বাছাই করা মামলায় সক্রিয় আয়কর দপ্তর, নেপথ্যে কি রাজনৈতিক চাপ
৪০ হাজার বেআইনি লেনদেনের হদিশ শুধু পশ্চিমবঙ্গে! অথচ, সেদিকে ফিরে তাকানোর ফুরসত নেই আয়কর দপ্তরের। অভিযান-তল্লাশির সবটাই বাছাই করা কিছু মামলায় সীমাবদ্ধ। আর তাতেই খানিকটা উল্টো হাওয়া বইতে শুরু করেছে ইনকাম ট্যাক্স (Income Tax) বিভাগের অন্দরে। কর্তাদের একাংশই এখন এই কথা বলতে শুরু করেছেন। দপ্তরে কানাঘুষো চলছে, নির্দিষ্ট কয়েকটা ‘কেস’ নিয়ে এত হাঁকডাক কেন? বিশেষ কয়েকটি ক্ষেত্রে রেড চালানোর নেপথ্যে কোনও রাজনৈতিক অভিসন্ধি বা চাপ নেই তো? অনেকেই মনে করছেন, শাসকদলকে ভোটের আগে ব্যতিব্যস্ত করাই এখানে দিল্লির মূল লক্ষ্য।
কোথাও কোনও বেআইনি লেনদেন হলে, বা আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তি থাকলে তার তথ্য নানা সূত্রে আয়কর দপ্তরের হাতে এসে পৌঁছয়। এখানে অন্যতম ভূমিকা পালন করে ব্যাঙ্ক বা অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান। ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে নোট বাতিলের পর থেকে এমন তথ্য দপ্তরের হাতে আসা কয়েক গুণ বেড়েছে। সেসব তথ্য মিলিয়ে দপ্তরের হাতে রাজ্যের অন্তত ৪০ হাজার বেআইনি লেনদেনের হদিশ রয়েছে। আয়কর কর্তাদের ওই অংশটির দাবি, ফাইলবন্দি হয়ে থাকা এই ৪০ হাজার কালো টাকার লেনদেনের বিরুদ্ধে আগামী দু’মাসের মধ্যে ব্যবস্থা নিতেই হবে। না হলে সেগুলির দিকে ফিরে তাকানোর আইনি অধিকার পর্যন্ত হারাবে দপ্তর। কোনওরকম খোঁজখবর বা তল্লাশির উপায় থাকবে না। কেন?
দপ্তরের কর্তারা বলছেন, ছ’বছর পর্যন্ত কোনও ফাইল বা কেস নিয়ে নড়াচড়া না হলে তা একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়। আয়কর আইনেই তা রয়েছে। সেই মতো ২০১৫ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত বেআইনি লেনদেনের যে তথ্য আয়কর দপ্তরের কাছে আছে, সেই বিষয়ে খোঁজখবর করতে উদ্যোগী হতে হবে চলতি আর্থিক বছরের মধ্যে। তারপর আর সেই বিষয়ে নিজে থেকে নাক গলাতে পারবে না দপ্তর।
কর্তাদের একাংশ বলছেন, করোনা (Covid 19) সংক্রমণ শুরুর পর কালো টাকার দিকে আর নজরই দেওয়া হয়নি। অভিযোগ উঠেছে, আয়কর আদায় তলানিতে ঠেকলেও কালো টাকার সন্ধান, বা তার থেকে বিকল্প পথে রাজস্ব আদায়ের উৎসাহ দেখানো হয়নি। বরং প্রধানমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বারবার বলেছেন, মানুষকে ইনকাম ট্যাক্সের ভয় দেখানো যাবে না। তাই হাত একরকম গুটিয়েই নিয়েছে দপ্তর।