP) সূত্রের খবর, ৪ মে রাতে কলকাতায় আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। পরদিন সকালে উত্তরবঙ্গে সরকারি কর্মসূচি, বিকেলে শিলিগুড়ি স্টেশন সংলগ্ন ময়দানে জনসভা করবেন তিনি। ৬ এপ্রিল উত্তর ২৪ পরগনায় সরকারি কর্মসূচি সেরে কলকাতায় ফিরে বিকেল থেকে দলের রাজ্য নেতাদের সঙ্গে সাংগঠনিক বৈঠক হবে। দলের বিপর্যয় নিয়ে জরুরি আত্মবিশ্লেষণের পাশাপাশি সংগঠনে অদক্ষ নেতা বসানো নিয়ে সরব হন সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় (Locket Chatterjee)। দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষও প্রকাশ্যেই দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের (Sukanta Majumdar) ‘অভিজ্ঞতা কম’ মন্তব্য করে বিতর্ক উসকে দিয়েছেন। সাংসদ সৌমিত্র খাঁ থেকে অনুপম হাজরাও প্রতিনিয়ত ক্ষোভ জানাচ্ছেন। এই বিরোধী শিবিরের এই ক্ষোভের ঝড় যাতে কলকাতায় সাংগঠনিক বৈঠকে শাহর সামনে আছড়ে না পড়ে, তা আটকাতে নেমে পড়েছে সুকান্ত গোষ্ঠী।
বিদ্রোহের পাশাপাশি মণ্ডল সভাপতি নিয়ে ৪৫-এর সার্কুলার ঘিরে এখন তপ্ত বিজেপি। কারণ, কেন্দ্রীয় কমিটির তরফেই মণ্ডল কমিটির সভাপতিদের বয়সের উর্দ্ধসীমা ৪৫-এ বেঁধে দেওয়া হয়েছে। দলের আদি নেতারা প্রশ্ন করেছেন, অভিজ্ঞতা না থাকলে সংগঠন সঠিকভাবে পরিচালিত হবে কী করে? দলের প্রবীণরা তো মণ্ডলের দায়িত্বে থাকতেই পারবে না? তাই দলের এই নতুন নিয়ম বাতিলের দাবি তুলল আদি নেতারা। বিজেপি মণ্ডল কমিটির সভাপতির বয়সসীমা বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বিএল সন্তোষকে (BL Santosh) চিঠি দিয়েছেন রাজ্য কর্মসমিতির সদস্য রাজকমল পাঠক।