বেহাল দশা বঙ্গ বিজেপির, ২৪-এর প্রাককালে সঙ্ঘের সমীক্ষায় অশনি সংকেত
২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে ১৮ টি আসন জিতে বাংলায় অভূতপূর্ব সাফল্য পেয়েছিল বিজেপি। কিন্তু একুশের বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে আর পদ্ম ফোটেনি। ক্রমেই রক্ত ক্ষয় হতে হতে আজ পদ্ম বাগান বিপর্যস্ত। ২৪-এর লড়াইয়ের আগে দুবছরেরও কম সময় বাকি রয়েছে। এর মাঝেই সঙ্ঘের সমীক্ষায় অশনি সংকেত! ২৪-এ বিজেপির ভাগ্যে আসতে চলেছে মোটে ২টি আসন।
প্রত্যাশিত ফল না হাওয়ায় ২০২১ সাল থেকেই ভাঙন শুরু হয় বিজেপিতে। বিধানসভা ভোটের ফলপ্রকাশের পর থেকেই বিজেপির বিধায়ক-সাংসদ-নেতা-কর্মীরা একে একে বিজেপি ছেড়ে জোড়াফুলে ফিরতে শুরু করেন। দলীয় কোন্দলের কারণে বহু বিজেপি কর্মীরা ঘরে বসে গিয়েছেন। সংগঠন একেবারে তলানিতে। অন্যদিকে লোকসভা নির্বাচনের আগে হাতে দুবছরও সময় বাকি নেই। বাংলায় কোথায় দাঁড়িয়ে রয়েছে বিজেপি, আদপে পরিস্থিতি ঠিক কী, তা খুঁজতে অভ্যন্তরীণ সমীক্ষা চালায় বিজেপি এবং সঙ্ঘ পরিবার। সেই সমীক্ষায় অশনি সংকেত দেখছে বিজেপি।
রাজ্যজুড়েই বিজেপির ভোট কমে তলানিতে, উত্তরবঙ্গবাসীরাও মুখ ফেরাচ্ছেন। বাবুল সুপ্রিয় দল বদল করায় আসানসোল আসনটি উপনির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে জিতে নিয়েছে তৃণমূল। ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংহ তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। সমীক্ষা বলছে, তার কেন্দ্রে উপনির্বাচন হলে বিজেপির ভরাডুবি হবে। ১৯-এর ভোটে বিজেপির জেতা বাকি ১৬টি আসনে আজ ভোট হলে কার্যত ধস নামতে পারে বিজেপি শিবিরে।
কয়েকজন বিজেপি নেতার মতেও, এই মুহূর্তে লোকসভা ভোট হলে বিজেপির জেতার কোন সম্ভাবনা নেই। বিজেপির সবেধন নীলমনি হল উত্তরে দার্জিলিং আর দক্ষিণে বনগাঁ। গোর্খা ও মতুয়া ভোটেই বৈতরণী পেরোনোর চিন্তাভাবনা শুরু করেছে বিজেপি। কিন্তু নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন প্রণয়ন ঘিরে মোদী সরকারের টালাবাহানায় ক্ষুব্ধ মতুয়া সমাজের একটি বড় অংশ। লোকসভা ভোটের আগে আইন নিয়ে স্থির সিদ্ধান্তে না এলে ওই আসনটিও ধরে রাখা অসম্ভব হয়ে উঠবে।
বঙ্গ বিজেপি যে পথভ্রুষ্ট তা মেনে নিচ্ছে দিল্লি বিজেপিও। কেন্দ্রের নেতারা কোন্দল মিটিয়ে একজোট হওয়ার নিদান দিচ্ছেন। পুরনো কর্মীদের ফিরিয়ে আনতেও বলছেন দিল্লির নেতারা। রাজ্যজুড়ে বুথগুলিকে শক্তিশালী করার কথাও বলা হচ্ছে। রাজ্যের নেতাদের আগামী ছ-মাস পথে নেমে তৃণমূলের বিরুদ্ধে নানা ইস্যুতে আন্দোলন করার কথা বলে গিয়েছেন নড্ডা। যদিও এর একটিরও বাস্তবায়ন হয়নি। তবে কি লড়াইয়ের আগেই ময়দান ছেড়ে দিল রাজ্য বিজেপি।