বাংলার বাসিন্দাকে NRC নোটিস! চুপ করে থাকব না, হুঁশিয়ারি মমতার

July 8, 2025 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

নিউজ ডেস্ক,দৃষ্টিভঙ্গি, ১৪:১৪: সম্প্রতি বিহার নির্বাচনে SIR প্রক্রিয়ার পর আবারও খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে NRC আতঙ্ক। অনেকেই বলছেন, এভাবে ঘুরপথে NRC করতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার।

২০১৯ সালের ৩১ আগস্ট এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। ওই তালিকায় থেকে বাদ যায় প্রায় ১৯ লক্ষ ৬ হাজার ৬৫৭ জন মানুষের নাম। চূড়ান্ত তালিকায় নাম রয়েছে ৩ কোটি ১১ লক্ষ ২১ হাজার ৪ জনের। কিন্তু সেই তালিকা প্রকাশ্যে আসার পর দেখা যায় অসমের বাসিন্দা বহু হিন্দুর নামও এই বাদ গিয়েছে। তারপর তা নিয়ে অনেক তর্ক বিতর্ক হয়েছে। মাঝে করোনা মহামারী হওয়ায় তা বেশ খানিকটা চাপা পরেই গেছিলো। সম্প্রতি আবারও কোচবিহারে ফিরে এসেছে সেই আতঙ্ক!

গত জানুয়ারি মাসে অসম সরকারের তরফে নোটিস পাঠানো হয় কোচবিহারের সীমান্ত এলাকার বাসিন্দা উত্তমকুমার ব্রজবাসীকে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় শুরু হয় শোরগোল। কেন তিনি নোটিস পেয়েছেন তার কারণ স্পষ্ট নয়।

চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে, উত্তমবাবু নাকি ১৯৬৬ থেকে ১৯৭১ এর মধ্যে অবৈধভাবে অসম সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছেন৷ সেই থেকে অবৈধভাবে দিনহাটা মহকুমার চৌধুরীহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের সাদিয়ালের কুঠিতে বসবাস করছেন। এছাড়াও তিনি পুলিশ ভেরিফিকেশনে বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেননি৷ তাই তাঁকে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে লিখেছেন, “আমি হতবাক ও অত্যন্ত বিচলিত হয়েছি জেনে যে, কোচবিহারের দিনহাটার বাসিন্দা রাজবংশী সম্প্রদায়ের উত্তম কুমার ব্রজবাসীকে অসমের ফরেনার্স ট্রাইবুনাল, এনআরসি নোটিশ জারি করেছে। গত ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি এই বাংলার বাসিন্দা। তাঁর বৈধ পরিচয়পত্র থাকা সত্ত্বেও, তাঁকে ‘বিদেশি/অবৈধ অনুপ্রবেশকারী সন্দেহে হয়রানি করা হচ্ছে। এটি আমাদের গণতন্ত্রের উপর একটি পরিকল্পিত আক্রমণ ছাড়া আর কিছুই নয়। এটিই প্রমাণ করে যে অসমে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে, যেখানে তাদের কোনো ক্ষমতা বা অধিকার নেই। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ভয় দেখানো, ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া এবং নিশানা করার একটি পূর্বপরিকল্পিত নোংরা চক্রান্ত চলছে। এই অসাংবিধানিক আগ্রাসন জনবিরোধী এবং এটি বিজেপির বিপজ্জনক ষড়যন্ত্রকে দিনের আলোর মত স্পষ্ট করে দিচ্ছে যে, গণতান্ত্রিক সুরক্ষাকে ধ্বংস করে বাংলার মানুষের পরিচয় মুছে ফেলার অপচেষ্টা চালাচ্ছে বিজেপি। এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে সমস্ত বিরোধী দলগুলির একজোট হওয়া এবং বিজেপির বিভাজনমূলক ও দমন পীড়নের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো অত্যন্ত জরুরি। ভারতবর্ষের সাংবিধানিক কাঠামোকে ধ্বংস করা হলে, বাংলা চুপ করে থাকবে না।”

উল্লেখ্য, উত্তমবাবু প্রথমে বিষয়টা বুঝতে পারেননি, পরে জানতে পারেন যে ওই চিঠি এনআরসির নোটিস। তারপরেই তিনি প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন। সূত্রের খবর, আগামী ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে ওই ব্যক্তিকে অসমের কামরূপে জেলা পুলিশ সুপারের কাছে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সঙ্গে রাখতে হবে ভারতীয় হওয়ার প্রমাণপত্র। এই ঘটনায় উত্তমবাবু ও তার পরিবার স্বাভাবিকভাবেই খুব আতঙ্কিত।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen