করোনা রোগীদের ৩০ শতাংশই উপসর্গহীন বলছে সমীক্ষা
করোনাভাইরাসের দাপটে কাঁপছে গোটা বিশ্ব। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই রোগের সবচেয়ে ক্ষতিকারক দিকটি হল, এই রোগের উপসর্গহীন রোগীরাও একই রকম ঝুঁকিপূর্ণ। এবং এই উপসর্গহীন রোগীরাই সবচেয়ে বেশি করোনা ছড়াচ্ছেন। কারণ, তাঁরা নিজেরাই জানেন না যে, তাঁদের শরীরে করোনাভাইরাস রয়েছে। সম্প্রতি এ নিয়ে একটি গবেষণায় উঠে এসেছে যে, করোনা রোগীদের মধ্যে ৩০ শতাংশই উপসর্গহীন। এবং এর ফলেই কোনও কোনও জায়গায় মারাত্মক রূপ নিচ্ছে এই রোগ।
দক্ষিণ কোরিয়ার জার্নাল অফ দ্য অ্যামেরিকান মেডিক্যাল সোসাইটি ইন্টারনাল মেডিসিনের মতে, উপসর্গহীন রোগীদের নাকে, গলায় এবং ফুসফুসে সবচেয়ে বেশি ভাইরাস বাসা বাঁধে। এবং এরাও একই রকম ভাবে ভাইরাস ছড়াতে পারে।
করোনাভাইরাসের (Coronavirus) সাধারণ উপসর্গ যেমন– জ্বর, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্টের সমস্যা ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার কয়েকদিনের মধ্যেই দেখা যায়। এর পর শারীরিক ইমিউনিটির উপর নির্ভর করে আরও মারাত্মক উপসর্গ শরীরে দেখা দেবে কিনা। কো-মর্বিড রোগীদের জন্য সে কারণেই করোনা আরও ভয়ংকর। কারণ, শরীরের বেশিরভাগ অঙ্গপ্রত্যঙ্গে ভয়াবহ প্রভাভ ফেলে এই কোভিড ১৯ ভাইরাস। সম্প্রতি ব্রিটেনের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের হাতে আরও চাঞ্চল্যতর তথ্য উঠে এসেছে। তাঁদের দাবি, করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার পরেও বহু রোগীর শরীরে থেকে যাচ্ছে করোনার উপসর্গ।
একটি সমীক্ষা চালিয়ে অক্সফোর্ডের (Oxford) গবেষকেরা দেখেছেন যে, করোনার উপসর্গগুলির মধ্যে শ্বাসকষ্ট, গায়ে ব্যথা, উৎকণ্ঠা এবং মানসিক অবসাদের মতো লক্ষণগুলি সুস্থ হওয়ার এক মাস পরেও থেকে যাচ্ছে। কারও কারও ক্ষেত্রে তা আরও বেশি। করোনাজয়ীদের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলিও ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে প্রমাণ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
অক্সফোর্ডের গবেষকদের মতে, কোভিডের এখনও কোনও ওষুধ নেই। ফলে ভাইরাস শরীরে ঢুকলে তার সঙ্গে লড়াই করে শরীরের অ্যান্টিবডি। প্রথম লড়াইয়ে ভাইরাস দমে গেলেও নিঃশেষ হয় না। তখন হয়তো ভাইরাস ও অ্যান্টিবডি থেকে যায় পাশাপাশি। সমানে সমানে যতদিন থাকে, সমস্যা হয় না। সমস্যা হয় তখন, যখন সময়ের সঙ্গে অ্যান্টিবডি কমতে শুরু করে। মাথাচাড়া দেয় ভাইরাস। রোগ রিল্যাপস করে। আর যদি অ্যান্টিবডির সঙ্গে লড়তে লড়তে ভাইরাস নিজেকে পাল্টে ফেলে অর্থাৎ মিউটেট করে যায়, তাহলে যারা নিজেদের পাল্টাতে পারল না তারা মরে রোগ তখনকার মতো সারলেও, পরিবর্তিত ভাইরাসগুলি আবার সময়ের সঙ্গে বংশবৃদ্ধি করে এবং আবার রোগ হিসেবে ফিরে আসে।