নাগরিকত্বের জন্য মতুয়াদের ভিক্ষা চাইতে হচ্ছে কেন, হুঙ্কার সাংসদ শান্তনুর
নাগরিকত্ব আইনের প্রয়োগ নিয়ে কেন্দ্রের বিলম্বে হতাশ মতুয়া মহাসমাজ। রবিবার উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটার ঠাকুরনগরে রাস উৎসব ও সারা ভারত মতুয়া মহাসঙ্ঘের নতুন কমিটি গঠন উপলক্ষে এই মনোভাবই জানিয়ে দিলেন বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। ক’দিন আগে গোপালনগরে এক সভায় এসে বিজেপির (BJP) রাজ্য সভাপতি জানিয়ে গিয়েছেন, এক বছরের মধ্যে হিন্দু উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। মতুয়াদের (Matua) অধিকাংশই এই গোত্রে পড়েন। কিন্তু এই প্রতিশ্রুতি যে মতুয়াদের বড় অংশকে সন্তুষ্ট করতে পারেনি, সে কথা এ দিন স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন শান্তনু। দিলীপ ঘোষের নাম না করে তাঁর বক্তব্য, ‘‘কোনও এক নেতার কাছে শুনলাম, এক বছর পরে নাকি সোসাইটিতে নাগরিক আইন চালু হবে। এত দেরি হলে আমাদের আর তার দরকার নেই। পরবর্তী কালে এমনিই আমরা নাগরিকত্ব পাব।’’
এ দিন মতুয়া ভক্তেরা অনেকে হাজির হয়েছিলেন ঠাকুরবাড়িতে। কিছু ভক্ত শান্তনুর (Shantanu Thakur) কাছে লিখিত ভাবে দাবি জানান, দ্রুত নাগরিকত্ব আইন চালু করা হোক। শান্তনু বলেন, ‘‘কেন নাগরিকত্বের জন্য আমাদের ভিক্ষা চাইতে হচ্ছে বার বার? কেন আন্দোলন করতে হচ্ছে বার বার? কংগ্রেস, সিপিএম, তৃণমূল, বিজেপি— সকলের কাছে আমরা ভিক্ষা চেয়েছি। অধিকার কেউ দেবে না। অধিকার আদায় করে নিতে হবে।’’
শান্তনু বলেন, ‘‘রাজনৈতিক লোকেরা আমাদের পিছিয়ে রেখেছেন। যদি সুযোগ আসে, দেখাব, রাজনৈতিক ময়দান দখল করার ক্ষমতা কাদের আছে। কোনও রাজনৈতিক দলের কথা মতো আমরা চলব না। কিছু দিন আরও অপেক্ষা করব। তার পরেও নাগরিকত্ব আইন প্রয়োগ না হলে মতুয়ারা তাঁদের মতো ভাববেন।’’ তাঁর কথায়, ‘‘মতুয়াদের যদি মাছের চার দেওয়া হতে থাকে, তাতে আগামী দিনে মতুয়ারা সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে আমি মতুয়াদের কথাই শুনব। থোড়াই রাজনীতির কথা শুনব! আমাদের নিয়ে যারা রাজনীতি করছে, তাদের লাভ হবে না।’’
মতুয়াদের পীঠস্থান ঠাকুরবাড়িতে দু’টি রাস উৎসব হচ্ছে। একটির নেতৃত্বে শান্তনু ঠাকুর। অন্যটি হচ্ছে তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ তথা অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি মমতা ঠাকুর। কেন্দ্রের নাগরিকত্ব আইন নিয়ে অবস্থান স্পষ্ট করে মমতা বলেন, ‘‘এটা নিঃশর্ত আইন নয়। কেন্দ্র তা চালু করতে চাইলে আমরা ভক্তদের নিয়ে ধর্না, অনশন শুরু করব।’’