স্কুলের অর্থ তছরুপ, South Point-এর ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য কৃষ্ণ দামানি গ্রেপ্তার
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: নিজের পরিবারের সদস্যদের নামে কোম্পানি খুলে স্কুলের টাকা ট্রান্সফার। এমনই অভিযোগ উঠল দক্ষিণ কলকাতার সাউথ পয়েন্ট স্কুলের ট্রাস্টি বোর্ডের এক প্রভাবশালী সদস্যের বিরুদ্ধে।
সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য কৃষ্ণ দামানিকে বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তার করল হেয়ার স্ট্রিট থানার পুলিশ। সাউথ পয়েন্ট স্কুলের ট্রাস্টি বোর্ডের ওই সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি আর্থিক তছরুপে যুক্ত। ট্রাস্টি বোর্ডের অন্য এক সদস্য তাঁর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে তদন্তে নামে পুলিশ।
পুলিস সূত্রে খবর, গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে সাউথ পয়েন্ট স্কুলের ট্রাস্টি বোর্ডের এক সদস্য ইন্দ্রনীল চৌধুরী দামানির বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগকারী পুলিসকে জানান, স্কুলের ৯ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা প্রতারণা করা হয়েছে। সাউথ পয়েন্টের তরফে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের ১ এপ্রিল থেকে গত বছরের জুন মাস পর্যন্ত স্কুলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে কয়েকটি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানিতে ওই টাকা গিয়েছে। লালবাজার জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে চারটি এমন কোম্পানির হদিশ পাওয়া গিয়েছে, যেগুলিতে টাকা ঢুকেছে। সবকটিই কৃষ্ণ দামানির পরিবারের কোনও না কোনও সদস্যের নামে খোলা হয়েছে বলে দাবি তদন্তকারীদের। এইসব কোম্পানির সঙ্গে স্কুলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নথি খতিয়ে দেখে পুলিস। তাতেই বিষয়টি স্পষ্ট হয় বলে জানিয়েছে লালবাজার।
কীভাবে চলত তছরুপ? পুলিস সূত্রের দাবি, ওই সমস্ত কোম্পানি সাউথ পয়েন্টের নাম ভাঙিয়ে টাকার বিনিময়ে কোচিং দেওয়ার নাম করে বিজ্ঞাপন দিত। এভাবেই চলত কোচিং ব্যবসা। শুধু তাই নয়, কাগজে-কলমে স্কুলের শিক্ষকদের বাড়তি বেতন দেখানো হতো। তারপর তাঁদের বোর্ড নির্ধারিত বেতন ধরিয়ে দিয়ে বাড়তি অংশটি নিজের পরিবারের সদস্যদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করা হতো বলে অভিযোগ। এভাবে প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে বিপুল টাকা জালিয়াতি করা হয়েছে বলে দাবি স্কুল কর্তৃপক্ষের। প্রমাণস্বরূপ ব্যাঙ্কের লেনদেনের প্রায় ২০০টি নথি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিস।
বৃহস্পতিবার সকালে আরএন মুখার্জি রোডে ট্রাস্টি অফিসে ঢোকার সময়ে কৃষ্ণকে পাকড়াও করেন হেয়ার স্ট্রিট থানার পুলিশকর্মীরা। লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগের ব্যাঙ্ক দুর্নীতি দমন শাখার আধিকারিকরা কৃষ্ণ দামানিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। হেয়ার স্ট্রিট থানায় বসিয়ে দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করে তাঁকে এদিন সন্ধ্যায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। আজ, শুক্রবার তাঁকে ব্যাঙ্কশাল কোর্টে পেশ করা হবে।