প্রধানমন্ত্রীর মণিপুর সফরের আগেই রাজ্যপাল-BJP নেতাদের বৈঠক, সরকার গঠনের তৎপরতা?
প্রায় দু’বছরের জাতিগত সংঘর্ষে ক্ষতবিক্ষত মণিপুরে এ সপ্তাহেই আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ০৯:০০: প্রায় দু’বছরের জাতিগত সংঘর্ষে ক্ষতবিক্ষত মণিপুরে এ সপ্তাহেই আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। ২০২৩ সালের মে মাসে মেইতেই-কুকি দ্বন্দ্ব শুরু হওয়ার পর এটাই তাঁর প্রথম সফর। রাষ্ট্রপতি শাসনের মধ্যে এই সফরকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। বিরোধীরা এতদিন প্রধানমন্ত্রীর নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেও বিজেপি (BJP) সফরের আগে থেকেই সরকার গঠনের রূপরেখা তৈরিতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে।
গত রবিবার রাজ্যপাল অজয় কুমার ভাল্লা রাজভবনে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক ডাকেন। সেখানে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং, বিধানসভার স্পিকার থকচম সত্যব্রত সিং, বিজেপি রাজ্য সভাপতি এ সারদা দেবী এবং প্রশাসনের শীর্ষ আমলারা উপস্থিত ছিলেন। প্রায় ৪০ মিনিটের ওই রুদ্ধদ্বার বৈঠক নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলা হয়নি। তবে রাজনৈতিক মহলের ধারণা, প্রধানমন্ত্রীর আগমনের আগে ফের সরকার গঠন নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা শুরু করেছে বিজেপি।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের সংঘর্ষে প্রাণ হারান প্রায় ২৬০ জন, ঘরছাড়া হন কয়েক হাজার মানুষ। সেই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী পদ ছাড়তে বাধ্য হন এন বীরেন সিং। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে মণিপুরে চলছে রাষ্ট্রপতি শাসন, যা আগামী ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানোর অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্র। তবে এর মধ্যেই রাজ্যে পুনরায় সরকার গঠনের দাবি তুলছে বিজেপি।
প্রধানমন্ত্রী ১৩ সেপ্টেম্বর ইম্ফলে পৌঁছবেন। ওই দিন তাঁর কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে হিংসাবিধ্বস্ত চূড়াচাঁদপুর সফর এবং ঐতিহাসিক কাংলা দুর্গে ভাষণ। সেখানে দেড় হাজার মানুষের সমাবেশ আয়োজনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। দুর্গ চত্বরকে নতুন সাজে সাজাতে রাজ্যের বাইরে থেকে আনা হয়েছে প্রায় ২০০ শ্রমিক, যারা দিনরাত কাজ করছেন একটি বিশাল ত্রিভূজাকৃতি মঞ্চ তৈরির জন্য।
এরপর ‘পিস গ্রাউন্ড’-এ আশ্রয়চ্যুতদের সঙ্গে কথা বলবেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে প্রায় ৯ হাজার মানুষের বসার ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ড্রোন উড়ানোতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
ইম্ফল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও আশপাশের এলাকায় চলছে সৌন্দর্যায়ন ও মেরামতির কাজ। যাত্রীদের আগেভাগে বিমানবন্দরে পৌঁছনোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বহুগুণে জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা।
মণিপুরে (Manipur) প্রধানমন্ত্রীর বহু প্রতীক্ষিত এই সফর রাজনৈতিক অচলাবস্থা ও দীর্ঘ অশান্তির সমাধানে কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়েই এখন রাজ্যের বাসিন্দাদের নজর।