সরকারি হিসেবে মৃত্যুর সংখ্যার সঙ্গে মিল থাকছে না বাস্তব পরিস্থিতির মধ্যে প্রদেশে
শ্মশান ও কবরখানার পাশে মৃতদেহের সারি। বাড়তে থাকা করোনা (Coronavirus) সংক্রমণের ধাক্কায় এমনই করুণ অবস্থা মধ্যপ্রদেশের (Madhya Pradesh)। সরকারি হিসেবে মৃত্যুর সংখ্যার (Covid deaths) সঙ্গে মিল থাকছে না বাস্তব পরিস্থিতির। এমন পরিস্থিতিতে মানুষের মনে ভেসে উঠছে ১৯৮৪ সালের ভোপাল (Bhopal) গ্যাস দুর্ঘটনার দুঃসহ স্মৃতি। তাঁরা বলছেন, সেবারের পর এমন মৃত্যুমিছিল আর দেখা যায়নি এই রাজ্যে।
ভোপালের বাসিন্দা বিএন পাণ্ডের ভাইকে কেড়ে নিয়েছে করোনা। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে শোককাতর দাদা জানাচ্ছেন, ”গ্যাস দুর্ঘটনার সময় আমি নবম শ্রেণিতে পড়তাম। তখন এই ধরনের অনেক দৃশ্য দেখেছি। আজ তার ঘণ্টায় ৩০-৪০টা মৃতদেহ দেখতে পেলাম।” রাজ্যের বহু শ্মশানের সামনেই একটা দৃশ্য চোখে পড়ছে। সারি সারি অ্যাম্বুল্যান্স দাঁড়িয়ে থাকছে মৃতদেহ নিয়ে। কিন্তু দাহ করার উপায় নেই। কেননা শ্মশানে ইতিমধ্যেই লম্বা লাইন! কিন্তু সরকারি হিসেব একেবারেই মিলছে না এমন ভয়াবহ ছবির সঙ্গে। উদাহরণস্বরূপ সোমবারের কথা বলা যাক।
সরকারি হিসেব বলছে সেদিন গোটা রাজ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৩৭ জনের। অথচ কেবলমাত্র ভোপালের ভাদভাদা শ্মশানেই সেদিন শেষকৃত্য হয়েছে ৩৭ জন কোভিড আক্রান্তের! একই অবস্থা অন্যান্য দিনেরও। যেমন ৮ এপ্রিল ভোপালে শেষকৃত্য হয়েছে ৪১ জন করোনা আক্রান্তের। কিন্তু সরকারি হিসেব বলছে মাত্র ২৭ জন মারা গিয়েছেন গোটা রাজ্যে। স্বাভাবিক ভাবেই এমন অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে মধ্যপ্রদেশের শিবরাজ সিং চৌহান সরকার। রাজ্যের চিকিৎসা শিক্ষামন্ত্রী বিশ্বাস সারঙ্গ বলেছেন, ”মৃতের সংখ্যা কমানোর কোনও উদ্দেশ্যই নেই সরকারের। এটা কমিয়ে দেখালে তো আর আমরা পুরস্কার পাব না!”
কেবল মধ্যপ্রদেশই নয়। আরেক বিজেপি শাসিত রাজ্য গুজরাটেও (Gujarat) উঠেছে একই অভিযোগ। সেখানকার সব সংবাদমাধ্যম, সে সংবাদপত্র হোক কিংবা টেলিভিশন সকলেই অভিযোগ জানিয়েছে, সরকারি হিসেবের সঙ্গে প্রকৃত সংখ্যার আকাশপাতাল তফাত। গত ১২ এপ্রিল যেখানে আমেদাবাদে ২০ জনের করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কথা জানিয়েছে সরকার, সেখানে রাজ্যের শীর্ষস্থানীয় সংবাদপত্র ‘সন্দেশ’-এর হিসেব বলছে প্রকৃত সংখ্যাটা ৬৩।