মানিকচকে বিজেপির বিক্ষুব্ধ নির্দল প্রার্থীর মনোনয়ন তুলতে টাকার টোপ? ভাইরাল অডিয়ো
বিক্ষুদ্ধ বিজেপি (BJP) নেতা, কর্মীরা নির্দল প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়ে পড়ায় জয় নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে বিজেপি প্রার্থীর। তাই নির্দল প্রার্থীদের মনোনয়ন তুলে নিতে ‘আবেদন করছেন’ স্থানীয় নেতা থেকে জেলা সভাপতি। দেখানো হচ্ছে ‘টাকার লোভ’ও। এমনই অভিযোগ নির্দল প্রার্থী, বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতা-কর্মীদের। সেই নিয়ে একটি অডিয়ো ভাইরাল হয়েছে নেটমাধ্যমে। যদিও সেই অডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি দৃষ্টিভঙ্গি।
দু’টি ভিন্ন ফোন কলের রেকর্ডিংয়ে যে কণ্ঠ শোনা গিয়েছে, দাবি করা হয়েছে তার একটি মানিকচকের নির্দল প্রার্থী ডালিম মণ্ডল ও বিজেপি নেতা অভিজিৎ মিশ্রের। অন্যটি নির্দল প্রার্থী অনিল মণ্ডল ও বিজেপি-র মালদহ জেলা সভাপতি গোবিন্দ মণ্ডলের। একটিতে ডালিমকে প্রার্থিপদ প্রত্যাহারের জন্য দু’লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা বলছেন বিজেপি নেতা অভিজিৎ। অন্যটিতে প্রার্থী অনিলের সঙ্গে বারবার কথা বলতে চেয়েও প্রত্যাখ্যাত হচ্ছেন বিজেপি-র জেলা সভাপতি।
ঘটনার শুরু মানিকচক কেন্দ্রে প্রার্থী ঘোষণার পর থেকেই। এ বারে বিধানসভা নির্বাচনে মানিকচকে বিজেপি প্রার্থী করেছে তৃণমূল (Trinamool) ছেড়ে আসা গৌরচন্দ্র মণ্ডলকে। দল বদলের ১০ দিনের মধ্যে তাঁকে প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করেছে গেরুয়া শিবির। তাতেই ক্ষুব্ধ হয়েছেন স্থানীয় নেতৃত্ব। তাঁদের অভিযোগ, যাঁদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন, সেই প্রাক্তন তৃণমূলের নেতাকেই প্রার্থী করা হয়েছে। সেই ক্ষোভ থেকে বেশ কয়েকজন বিজেপি নেতা-কর্মী নির্দল প্রার্থী হিসাবে দাঁড়িয়ে পড়েন। ক্ষোভে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় বিজেপি-র কার্যালয়ে। কিন্তু তখনও বিজেপি নেতৃত্বে নিজের অবস্থান থেকে সরেনি।
সম্প্রতি সেই নিয়েই একটি অডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। তার একটিতে বিজেপি-র জেলা সভাপতি বিক্ষুদ্ধ বিজেপি কর্মীর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন। আবেদন করেন মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য। কিন্তু তিনি তা নাকচ করে দেন। শুধু তাই নয় মানিকচক ব্লকের বিজেপি নেতা তথা আইনজীবী অভিজিৎ অপর এক বিক্ষুদ্ধ বিজেপি কর্মী ও নির্দল প্রার্থী ডালিমকেও ফোনে অনুরোধ করেন মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য। দু’লক্ষ টাকা দেওয়ার কথাও বলেন। কিন্তু ডালিমও সেই প্রস্তাব নাকচ করে দেন।
এই কথোপকথনের অডিয়ো নেটমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই শোরগোল শুরু হয় জেলা রাজনীতিতে। দৃষ্টিভঙ্গি অবশ্য সেই অডিয়ো ক্লিপের সত্যতা যাচাই করেনি।
মানিকচক ব্লকের বিজেপি নেতা তথা আইনজীবী অভিজিৎ বলেন, ‘‘এটি একটি ভুয়ো অডিয়ো। কণ্ঠস্বর নকল করে এমন অডিয়ো ভাইরাল করা হয়েছে।’’ মালদহ জেলা বিজেপি-র সভাপতি গোবিন্দ জানান, বিক্ষুদ্ধ বিজেপি কর্মী অনিলের সঙ্গে তিনি কথা বলেছিলেন। অনিল দীর্ঘদিন ধরে বিজেপি করেন। টিকিট না পেলে অভিমান হতেই পারে। তা প্রশমিত করার দায়িত্ব সভাপতি হিসাবে তাঁর রয়েছে। তাই তিনি অনুরোধ করেছিলেন।
অন্য দিকে, বিক্ষুদ্ধ বিজেপি কর্মী অনিল বলেন, মানিকচক বিধানসভা ক্ষেত্রে বিজেপি-র সংগঠন তৈরি করতে দীর্ঘদিন ধরে তিনি লড়াই করছেন। এখন সংগঠন শক্তিশালী হয়েছে। আর এই সময় তৃণমূল নেতাকে দলে নিয়েই টিকিট দেওয়া ঠিক হয়নি। মালদহ জেলা পরিষদের কোটি কোটি টাকার দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত এই গৌর। তাঁকে প্রার্থী করার ফলে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। তাই বিজেপিকে বাঁচাতে গৌরকে হারাতে নির্দল প্রার্থী হিসাবে মনোনয়নজমা করেছেন। মানিকচক তৃণমূলের ব্লক সভাপতি তথা প্রার্থী সাবিত্রী মিত্র জানান, ‘‘এটি বিজেপি-র অন্দরের কোন্দল। মন্তব্য করা ঠিক নয়।’’