মার্চেই কলকাতা পুরভোট করতে প্রস্তুত, কমিশনকে চিঠি রাজ্যের
আগামী বছর মার্চ মাসে কলকাতা পুরসভার ভোট করতে চায় রাজ্য সরকার (State Government)। অবশ্যই কোভিড পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলে। মঙ্গলবার প্রশাসনের পক্ষ থেকে চিঠি দিয়ে কার্যত সে কথা জানানো হল রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে। আগামীকাল, বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের কলকাতার পুরভোট (Kolkata Municipal Corporation poll) সংক্রান্ত মামলার শুনানি রয়েছে। সেখানেই রাজ্য সরকারের এই প্রস্তাব হলফনামা আকারে জমা দেবে কমিশন। এক্ষেত্রে একটি সমস্যা থেকেই যাচ্ছে। কারণ নিয়ম অনুযায়ী, আগামী মার্চ মাসের শুরুতেই বাংলায় বিধানসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশিত হওয়ার কথা। গত ২০১৬ সালের ৫ মার্চ বিধানসভা ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারির সঙ্গে সঙ্গে নির্বাচনী বিধি কার্যকর হয়। এবারও একই সময়ে ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে কলকাতায় পরপর দু’টি ভোট আয়োজন করতে হবে কমিশনকে।
গত ৮ মে কলকাতা পুরসভার মেয়াদ শেষ হয়। কিন্তু করোনা (Covid 19) পরিস্থিতি ও লকডাউনের (Lock Down) কারণে ভোট করা সম্ভব হয়নি। রাজ্যের অন্য পুরসভার পাশাপাশি কলকাতাতেও প্রশাসক নিয়োগ করে সরকার। বিষয়টি নিয়ে আইনি জটিলতা তৈরি হয়। কলকাতা পুরসভায় দ্রুত নির্বাচন চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন বিজেপি নেতা প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় সহ অন্যান্যরা। গত ৭ ডিসেম্বর সেই মামলার শুনানিতে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে ১০ দিনের মধ্যে চূড়ান্ত অবস্থান জানাতে নির্দেশ দেন বিচারপতিরা। তার পরিপ্রেক্ষিতেই এদিন রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সচিব নীলাঞ্জন শাণ্ডিল্যকে চিঠি দেন পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তরের প্রধান সচিব খলিল আহমেদ। তাতে তিনি জানিয়েছেন, চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশন তা গ্রহণ করার পর ৪ থেকে ৬ সপ্তাহের মধ্যে ভোট করা যেতে পারে। তবে কোভিড পরিস্থিতির উপর নজর রেখেই তা করতে হবে। রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমও (Firhad Hakim) জানিয়েছেন, ‘আমরা ভোট করাতে প্রস্তুত। কমিশন যেদিন চাইবে, সেদিন ভোট হবে। যারা ভোটে জিততে পারে না, তারাই অশান্তির অভিযোগ তোলে।’
আর একমাস পরেই, আগামী ১৫ জানুয়ারি চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। নিয়ম অনুযায়ী, ওই লিস্টের ভিত্তিতে পুরভোট করার জন্য অনুমোদন চাইবে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। তারপর সেটিকে ওয়ার্ডভিত্তিক বণ্টন করা হবে। তার ভিত্তিতে প্রকাশিত হবে ওয়ার্ড পুনর্বিন্যাসের তালিকা। এইসব প্রক্রিয়া শেষ হতে হতে জানুয়ারি মাস শেষ হয়ে যাবে। এর ৪ থেকে ৬ সপ্তাহ পরেই ভোট করার পক্ষপাতী নবান্ন। অর্থাৎ মার্চ মাসের মাঝামাঝি। তবে কলকাতা বাদে অন্য পুরসভায় ভোটের ব্যাপারে আগ্রহ দেখাচ্ছে না রাজ্য। কারণ, আইনে সেখানে প্রশাসক বসানোর সংস্থান রয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) বিচারপতিরা অবশ্য গত শুনানিতেই জানিয়েছিলেন, বিভিন্ন রাজ্যে করোনার মধ্যেও ভোট হচ্ছে। কলকাতা পুরসভার ভোট দ্রুত করানো প্রয়োজন। সেই অনুযায়ীই রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে মতামত জানাতে বলা হয়। আইন অনুযায়ী, পুর দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করেই রাজ্য নির্বাচন কমিশন ভোটের দিন স্থির করে। তাই শীর্ষ আদালতে সরকারের প্রস্তাবই হলফনামা দিয়ে জানাবে তারা। নির্দিষ্ট দিনক্ষণ উল্লেখ করা থাকবে না। কারণ, সবটাই নির্ভর করছে কোভিড পরিস্থিতির উপর। এখন দেখার, সুপ্রিম কোর্ট এই প্রস্তাবে মান্যতা দেয় কি না।