দুশো বছরের বেশি সময় ধরে ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বরের পুজো হয়ে আসছে আলমবাজারে
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: হিন্দু শাস্ত্র অনুসারে ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বরকে যথাক্রমে সৃষ্টি, স্থিতি ও প্রলয়ের অধীশ্বর বলে মনে করা হয়। এই তিন জনের মধ্যে শিবের পূজা ভারতে অত্যন্ত জনপ্রিয়। নানা রূপে বিষ্ণুর পূজাও যথেষ্ট প্রচলিত। কিন্তু ভারতে ব্রহ্মার পূজার চল প্রায় নেই বললেই চলে, ব্রহ্মা মন্দিরও বেশ দুর্লভ। কিন্তু ব্রহ্মা এমন অনাদৃত থেকে গেলেন কেন? এই প্রশ্নটা অনেকেরই মনের মধ্যে জাগে। তাহলে জেনে নিন ব্রহ্মার পুজার কেন প্রচলন নেই। কিন্তু বরানগরের আলমবাজারে ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বর ও রক্ষাকালীর পুজো হয় একসঙ্গে।
বাজারে যেন কখনও আগুনের গ্রাসে না যায়। ঝড়-বৃষ্টি-ব্রজ্রপাতের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে যেন রক্ষা পায় বাজার। এই প্রার্থনায় ২০০ বছরেরও বেশি সময় আগে আলমবাজারের ব্যবসায়ীরা ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বর ও রক্ষাকালীর পুজো শুরু করেছিলেন। এবার সেই পুজো ২১৬ বছরে পড়ছে। আজও এখানকার ব্যবসায়ীদের বিশ্বাস, দৈব কৃপায় সমস্ত ধরনের দুর্বিপাক থেকে রক্ষা পাবে তাঁদের কর্মস্থল। ঘটনাচক্রে আজও এই বাজারে কোনও বড়সড় অঘটন ঘটেনি।
প্রাচীন রীতিনীতি মেনে বছরের পর বছর পুজো হয়ে আসছে এখানে। পুজোর উপাচারের মধ্যে থাকে গাঁজার কলকে, কারণবারি, একতাল গঙ্গা মাটি, বাঁশি ইত্যাদি। প্রত্যেক দেবতা ও দেবীর পৃথক পুজো হয়।
দেশবন্ধু রোড, মহারাজা নন্দকুমার রোড, বনহুগলি, ফকির ঘোষ লেন ইত্যাদি এলাকার একাধির প্রবীণ বাসিন্দা বলেন, ‘এই পুজো উপলক্ষ্যে যাত্রা, সঙ্গীতানুষ্ঠান, বাউল গান-সহ কত অনুষ্ঠানই দেখেছি। সবই আজ অতীত। তবে আজও পুজোর আয়োজনে কোনও খমতি দেখা যায়নি।’ প্রসঙ্গত, ১১ দিন ব্যাপি এই পুজো এবার শুরু হয়েছে গত ২৪ ডিসেম্বর থেকে।’ এই ধরনের পুজো বিরল। তাই পুজো দেখতে আজও শহরতলির বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বহু মানুষ আসেন।