দিলীপ-সুজনদের নিয়ে সর্বদলীয় ‘আম্পান’ কমিটি গঠন মমতার
করোনা পরিস্থিতি ও লকডাউনের জেরে আর্থিক সঙ্কটের প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সবাইকে পাশে নিয়ে চলার বার্তা দিতে আজ, বুধবার সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছিলেন। আর সেখানেই সব দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে আম্পান পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সব দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে কমিটি গড়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই কমিটিতে রয়েছেন তৃণমূলের তরফে পার্থ চট্টোপাধ্যায়, বিজেপির তরফে দিলীপ ঘোষ, সিপিএমের তরফে সুজন চক্রবর্তী-সহ প্রতিটি দলের নেতারাই।
এদিন প্রায় তিন ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলে সর্বদল বৈঠক। সেই বৈঠক শেষে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আম্পানের পরবর্তী পরিস্থিতিতে বিষয়ে শাসক দল ও বিরোধীদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই কমিটি রিপোর্ট দেবে।’ করোনা ও আম্পানে ত্রাণ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে বারবার সরব হচ্ছেন বিরোধীরা। সেই প্রসঙ্গ ওঠে এদিন সর্বদল বৈঠকেও।
সেই প্রসঙ্গেও এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন,’ক্ষতিপূরণ পাওয়ার থেকে কেউ বঞ্চিত হলে আবেদন করুন। ত্রাণ নিয়ে কোনো দলবাজির কোনো জায়গা নেই। আমার কাছে ২,১০০ অভিযোগ এসেছে। আমি সেগুলো দেখছি। আমি নিজে আমার দলের চার জনকে দল থেকে তাড়িয়েছি। জেলাশাসক, বিডিওদের বলছি আপনাদের এক সপ্তাহ সময় দিচ্ছি। সব কিছু দেখে জেনুইন কেস দেখে তালিকা তৈরি করুন। অন্যায় করার অধিকার আমাকে দল ও দেয়নি, প্রশাসন ও দেয় নি। কোনো ক্ষতিপূরণ থেকে যেন কেউ বাদ না যায়। আমার একটা ক্ষমতা আছে বলে আমি নিজের লোকদের সুবিধা পাইয়ে দেবো, তা যেন না হয়। শুধু অনুরোধ বিডিও অফিস ভাঙচুর করবেন না।’
তিনি জানান, এদিনের বৈঠকে গরিব কল্যাণ যোজনা নিয়েও কথা হয়েছে। সুন্দরবনের বিষয়ে কথা হয়েছে। নীতি আয়োগকে চিঠি লেখা হবে, যাতে টিম পাঠিয়ে একটা মাস্টার প্ল্যান তৈরি করেন। স্থায়ী সমাধানের জন্যে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘করোনা যাতে ছড়িয়ে না পরে তার জন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। কোভিড রুগিদের বিষয়ে আরো বেশি নজর দেওয়া হবে। রাজ্যের স্বার্থে সবাই যাতে এক সুরে কথা বলে, সেটা দেখতে হবে।’
এদিনের বৈঠক শেষে সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘ত্রাণ নিয়ে দুর্নীতিতে আমরা বলেছি সব। সরকার স্বীকারও করেছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা টাঙিয়ে দিতে হবে পঞ্চায়েত স্তর পর্যন্ত। একশো দিনের কাজ যেন পরিযায়ী শ্রমিকদের অবশ্যই দেওয়া হয়। বারবার বলেছি, ত্রাণের ব্যাপারে কোনও অস্বচ্ছতা মেনে নেওয়া হবে না।’
এদিনের বৈঠকের আগেই অবশ্য সুর চড়িয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বলেছিলেন, ‘এতদিন পর সর্বদল বৈঠকের কথা মনে পড়েছে! প্রধানমন্ত্রী ছ’বার সর্বদল করে ফেলেছেন। এটাই পাথর্ক্য।’ সেইসঙ্গেই বলেছিলেন, ‘দিদিমণির পাঠশালায় যাচ্ছি।’ এদিনের বৈঠক শেষে অবশ্য তিনি বলেন, ‘চার ঘণ্টার মিটিং হয়েছে। আমাদের উপর পুলিশি অত্যাচার নিয়ে বলেছি। জাতীয় বিপর্যয় বলে কিছু হয় না। আমাদের প্রশ্নের উত্তর দিইনি। পরামর্শ দিয়েছি।’