দেশ বিভাগে ফিরে যান

মহিলা ও শিশুদের সামনে রেখে আন্দোলন তীব্রতর করার প্রস্তুতি কৃষকদের

December 16, 2020 | 2 min read

তিনটি কৃষি আইন (Farm Laws) অবিলম্বে বাতিলের দাবিতে দিল্লি সংলগ্ন সীমানাগুলি অবরোধ করে কৃষকদের আন্দোলন মঙ্গলবার ২০ দিনে পড়েছে। লাগাতার এই আন্দোলন সত্ত্বেও কোনও আশু সমাধানসূত্র এখনও পর্যন্ত বের করা যায়নি। বিক্ষোভকারী কৃষকদের সুর নরম তো হয়ইনি, বরং কেন্দ্রের ডাকা একের পর এক বৈঠক যতবার নিষ্ফলা হয়েছে, তত পাল্লা দিয়ে বেড়েছে আন্দোলনের ঝাঁজ। যার জেরে ক্রমশ কোণঠাসা হয়ে পড়ছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রকে আরও চাপে ফেলতে বিক্ষোভরত কৃষকেরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, আন্দোলনের সামনের সারিতে এবার থেকে রাখা হবে মহিলা ও শিশুদের। জানা যাচ্ছে, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে মূলত পাঞ্জাব এবং হরিয়ানা থেকে আরও প্রায় দু’হাজার মহিলা কৃষক সিংঘু সীমানায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যোগ দেবেন। আন্দোলনকারীরা জানাচ্ছেন, ‘বাড়ির মহিলারা যখন প্রতিবাদ অবস্থানে যোগ দেবেন, তখন স্বাভাবিকভাবেই তাঁদের সঙ্গে শিশুরাও থাকবে। যার অর্থ, একপ্রকার পুরো পরিবারই একজোট হবে সীমানাগুলিতে।’

আন্দোলনের একেবারে গোড়া থেকেই সম্পূর্ণ অবরুদ্ধ হয়ে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ দিল্লি-হরিয়ানার সিংঘু সীমানা এবং দিল্লি-রোহতক করিডরের তিক্রি সীমানা। অবরোধের জেরে সংশ্লিষ্ট জাতীয় সড়কজুড়ে পরপর দাঁড়িয়ে গিয়েছে অসংখ্য পণ্যবাহী ট্রাক। কোনওটি ঠাসা নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীতে, কোনওটিতে রয়েছে খাদ্যশস্য কিংবা অন্য কোনও পণ্য। দিনের পর দিন এভাবে সড়কপথে পণ্য পরিবহণ বন্ধ থাকায় চরম বেকায়দায় পড়েছে সরকারও। আন্দোলনের তীব্রতা ক্রমশ বাড়ছে দিল্লি-উত্তরপ্রদেশের গাজিপুর সীমানা কিংবা দিল্লি-নয়ডার চিল্লা সীমানাতেও। ১২ দিন পর সোমবার চিল্লা সীমানা খুলে দেওয়া হলেও মঙ্গলবার ফের তার একটি দিক বন্ধ করে দিতে হয়েছে। এমনই জানিয়েছে দিল্লি পুলিস। নতুন করে আন্দোলনের ঝাঁঝ বৃদ্ধি পাচ্ছে রাজস্থান-হরিয়ানা সীমানাতেও। এরই মধ্যে এদিন কেন্দ্রীয় সরকারকে ফের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছেন কৃষকেরা। আন্দোলনকারীরা বলেছেন, ‘ক্ষমতা থাকলে কেন্দ্রীয় সরকারের (Central Government) প্রতিনিধিরা প্রতিটি গ্রামে যান। সেখানে গিয়ে তাঁরা দেখুন কৃষক পরিবারগুলি কী পরিস্থিতিতে দিন কাটাচ্ছে। দিল্লিতে বসে কৃষক স্বার্থে কথা বলার কোনও অর্থ নেই।’

দিল্লির কনকনে ঠান্ডায় একপ্রকার খোলা আকাশের নিচে আন্দোলনে শামিল হতে গিয়ে বহু কৃষক অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। কয়েকজন মারাও গিয়েছেন। মহিলা এবং শিশুরা এলে তাঁদের শারীরিক পরিস্থিতি কি আরও খারাপ হবে না? আন্দোলনরত কৃষকদের সাফ কথা, ‘আমাদের সামনে দ্বিতীয় কোনও রাস্তা খোলা নেই। হয় লড়তে হবে, নাহয় মরতে হবে। দিল্লির ঠান্ডায় আমরা জমে যেতে পারি। কিন্তু কৃষি আইন বাতিল না হলে অবরোধ তুলব না।’ বিক্ষোভকারীরা জানিয়েছেন, আগামী ১৭ ডিসেম্বর উত্তরপ্রদেশের মুজফফরনগর থেকে আরও কৃষক তাঁদের সঙ্গে বিভিন্ন সীমানায় যোগ দেবেন। সারা ভারত কৃষক সংঘর্ষ সমন্বয় কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আন্দোলনের (Farmers Protest) সমর্থনে আজ, বুধবার থেকে আগামী ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত কলকাতা, মণিপুর, মুম্বই এবং পাটনায় বিক্ষোভ সমাবেশ করা হবে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#central government, #Farmers' protest

আরো দেখুন