লাভপুরে বিজেপি প্রার্থীকে ঝাঁটা-জুতো দেখালেন মানুষ
প্রচারে গিয়ে ঝাঁটা, জুতো দেখলেন বিজেপি প্রার্থী বিশ্বজিৎ মণ্ডল। ঘটনা লাভপুর বিধানসভার পারুই থানার সোমডাঙ্গা এলাকার। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বিজেপির অভিযোগ ইচ্ছাকৃতভাবে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এই কাজ করছেন যাতে বিজেপি প্রচার না করতে পারে। যদিও এ ঘটনার সাথে তৃণমূল কোনওভাবে যুক্ত নয় বলে সাফ জানিয়েছে শাসকদল।
স্থানীয় ও বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে পারুই থানার সোমডাঙ্গা, নিতাইপুর এলাকায় প্রচারের কথা বিজেপির প্রার্থীর। সেই মর্মে সোমডাঙ্গা এলাকায় প্রচার করতে গিয়ে বিজেপি প্রার্থী বিশ্বজিৎ মণ্ডল ও তাঁর অনুগামীরা দেখেন রাস্তার দু’পাশে দুটি খুঁটিতে দড়ি বেঁধে জুতো, ঝাঁটা টাঙানো রয়েছে তাঁকে ‘অভ্যর্থনা’ জানানোর জন্য! স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ বিজেপি প্রার্থী বিশ্বজিৎ মণ্ডল। প্রচারে গিয়ে তিনি বলেন, তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা আমার সামনে জুতোর মালা টাঙিয়ে দিয়েছেন, আমি এই জুতো মাথায় নিতেও প্রস্তুত! কিন্তু লাভপুরের মানুষ এটা বিচার করবেন, ১০ বছরে আপনারা যা কাজ করেছেন এই জুতো আপনাদের মাথায় না পড়ে। আপনাদেরকে আমি বলে যাচ্ছি আগামী ২রা মের পরেই জুতো আপনাদের মাথায় পড়বে। আপনাদের জুতো মাথায় নিয়ে আগামী পাঁচ বছর আমি চলতে প্রস্তুত।
সোমডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা তপন মণ্ডল, গোপাল ঘোষ বলেন, আমাদের এলাকায় যথেষ্ট শান্তিপূর্ণ। এলাকায় যথেষ্ট ভালো কাজ হয়েছে। তবে ভোটের সময় সব দলই প্রচার করছেন। হঠাৎ করে কে বা কারা খুঁটিতে দড়ি টাঙ্গিয়ে ঝাঁটা ও জুতো, চটি টাঙিয়েছেন বুঝতে পারছি না। তবে, কুসংস্কারবশত কেউ এই কাজ করতে পারেন।
যদিও, বিজেপি প্রার্থী বিশ্বজিৎ মণ্ডল অভিযোগ করে বলেন সোমডাঙ্গায় চটি, জুতো, ঝাঁটা টাঙানোর পেছনে একজন সিভিক পুলিশের হাত রয়েছে খবর পেয়েছি। সিভিক পুলিসের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হয়েছে। এরপর নিতাইপুর এলাকাতেও প্রচার করতে গিয়ে প্রার্থীকে রীতিমতো হেনস্থায় পড়তে হয়েছে বলে দাবি বিজেপির। তাঁদের অভিযোগ, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা বিজেপির প্রার্থী ও কর্মীদের প্রচার করতে আসতে দেখে হইহই তেড়ে আসেন। তাঁরা প্রার্থীকে আক্রমণ করার চেষ্টা করেন। সিভিক পুলিসরা এই ধরনের আচরণ করলেও পারুই থানার পুলিস যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন। না হলে বড় রকমের অঘটন ঘটে যেতে পারত। প্রার্থীর সঙ্গী রূপক পাল বলেন, তৃণমূলের পায়ের নীচের মাটি সরে যাচ্ছে বলে দুষ্কৃতীদের টাকা দিয়ে বিজেপিকে ভয় দেখাচ্ছেন। প্রচার থেকে ফিরে যাওয়ার পর বাড়ি বাড়ি ঢুকে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এলাকাবাসীকে শাসিয়েছে, বিজেপিকে ভোট না দেওয়ার জন্য। নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে আসতেই হিংসার রাজনীতি করছে তৃণমূল, মানুষই জবাব দেবেন। যদিও বিষয়টিকে আমল না দিয়ে লাভপুরের তৃণমূল প্রার্থী অভিজিৎ সিংহ বলেন, এটা সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক বিষয়। তৃণমূলের কোনও কর্মী এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নয়।
গ্রামবাংলায় অনেক মানুষ সংস্কার-কুসংস্কার মানেন। গ্রামে যেন কোনও অশুভ শক্তি প্রবেশ না করে তার জন্য অনেকে ঝাঁটা-জুতো রাখে, যাতে গ্রামের ওপর নজর না লাগে। আসলে তৃণমূলের উন্নয়ন দেখে বিজেপি দিশাহীন হয়ে গেছে। তাই প্রচারের আলোয় আসতে সস্তা রাজনীতিতে মেতেছে। কিন্তু এইভাবে বৈতরণী পার হওয়া যায় না সেটা বিজেপির বোঝা উচিত। সিভিক পুলিসের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের প্রেক্ষিতে বীরভূম জেলা পুলিস সুপার মিরাজ খালিদ বলেন, এখনও লিখিত অভিযোগ হাতে পাইনি। খোঁজ নিয়ে দেখছি। পারুই থানার সোমডাঙা এলাকায় বিজেপি প্রার্থীর সামনে জুতো ঝুলিয়ে রাখা হয়।