জোটের আসন রফা থেকে মুখ্যমন্ত্রিত্ব, রাজ্য নেতাদের সংযত থাকতে নির্দেশ এআইসিসি-র
বাম-কংগ্রেস জোট থেকে মুখ্যমন্ত্রিত্ব—সবক্ষেত্রেই রাজ্য নেতৃত্বকে সংযত থাকতে বলল এআইসিসি। একুশের বিধানসভা ভোটে বাম-কংগ্রেসের জোটে শীর্ষ নেতৃত্ব সায় দেওয়ার পরেই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীকে মুখ্যমন্ত্রী করার দাবিতে সরব হয়েছে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের একাংশ। সঙ্গে জোটে বড় সংখ্যার আসন দাবি করেও প্রকাশ্যে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম বলেছেন, “সবে তো পাত্রপাত্রীর দেখাশোনা শুরু হয়েছে। এখনই ছেলের নাম কী হবে তা জানতে চাওয়া হচ্ছে কেন?”
গত লোকসভা ভোটে মুর্শিদাবাদ ও রায়গঞ্জ আসন নিয়ে দড়ি টানাটানিতেই শেষমেশ ভেস্তে গিয়েছিল বাম-কংগ্রেস জোট। সেই অভিজ্ঞতা থেকে ‘শিক্ষা নিয়ে’ এ বার জোট সম্পর্ক বজায় রাখতে সাবধানী পদক্ষেপ করতে চাইছে কংগ্রেস হাইকমান্ড। মুখ্যমন্ত্রিত্ব-সহ আসন রফার বিষয়টি নিজেদের হাতেই রাখতে চায় এআইসিসি। সূত্রের খবর, প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বকে এই সংক্রান্ত বিষয়ে প্রকাশ্যে বিবৃতি দেওয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। বরং নিজেদের দাবির স্বপক্ষে যুক্তি, পরিসংখ্যান ও তথ্য জোগাড় করে তা এআইসিসিতে পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শনিবার দিল্লি থেকে প্রদেশ কংগ্রেসের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের সঙ্গে এক ভার্চুয়াল বৈঠক করেন অধীর। সূত্রের খবর, সেই বৈঠকেই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি দলীয় নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন যুক্তিগ্রাহ্য আসনের দাবি প্রসঙ্গে জেলাভিত্তিক তথ্য পরিসংখ্যান সংগ্রহ করতে। যার ভিত্তিতে কংগ্রেস নেতৃত্ব বামফ্রন্টের সঙ্গে আসন সমঝোতার বিষয়টি চূড়ান্ত করবে।
চলতি মাসের ১৭ তারিখে কলকাতায় এসেছিলেন পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক তথা এআইসিসি নেতা জিতিন প্রসাদ। বিধান ভবনে তাঁর কাছেই রাজ্য কংগ্রেসের নেতারা বামেদের থেকে ১৪০টি আসন চাওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন। বৈঠকে মুর্শিদাবাদ ও মালদহের সিংহভাগ আসনে প্রার্থী দেওয়ার দাবি করা হয়েছিল। সেই সময়ই পর্যবেক্ষক জিতিন তথ্য-পরিসংখ্যান-সহ জেলাভিত্তিক আসনের তালিকার পূর্ণাঙ্গ রির্পোট এআইসিসি নেতৃত্বের কাছে পাঠাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। সূত্রের খবর, নতুন বছরের গোড়ার দিকেই সেই রির্পোট দিল্লি নেতৃত্বের কাছে পাঠানো হবে। ভার্চুয়াল বৈঠকেও বহরমপুরের সাংসদ সেই বিষয়েই প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক ঋজু ঘোষাল বলেছেন, ‘‘প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি আমাদের বৈঠকে বেশ কিছু নির্দেশ দিয়েছেন। সেভাবেই আমরা কাজ করছি।’’
সম্প্রতি শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে পুরুলিয়ার কংগ্রেস বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায় বিজেপিতে যোগদান করেছেন। তারপরেই পুরুলিয়া জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব ওই আসনে পার্থপ্রতিম বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে দিয়েছে। এ বিষয়টিও এআইসিসি-র নজরে এসেছে।