বলিউড থেকে ইস্তফা দিলেন পরিচালক অনুভব সিনহা!
সুশান্ত সিং রাজপুতের (Sushant Singh Rajput) অকাল মৃত্যু ঝড় তুলে দিয়ে গিয়েছে বলিউডের অন্দরমহলে। একের পর এক অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগে ক্রমাগত বিদ্ধ হচ্ছে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে বঞ্চনার নানা ঘটনা। অভিনেতা-অভিনেত্রী থেকে শুরু করে পরিচালকরাও সরব হয়েছেন বলিউডের স্বজনপোষণ নিয়ে। এবার সেই প্রতিবাদের তালিকায় নাম লেখালেন বিশিষ্ট পরিচালক অনুভব সিনহা
বলিউডের ব্যবহার মর্মাহত পরিচালক ট্যুইট করে জানালেন তিনি বলিউড থেকে ইস্তফা দিচ্ছেন। মুল্ক, আর্টিকল ১৫, থাপ্পড়ের মতো সাড়া জাগানো ছবির পরিচালকের হঠাত্ এমন মন পরিবর্তন কেন! অনুভব সিনহা চিরকালই স্পষ্টবক্তা। কোনওদিনই নিজের মত প্রকাশে কোনও রাখঢাক করেননি। ট্যুইটারের প্রোফাইল নাম অনুভব সিনহা থেকে পালটে করে দিয়েছেন অনুভব সিনহা (নট বলিউড)।
তাঁর বলিউড থেকে ইস্তফা দেওয়ার ট্যুইটের পালটা জবাবে আরও এক প্রখ্যাত পরিচালক সুধীর মিশ্র (Sudhir Mishra) লিখেছেন, ‘বলিউড আবার কী! আমি সিনেমার সঙ্গে যুক্ত হই সত্যজিত্ রায়, রাজ কাপুর, গুরু দত্ত, ঋত্বিক ঘটক, বিমল রায়, মৃণাল সেন, ঋষিকেশ মুখোপাধ্যায়, কে আসিফ, বিজয় আনন্দ, জাভেদ আখতার, তপন সিনহা, গুলজার, শেখর কাপুর, কেতন মেহতা, ভারতন এন অরবিন্দনের মতো পরিচালকের কাছে অনুপ্রাণিত হয়ে। আমার কাছে এটাই জগত। এই জগতেই আমি চিরকাল বাস করব।’
আরও এক নামী পরিচালক হনসল মেহতা লেখেন, ‘অনেক আগেই ছেড়ে দিয়েছি… তবে সত্যি বলতে কি এর তো কোনও দিনই কোনও অস্তিত্ব ছিল না।’
উল্লেখ্য, সুশান্তের মৃত্যুর পর সলমান খান ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে স্বজনপোষণ ও হুমকির অভিযোগ এনেছিলেন পরিচালক অভিনব কাশ্যপ (Abhinav Kashyap)। ফেসবুকের একটি পোস্টে তিনি কড়া ভাষায় লেখেন, ‘…আমার নিজের অভিজ্ঞতাও এর চেয়ে আলাদা কিছু নয়। আমাকেও এক্সপ্লয়েট এবং বুলি করা হয়েছে। শুরু করেছিলেন দাবাং-এর সেটে আরবাজ খান। দাবাং-এর ১০ বছর পর এই হল আমার কাহিনী। দাবাং ২ থেকে সরে যেতে আমি বাধ্য হয়েছিলাম কারণ আরবাজ খান এবং সোহেল খান আমার কেরিয়ারকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছিলেন। আরবাজ খানের তত্পরতায় শ্রী অষ্টবিনায়ক ফিল্মসের সঙ্গে করা আমার চুক্তি ভেস্তে যায়, কারণ তিনি রাজ মেহতাকে ফোন করে হুমকি দিয়েছিলেন। স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, আমাকে তিনি কাজ দিলে ভবিষ্যতে ভুগতে হবে। এখানেই শেষ নয়, আমার ছবি BESHARAM নিয়েও কম জল ঘোলা করেননি সলমান খান ও তাঁর পরিবার। এতটাই নেগেটিভ পাবলিসিটি করিয়েছিলেন যে ডিসট্রিবিউটাররা আমার ছবি কিনতে ভয় পেয়েছিলেন। সেই সময়ে রিল্যায়েন্স এন্টারটেনমেন্ট সাহস করে এগিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তাতেও হাল ছাড়েননি আমার শত্রুরা। যতদিন না বক্স অফিসে ছবিটি মুখ থুবড়ে পড়েছে, ততদিন নেগেটিভ ক্যাম্পেন চালিয়ে গিয়েছিলেন তাঁরা। তবুও বক্স অফিসে ৫৮ কোটি টাকার ব্যবসা করেছিল ছবিটি। এর পর বেশ কিছু বছর ধরে আমার একের পর এক প্রজেক্ট নষ্ট করে দেওয়া হয় এবং আমাকে নিয়মিত খুনেক হুমকি দেওয়া হয়। এখানেই শেষ নয়। আমার পরিবারের মেয়েদের কাছে আসতে থাকে ধর্ষণের হুমকিও। সেই সময়ে চূড়ান্ত মানসিক অবসাদের মধ্যে দিয়ে গিয়েছিলাম। ২০১৭ সালে যার জেরে আমার বিয়েও ভেঙে যায়। আমি সব রকম প্রমাণ নিয়ে পুলিশে FIR করতে গেলে তাঁরাও অভিযোগ দায়ের করেননি। পরে অনেক চেষ্টায় শুধুমাত্র নন-কগনিজেবল অভিযোগ দায়ের করা হয়। আজও সেই মামলা একই জায়গায় পড়ে রয়েছে। আমার কাছে আজও সব তথ্য প্রমাণ রয়েছে। প্রতিবার পিছন থেকে আমার শত্রুরা আঘাত করেছে। তবে ১০ বছর পর সেই মুখগুলো চিনতে আর কোনও অসুবিধে হয় না। আমার চরম শত্রুদের নাম সলিম খান, সলমান খান, আরবাজ খান এবং সোহেল খান।’