এবার নজরুলের ব্যবহৃত গ্রামাফোন দেখতে পাবেন আপনিও, জানুন কোথায়?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছল বিদ্রোহী কবির ব্যবহৃত শতাব্দী প্রাচীন আলমিরা গ্রামোফোন। কলকাতায় এক ব্যক্তির বাড়িতে থাকা গ্রামোফোনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নজরুল সেন্টার ফর সোশ্যাল অ্যান্ড কালচারাল স্টাডিসের তরফে নিয়ে আসা হয়েছে। এই গ্রামোফোন বিদ্রোহী কবির বহুদিনের সঙ্গী, এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগ্রহশালায় আসায় নজরুল অনুরাগীরা অত্যন্ত খুশি। গ্রামোফোনের পুরনো দিনের সব রেকর্ড সংগ্রহ করছে বিশ্ববিদ্যালয়। ইতিমধ্যেই দু’হাজার রেকর্ড সংগ্রহে এসেছে। নজরুলগীতি এবং শতবর্ষ আগে গ্রামাফোনের ডিস্কে যে নাটক রেকর্ড করা হয়েছে, তাও বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগ্রহে এসেছে। সে’সব রেকর্ড ডিজিটাইজ করে কবির সৃষ্টিকে সংরক্ষণ করতে চাইছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবি, পৃথিবীর কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিজিটাল গ্রামোফোন আর্কাইভ নেই। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে সঙ্গীত অনুরাগী এবং অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে পথ দেখাবে বিদ্রোহী কবির নামাঙ্কিত এই বিশ্ববিদ্যালয়।
কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, কবির ব্যবহৃত গ্রামোফোনটি বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকবে, যা তাঁদের কাছে গর্বের। ডিজিটাল গ্রামোফোন আর্কাইভ বানানোর উদ্যোগ দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে বলে মনে করছেন তিনি।
১৯২১ সালে ডুয়ো ফোন সিন্ডিকেট লিমিটেড গ্রামোফোনটি বানিয়েছিল। এইচএমভি গ্রামোফোন বিক্রির দায়িত্বে ছিল। এইচএমভির গীতিকার, সুরকার হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছিলেন বিদ্রোহী কবি। তবে এইচএমভি সংস্থা এটি নজরুল ইসলামকে উপহার দিয়েছিল নাকি কবি তা কিনেছিলেন, তা জানা যায়নি। কবির পাইকপাড়ার বাড়িতে থাকত গ্রামাফোনটি। কবির পাইকপাড়ার বাড়িতে অবহেলিত অবস্থায় পড়েছিল তাঁর নানান জিনিস। কবির সংগ্রহে ছিল অজস্র রেকর্ডও। কলকাতার বিখ্যাত রেকর্ড সংগ্রাহক সুরজলাল মুখোপাধ্যায় ওরফে হারুবাবু সেগুলিকে উদ্ধার করে নিজের সংগ্রহশালায় রাখেন।
হারুবাবুর জামাই ফুটবলার অমিত গুহ গ্রামোফোনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতে তুলে দিয়েছেন। গ্রামোফোনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আসায় খুশি কবির দৌহিত্র অরিন্দম কাজি। নজরুল অনুরাগীরা বলছেন, নজরুল যে গ্রামোফোনে গান শুনেছেন, সেই গ্রামোফোনে তাঁর রেকর্ড শুনতে পাওয়া পরম সৌভাগ্যের। নজরুল সেন্টার ফর সোশ্যাল অ্যান্ড কালচারাল স্টাডিজের ডেপুটি ডিরেক্টর সোমনাথ মুখোপাধ্যায়ের কথায়, গবেষক-পড়ুয়াদের কাছে গ্রামাফোনের গুরুত্ব অপরিসীম। রেকর্ডগুলি ডিজিটাল করা হচ্ছে, যাতে সাধারণ মানুষ সহজেই পুরনো দিনের রেকর্ডগুলো শুনতে পারেন।