ভূতচতুর্দশীতে ভূতের খোঁজ: রাইটার্স থেকে হেস্টিংস হাউস, এখনও কি জমে ভূতের আড্ডা?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১০:০০: ভূত আছে কি নেই, সেই নিয়ে তর্ক থামেনি আজও। কেউ বলেন নিছক গল্প, কেউ আবার দাবি করেন—রাত নামলেই এই শহরের অলি-গলিতে ঘুরে বেড়ান অদেখা অতিথিরা। কলকাতা মানেই ইতিহাসের শহর, আর ইতিহাস মানেই রহস্য। তাই ভূতচতুর্দশীর রাতে যদি সাহস থাকে, একবার ঘুরে দেখতেই পারেন সেইসব জায়গা, যেগুলো নাকি আজও তেনাদের রাজ্য বলে খ্যাত।
ন্যাশনাল লাইব্রেরি- বইয়ের তাকের ফাঁকে অদৃশ্য ছায়া: ১৮৩৬ সালে তৈরি এই বিশাল গ্রন্থাগার শুধু বইয়ের ভান্ডার নয়, বরং গল্প-গাথায় ভরা এক প্রেতলোকও বটে। শোনা যায়, লর্ড মেটক্যাফের স্ত্রীর আত্মা আজও নাকি এখানে ঘুরে বেড়ান। রাত গভীর হলে বইয়ের পাতার শব্দ, পায়ের আওয়াজ কিংবা হঠাৎ বাতাসে এক ঠান্ডা শিহরণ—সব মিলিয়ে এই জায়গা যেন এক রহস্যময় অধ্যায়।
রাইটার্স বিল্ডিং: শহরের রাজনৈতিক হৃদয়ে ভৌতিক প্রতিধ্বনি: যে ভবনে একদিন বিনয়, বাদল, দীনেশ গুলি চালিয়ে হত্যা করেছিলেন ব্রিটিশ অফিসার সিম্পসনকে, আজও নাকি সেই সিম্পসনের আত্মা সেখানে ঘুরে বেড়ান। রাত্রি নামলে শুনতে পাওয়া যায় পায়ের শব্দ, করিডরে ছায়া—আর পঞ্চম ব্লকের নীরবতা যেন আরও গভীর হয়ে ওঠে।
হেস্টিংস হাউস: ঘোড়সওয়ার এক প্রেতাত্মার রহস্য। আলিপুরের ঐতিহ্যবাহী হেস্টিংস হাউসের নাম শুনলেই ভেসে ওঠে এক সাহেবের ঘোড়ায় চড়ে যাওয়ার দৃশ্য। এখন এখানে মহিলাদের বিএড কলেজ হলেও ছাত্রীরা মাঝেমধ্যেই দেখেছেন সেই রহস্যময় ঘোড়সওয়ারকে। বলা হয়, তিনি কিছু খুঁজছেন—সম্ভবত সেই হারানো ইতিহাস, যা এই শহরের মাটিতে মিশে গেছে।
গার্স্টিন প্লেস: আকাশবাণীর অশরীরী স্টুডিও পুরনো আকাশবাণী ভবন, এক নম্বর গার্স্টিন প্লেস—দিনে সাধারণ অফিস, রাতে রহস্যের আস্তানা। অনেকেই বলেন, মধ্যরাতে রেকর্ডিং রুম থেকে ভেসে আসে কারও গান গাওয়ার আওয়াজ। কেউ নাকি দেখেছেন এক সাহেবকে কাজ করতে—যেন সময় থেমে গেছে তার কাছে।
নিমতলা ঘাট: আগুন, ছাই আর আত্মার উপস্থিতি। চিতা নির্বাপিত হয়, কিন্তু আত্মারা কি সত্যিই বিদায় নেন? কলকাতার নিমতলা ঘাটে নাকি এখনও ভাসে সেই প্রশ্নের উত্তর। ভূতচতুর্দশীর রাতে এখানে নাকি টের পাওয়া যায় অজানা উপস্থিতি, যেন কেউ খুব কাছেই দাঁড়িয়ে আছে—অদৃশ্য অথচ স্পষ্ট।
সাউথ পার্ক স্ট্রিট গোরস্থান: নীরবতার ভিতর ভেসে ওঠা ফিসফিসানি। দক্ষিণ পার্ক স্ট্রিটের পুরনো কবরস্থান যেন শহরের বুকে এক অন্য জগৎ। গাছের ছায়া, প্রাচীন সমাধি, আর মাঝে মাঝে অজানা ফিসফিসানি—সব মিলিয়ে এখানে সময়ের গতি থেমে যায়। বহু দর্শনার্থীই নাকি অনুভব করেছেন এক অদ্ভুত উপস্থিতি, যা যুক্তিতে ব্যাখ্যা করা যায় না।