নয়া শ্রম আইনে যে সকল পরিবর্তন আনল কেন্দ্র, একনজরে
কেন্দ্র সরকারের তরফ থেকে লোকসভায় পাশ করানো হলো শ্রম বিল। বিরোধী-শূন্য লোকসভায় এই বিল পাশ হয়। এই বিল বিতর্কিত এবং এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
বিরোধীরা এই শ্রম আইন সংশোধনী বিল প্রসঙ্গে অভিযোগ করছেন যে, এই বিল আইনে পরিণত হলে অবাধ কর্মী ছাঁটাইয়ের রাস্তা প্রশস্ত হবে, কমে যাবে স্থায়ী চাকরি। স্থায়ী চাকরি কমে যাওয়ার কারণে ঠিকা কাজের রমরমা বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে শ্রমিকদের স্বার্থে আঘাত আসবে।
কেন্দ্রীয় শ্রম আইনের ৪৪টির মধ্যে ১৫টিকে বর্তমান সময়ে অপ্রাসঙ্গিক বলে সংস্কারের পথে কেন্দ্র সরকারের তরফ থেকে বাতিল করা হচ্ছে। বাকি ২৯টিকে একসাথে ৪টি শ্রম আইনে রূপান্তরিত করা হচ্ছে। আর এই চারটির মধ্যে রয়েছে মজুরি আইন, শিল্পক্ষেত্রে শ্রমিক-মালিক সম্পর্ক আইন, সামাজিক সুরক্ষা বিধি এবং কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা নিশ্চয়তা আইন। এই চারটির মধ্যে ইতিমধ্যেই গতবছর রাজ্যসভা ও লোকসভায় পাশ হয়ে গেছে মজুরি আইন। এখন বাকি তিনটি পাশ হওয়ার অপেক্ষা মাত্র।
প্রভাব
এই সকল আইনগুলি পাস হয়ে গেলে কর্মক্ষেত্রে ৩০০ জন পর্যন্ত কর্মী ছাঁটাই করতে কোন রকম অনুমতি লাগবে না। আগে যা ছিল ১০০ জন। পাশাপাশি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে তালা ঝোলাতেও অনুমতি লাগবে না।
তবে কেন্দ্র সরকারের দাবি, স্থায়ী চাকরি সমান সুবিধার কথা লেখা হয়েছে এই আইনে। অর্থাৎ শ্রমিকদের স্বার্থে ঠিকা হিসাবে নিযুক্ত শ্রমিক স্থায়ী চাকরির সুবিধা পাবেন।
কেন্দ্র সরকারের তরফ থেকে আরও দাবি করা হয়েছে, এই আইনে পরিযায়ী শ্রমিকদের তথ্যভাণ্ডারের উপর জোর দেওয়া হবে। এই আইনে PF, ISI এর মতো সামাজিক সুবিধা যুক্ত করা হয়েছে।
পরিযায়ী শ্রমিকদের বিভিন্ন সরকারি সুবিধায় অন্তর্ভুক্ত করতে এই আইনে বদলানো হয়েছে পরিযায়ী শ্রমিকদের সংজ্ঞা। যার ফলে তা রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে গিয়ে ১৮ হাজার টাকা পর্যন্ত কাজ করা প্রতিটি শ্রমিকই পরিযায়ী শ্রমিক হিসাবে গণ্য হবেন। এর জন্য ঠিকাদার মারফত নিযুক্ত হওয়ার কোন প্রয়োজন নেই।
নতুন এই শ্রম আইন সম্পর্কে কেন্দ্র সরকারের তরফ থেকে একগুচ্ছ সুবিধার কথা বলা হলেও বিরোধীদের তরফ থেকে দাবি করা হচ্ছে কর্মী কমানোর পথকে প্রশস্ত করবে এই আইন। অর্থাৎ এই সময় মালিকপক্ষকে সুবিধা পাইয়ে দেবে। এর পাশাপাশি বিরোধীদের পক্ষ থেকে ভাতা এবং বিমা সংক্রান্ত বেশ কিছু প্রশ্ন তোলা হয়েছে। আর এই সকল বিতর্ক এবং এবং প্রশ্নের মাঝে এই আইন আগামী দিনে কতটা সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলতে পারে তাই এখন দেখার।