দেশ বিভাগে ফিরে যান

জিএসটি নিয়ে নতিস্বীকার, ধার নিচ্ছে কেন্দ্রই

December 6, 2020 | 2 min read

অবশেষে জিএসটি ক্ষতিপূরণ নিয়ে কেন্দ্র বনাম রাজ্যগুলির মতান্তরের নিরসন হল। ঋণ নেবে কেন্দ্রীয় সরকারই। ক্ষতিপূরণ হিসেবে সেই টাকা দেওয়া হবে রাজ্যগুলিকে। শনিবার শেষ রাজ্য হিসেবে কেন্দ্রীয় সরকারের এই নবতম প্রস্তাবে রাজি হয়েছে ঝাড়খণ্ড। অর্থমন্ত্রক জানিয়েছে, দেশের প্রতিটি রাজ্যই জিএসটি ক্ষতিপূরণের আওতায় চলে এসেছে। আর সমস্যা নেই।

লকডাউনের (Lockdown) জেরে জিএসটি সংগ্রহে আর্থিক লোকসান হয়েছে। তার ক্ষতিপূরণ নিয়ে বিগত কয়েকমাস ধরে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে রাজ্যগুলির চরম মতানৈক্য চলছিল। একাধিক রাজ্যের দাবি ছিল, কেন্দ্র ওই ক্ষতিপূরণ প্রদান করুক। পাল্টা মোদি সরকারও অনড় থেকে জানায়, তাদের পক্ষে ঋণ নেওয়া সম্ভব নয়। রাজ্যগুলি বরং ধার নিয়ে ঘাটতি মেটাক। বিশেষ করে অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি তাতে বেঁকে বসে। একের পর এক জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠকে তারা অর্থমন্ত্রককে জানিয়ে দেয়, ক্ষতিপূরণ মেটাতে ঋণ নেবে না। প্রবল চাপানউতোরের জেরে শেষ পর্যন্ত কেন্দ্র বাধ্য হয় একটি বিশেষ ঋণগ্রহণ নীতি নিতে। কেন্দ্রের নবতম প্রস্তাব ছিল, তারাই ঋণ নেবে এবং রাজ্যগুলিকে সেই টাকা প্রদান করা হবে। পাশাপাশি রাজ্যগুলি অতিরিক্ত ঋণও নিতে পারবে। অর্থাৎ যে পরিমাণ ধার নেওয়ার অধিকার রাজ্যের আছে, তার থেকেও বেশি নেওয়ার জন্য নিয়ম শিথিল করা হয়। এই দুই ব্যবস্থা মেনে নিয়েছে রাজ্যগুলি। স্থির হয়েছে, আগামীদিনে জিএসটি ক্ষতিপূরণ বাবদ আদায় করা সেস থেকে ওই টাকা মেটাবে বিভিন্ন রাজ্যের সরকার। একমাত্র ঝাড়খণ্ড সিদ্ধান্ত নিতে গড়িমসি করছিল। এদিন তারাও সম্মতি জানিয়েছে বলে দাবি অর্থমন্ত্রকের।

দেশের ২৮টি রাজ্য অবশেষে কেন্দ্রের বিশেষ প্রস্তাব অনুযায়ী ফর্মুলা মেনে ক্ষতিপূরণ পেতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই ৩০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে কেন্দ্র। তা দেওয়া হয়েছে রাজ্যগুলিকে। এভাবেই মোট ১ লক্ষ ১০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, ছত্তিশগড়, মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, পঞ্জাব, তেলেঙ্গানার মতো রাজ্যগুলি প্রথম থেকেই অনড় অবস্থান নিয়েছিল। তাদের যুক্তি ছিল, করোনাকালে রাজস্বে যা ক্ষতি হয়েছে, তারপর নতুন করে আবার ঋণের সুদ মেটানো সম্ভব নয়। বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি অবশ্য কেন্দ্রের প্রস্তাব মেনে প্রথমেই নিজেরা ঋণ নিতে রাজি হয়ে যায়। কিন্তু যতক্ষণ সব রাজ্য একটি কোনও ফর্মুলায় রাজি না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত জিএসটি ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত কোনও স্থায়ী সমাধান হচ্ছিল না।

জিএসটি (GST) আ‌ইনে বলা হয়েছে, ২০১৭ থেকে পাঁচ বছরের জন্য রাজ্যগুলি ক্ষতিপূরণ সেস পাবে। অর্থাৎ ২০২২ পর্যন্ত। তারপরই ক্ষতিপূরণ সেস বাবদ পাওয়া টাকা থেকে ঋণ পরিশোধ করতে পারে রাজ্যগুলি। মোট পাঁচটি কিস্তিতে ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়া হবে। প্রতিটি কিস্তির আগে দাবি জানাতে হবে রাজ্যগুলিকে। ইতিমধ্যেই নয়া ফর্মুলায় পশ্চিমবঙ্গকে প্রাথমিকভাবে বিশেষ ঋণগ্রহণ খাত থেকে ২৫২ কোটি টাকা প্রদান করা হয়েছে। পাশাপাশি অতিরিক্ত ঋণগ্রহণের যে বিশেষ সুধিবা প্রদান করা হয়েছে, সেই বাবদ পশ্চিমবঙ্গ পাবে অতিরিক্ত ৬,৭৮৭ কোটি টাকা।

এদিকে, ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত সমস্যা মিটে যাওয়ায় জিএসটি কাউন্সিলের পরবর্তী বৈঠকে বেশ কিছু পণ্যের কর কমানোর দাবি নিয়ে আলোচনা হবে। ওই তালিকায় কোন কোন পণ্য অন্তর্ভুক্ত হবে, সেটা নিয়েও মতান্তর রয়েছে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে। টেক্সটাইল থেকে অটোমোবাইল, বিভিন্ন সেক্টরের পক্ষ থেকে দাবি তোলা হয়েছে, তাদের জিএসটি কমানো হোক।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#central government, #GST

আরো দেখুন