বাড়ছে করোনা সংক্রমণ, ফের বন্ধ হতে পারে স্কুল?
করোনা সংক্রমণ(COVID19) বাড়ছে। এর প্রভাবে কি মাসখানেক আগে চালু হওয়া স্কুল (School)ফের বন্ধ হতে পারে? এমনই আশঙ্কা তৈরি হয়েছে শিক্ষকমহলে। শুধু তাই নয়, স্কুলগুলিতে পড়ুয়াদের উপস্থিতির হারেও এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসু বলেন, ট্রেনে-বাসে যেভাবে করোনা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, তার প্রভাব খুব শিগগিরই অভিভাবকদের মধ্যে পড়বে। অফলাইন ক্লাসে হাজিরা যেভাবে প্রায় তলানির দিকে গিয়েছে, তা আরও কমে যাবে।
উত্তরপাড়া গভর্নমেন্ট হাইস্কুলের শিক্ষক সৌগতবাবু বলেন, আমাদের দ্বাদশ শ্রেণির প্র্যাকটিক্যাল শেষ হয়ে গিয়েছে। তারা আর আসছে না। তবে, একাদশ শ্রেণির হাজিরার হারও আশাব্যাঞ্জক নয়। মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরাও আর স্কুলে আসছে না। এখন স্কুলে আসা পড়ুয়াদের মধ্যে নবম শ্রেণি এবং দশম শ্রেণির পড়ুয়ারা রয়েছে। তাও ৪০ জনের মধ্যে একদিন যদি ২৮ জন আসে, পরদিন আসছে ১৬ জন। এভাবে ওঠানামা করছে সংখ্যাটি। তবে তাঁর আশা, ভোটের জন্য স্থিতাবস্থাই বজায় রাখতে পারে সরকার। নিচু ক্লাসগুলি না খুললেও, চালু উঁচু ক্লাসগুলি বন্ধের নির্দেশ নাও আসতে পারে। তবে, পরিস্থিতি বেশি জটিল হলে স্বাভাবিকভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিই প্রথমে বন্ধ হবে বলেও তাঁর আশঙ্কা। তিনি এও বলেন, সরকারি বা সরকারপোষিত স্কুলগুলিতে স্বাস্থ্যবিধি পালন অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পরিকাঠামো এবং লোকবলের অভাবের কারণে সম্ভব হচ্ছে না।
পড়ুয়া সংখ্যা কমে যাওয়ার কথা স্বীকার করছেন যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পরিমল ভট্টাচার্যও। তিনি বলেন, আমাদের অনলাইন এবং অফলাইন দু’রকম ক্লাসই চলছে। তবে, অনলাইন ক্লাসে যা উপস্থিতি, অফলাইনে তার সিকিভাগও নয়। সেই হাজিরার হারও ওঠানামা করছে। শুধুমাত্র প্র্যাকটিক্যাল ক্লাসে উপস্থিতি সন্তোষজনক থাকছে। করোনা বেড়ে যাওয়ার বিষয়টিও এর অন্যতম কারণ হতে পারে। হিন্দু স্কুলের প্রধান শিক্ষক শুভ্রজিৎ দত্ত অবশ্য দাবি করছেন, এখনও পর্যন্ত পড়ুয়াদের ক্লাসে আসতে আগ্রহীই মনে হচ্ছে। আর বাকিটা সরকার যা মনে করবে, তা মেনেই চলব।
প্রধান শিক্ষক সংগঠন অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স আন্ড হেডমিস্ট্রেসেস-এর সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতি অবশ্য ব্যাপক আশাবাদী। তিনি বলেন, গ্রামের দিকে কেউ কোনও স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। করোনা যেন চলেই গিয়েছে! তাই স্কুলে হাজিরা কমার কারণ আর্থ-সামাজিক হলেও করোনার ভীতি নয়। তার উপরে ব্রিগেড সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড অভিভাবকরা দেখছেন। তাতে যোগ দিয়ে করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর নেই। স্কুল খোলার পর কোনও পড়ুয়ার করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর নেই। তাই এই অবস্থায় বরং প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণিও খুলে দেওয়া উচিত। কারণ, অত নিচু শ্রেণিতে অনলাইন ক্লাস নেওয়ার উপায় নেই। জেলার দিককার বিভিন্ন নার্সারি এবং কিন্ডারগার্টেন স্কুল কিন্তু চলছে।