রাজ্যে ফের চালু হচ্ছে আধার পরিষেবা
আধার পরিষেবা আবার চালু হচ্ছে রাজ্যে। তবে তা হবে শুধুমাত্র আধার সেবাকেন্দ্র এবং ভারতীয় ডাক বিভাগে। ১১১৬টি ডাকঘরে চালু হচ্ছে আগামীকাল শুক্রবার থেকে। বাকি যে জায়গাগুলিতে আধার পরিষেবা দেওয়া হয়, সেখানে এখনই তা চালু হওয়ার সরকারি নির্দেশ নেই।
করোনার সংক্রমণ শুরুর সময়ই এরাজ্যে আধার পরিষেবা বন্ধ করে দেয় রাজ্য সরকার। গত মার্চ থেকেই তা বন্ধ হয়। নতুন আধার কার্ডের জন্য আবেদন নেওয়া, কার্ড করানো বা তার ডেলিভারি বন্ধ থাকে। আধার সংক্রান্ত কোনও তথ্যের পরিবর্তন সংক্রান্ত কাজও থমকে যায়। লকডাউন কাটিয়ে দেশে আনলক পর্ব শুরু হলেও আধার পরিষেবা শুরু করা যায়নি। অবশেষে তা শুরু হল। নবান্ন থেকে এই বিষয়ে জেলাগুলিকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে, ইউনিক আইডেন্টিটি অথরিটি অব ইন্ডিয়ার অধীন আধার সেবা কেন্দ্রগুলিতে এই পরিষেবা মিলবে। সল্টলেক সেক্টর ফাইভ, ডালহৌসি এবং মালদহ জেলাশাসকের অফিসে যে সেবাকেন্দ্র আছে, সেখানে এই পরিষেবা মিলবে। পাশাপাশি যে পোস্ট অফিসগুলিতে আধার পরিষেবা দেওয়া হয়, সেখানেও তা চালু হচ্ছে। ভারতীয় ডাকবিভাগের পশ্চিমবঙ্গ সার্কেলের চিফ পোস্টমাস্টার জেনারেল মার্ভিন আলেকজান্ডার জানিয়েছেন, চলতি সপ্তাহেই তাঁরা পোস্ট অফিসগুলিতে এই পরিষেবা চালু করে দিচ্ছেন।
এদিকে আধার সংক্রান্ত পরিষেবা দিয়ে থাকে ব্যাঙ্কগুলিও। জানা গিয়েছে, ব্যাঙ্কের কয়েকটি শাখা নিজেদের মধ্যে এই পরিষেবা দিতে শুরু করলেও, সরকারিভাবে কোনও নির্দেশ এখনও ব্যাঙ্কগুলিকে দেওয়া হয়নি। আধার পরিষেবা চালু থাকে কমন সার্ভিস সেন্টারগুলির নির্দিষ্ট কয়েকটিতে। সেখানে আধারের ক্ষেত্রে নাম, জন্মতারিখ, ঠিকানা,
ই-মেল পরিবর্তনের মতো কয়েকটি পরিষেবা পাওয়া যায়। এই কমন সার্ভিস সেন্টারগুলি কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের নির্দেশমতো কাজ করে। সেখানে ওই পরিষেবা ফের চালুর অনুমতি এখনই নেই।
এদিকে আধার পরিষেবা চালু হওয়ায় কর্মীরা আতঙ্কে ভুগছেন। যাঁরা পরিষেরা দিয়ে থাকেন, তাঁদের অনেকেরই বক্তব্য, করোনা এখনও বিদায় নেয়নি। বরং সংক্রমণ বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে যদি পরিষেবা চালু করতে হয়, তাহলে বহু মানুষের এতটাই কাছাকাছি আসতে হবে, যেখানে সামাজিক দূরত্ব রাখা অসম্ভব। চোখের তারার ছবি তোলা বা আঙুলের ছাপ নেওয়ার মতো কাজগুলি দূর থেকে করা সম্ভব নয়। তাছাড়া যে যন্ত্রগুলির মাধ্যমে সেই কাজ করা হবে, সেগুলিকে বারবার স্যানিটাইজ করাও কঠিন। যাঁরা আধার সংক্রান্ত কোনও পরিষেবা নিতে আসবেন, তাঁরা আদৌ করোনায় সংক্রামিত কি না, তা যাচাই করার কোনও উপায়ও নেই। কর্মীদের অভিযোগ, যেখানে চিকিৎসকরা পর্যন্ত রোগীদের চিকিৎসা করছেন দূর থেকে, যেখানে সরকার বারবার সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কথা বলছে, সেখানে কীভাবে আধার পরিষেবা ফের চালু করার মতো এমন ‘হঠকারী’ সিদ্ধান্ত নেওয়া হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই।