বালেশ্বর ট্রেন দুর্ঘটনা: বিপর্যয় চেনালো সমাজের দুই রূপ
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে বড় রেল দুর্ঘটনার সাক্ষী থাকল ওড়িশা। বালেশ্বরে এখনও মৃত্যু মিছিল চলছে। ট্রেনে সওয়ার পরিজনদের খুঁজে চলেছেন কেউ কেউ। এক একটি বিপর্যয় সমাজের দুটি রূপ দেখিয়ে দিয়ে যায়, এবারেও ব্যতিক্রম হল না। করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা, দেখিয়ে দিল কিচ্ছুই পাল্টায়নি। একদল আজও ঝাঁপিয়ে পড়েন, আরেক দলের কাছে এসব দুর্ঘটনা আজও এক ধরণের বিনোদন। যদিও দ্বিতীয় ক্ষেত্রের মাধ্যম বদলেছে, সমাজ মাধ্যমে আকর্ষণ পাওয়ায় এখনকার মূল উদ্দেশ্য।
আর পাঁচটা দুর্ঘটনার পর যা দেখা যায়, এবারেও তাই। প্রথম ঝাঁপিয়ে পড়লেন স্থানীয়রাই। এগিয়ে এলেন উদ্ধারকার্যে। উল্টে যাওয়া বগি থেকে বার করতে আরম্ভ করলেন আহত, নিহত যাত্রীদের। নিজেরা ব্যবস্থা করলেন গ্লানযানের। তারপর রিলিফ এল, সরকার প্রশাসন নড়েচড়ে বসল।
স্বেচ্ছাসেবকরাও থাকলেন। স্থানীয় হাসপাতালগুলোতে উপচে পড়ল তরুণ, যুবদের ভিড়। স্বেচ্ছায় রক্ত দিলেন তারা। এই হল মুদ্রার এক পিঠের ছবি।
অপর পিঠে দেখা গেল, শুধুই ভাইরাল হওয়ায় খিদে। সংবাদ মাধ্যমের কর্মীরা নেমে পড়লেন ব্রেকিংয়ের প্রতিযোগিতায়। দুর্ঘটনা পেরোনো যাত্রীদের ধাতস্থ হওয়া সময় দিলেন না, শুরু হল ইন্টারভিউ, লাইভ। রিচের মহা নেশা! বাদ গেল না আম জানতাও। সারি সারি মৃতদেহের সমানে ভিডিও করার ভিড়। ভিডিও তুলেই রিল পোস্ট, নজর সেই সমাজ মাধ্যমে ভাইরাল হাওয়ার নেশা। সিরিয়াল অভিনেতারা কয়েকজন চলে গেলেন ফটোশুট করতে। কোনও এক যাত্রীর কবিতার খাতা মিলতেই ভাইরাল! কনটেন্ট বানানোর ধুম পড়ল। লেখা, আঁকায় উপচে উঠল টাইম লাইন। স্বজন হারানোর কান্নাও আজকাল ভিউ দেয়! মানুষ শুধু মানুষকে, মানুষের দুঃখ, বেদনাকেও পণ্য করে, রেহাই পায় না লাশও।