পুজো স্পেশাল বিভাগে ফিরে যান

হাওড়ার সবুজে মোড়া চকঠাকুরাণী গ্রামের প্রাচীন দেবী মহামায়া

July 12, 2023 | 2 min read

দেবী মহামায়া

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: হাওড়ার উদয়নারায়পুর ব্লকের সবুজে মোড়া এক অখ্যাত গ্রাম চক ঠাকুরাণী। দামোদরের তীরে অবস্থিত বন্যা প্রবণ অঞ্চলের মানুষ দেবী মহামায়ার আরাধনা করে থাকেন । তাদের বিশ্বাস এই দেবী খুব জাগ্রত। চক অর্থাৎ চতুষ্কোণ ক্ষেত্র যার অধিষ্ঠান করছে পালয়েত্রি, মাতৃকা দেবী। এক কথায় দেবীর অধিষ্ঠান এই মন্দির।

এই দেবীরপূর্ব অধিষ্ঠান ও বর্তমান অধিষ্ঠান ক্ষেত্রটি পৃথক। কথিত আছে, এই দেবীর আরাধনা প্রায় ৫০০ বছরের পুরানো । পূর্বে দেবী মন্দির যেখানে ছিল তার পাশ দিয়ে দামোদর প্রবাহিত হতো কিন্তু দামোদরের গতি পরিবর্তনে এই মন্দির নদী গর্ভে তলিয়ে যায়। জনশ্রুতি, এই দেবী বধূ রূপধারণ করে মন্দির পার্শ্বে যাতায়াতকারি এক শাঁখারী ওয়ালাকে শাঁখা পড়িয়ে দিতে বলে ও তার বিনিময়ে মূল্য দেবেন প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু সেই শাঁখারীওয়াল বধূ রুপী দেবীর কথা অগ্রাহ্য করলে কিছু দূরে গিয়ে সে দামোদরের চোরা গর্ভে তলিয়ে যায়। পরবর্তীকালে ওই শাঁখারীওলার পুত্র ওই একই পেশায় জীবিকা নির্বাহ করেওই পথে যাবার সময় তার কাছে ওই বধূ রুপী দেবী একই আবেদন করেন।

যখন রোগ নাড়া, মনস্কামনায় পূরণ হ‌ওয়ার পরে ক্রমশ এই জাগ্রত দেবীর কথা ছড়িয়ে পড়ে। শোনা যায়, যখন দামোদরের দিক পরিবর্তনের নদী মন্দিরকে গ্রাস করতে থাকে , দেবী স্বপ্নাদেশে জয়কৃষ্ণ হাজরাকে বলেন তার অধিষ্ঠান নদী গর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে, দেবীকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে। তাই জয়কৃষ্ণ হাজরা দেবীকে উদ্ধার করেন ও গ্রামে স্থাপিত করে অস্থায়ী মন্দির করে দেন। যা পরবর্তীকালে তাঁর পুত্র ও সহযোগী ভাতৃগণ ১২১১ বঙ্গাব্দে এই মন্দিরটি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন।

বর্তমান মন্দিরটি তিন থেকে সাড়ে তিন ফুট উচ্চ বেদির উপর দালান স্টাইলে প্রতিষ্ঠিত। মন্দির সামনে রয়েছে চণ্ডী মণ্ডপ , দুপাশে তুলসী মঞ্চ। দেবী একাধারে মা মনসা ও দূর্গার সমন্বয়। আদি শক্তির আর এক রূপ দেবী মহামায়া দেবী দুর্গা। প্রাচীন প্রথা অনুযায়ী, মূর্তির কারিগর এক ঐতিহ্যমন্ডিতে প্রথা মেনেই কুশ , গঙ্গা মাটি কাঠামোয় তামার তারের বাঁধুনি সহকারে তৈরি করেন। প্রতি কুড়ি বছর অন্তর পুরানো মূর্তি বিসর্জন দিয়ে নতুন মূর্তির প্রতিষ্ঠা হলেও নিয়মের ব্যতিক্রম ঘটেছে প্রয়োজনের সাপেক্ষে। শুদ্ধাচারে নিয়ম মেনে মূর্তি তৈরির সময় উপবাস ও উপবাস ভঙ্গে নিরামিষ খেতে ঠাকুর করতে হবে। গড়ার সময় দরজা জানলা বন্ধ করে এই মূর্তি করতে হয় যাতে মনোসংযোগে নুন্যতম ব্যাঘাত না ঘটে। প্রতি বছর ১৫ই বৈশাখ মায়ের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে উৎসব পালন করা হয়।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#howrah, #debi mahamaya, #chakthakurani gram

আরো দেখুন