রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

ইভিএমের গাড়িতে বিজেপির এজেন্ট! জলপাইগুড়িতে হুলুস্থুল

April 19, 2021 | 2 min read

ভোট শেষে ইভিএম নিয়ে যাওয়ার গাড়িতে বাহিনীর সঙ্গেই বিজেপি এজেন্ট। এই অভিযোগ ঘিরে শনিবার রাত থেকেই উত্তপ্ত হয় জলপাইগুড়ি শহর। তৃণমূলের অভিযোগ, ইভিএম লুঠ করার জন্যই গেরুয়া শিবিরের তিন এজেন্ট গাড়িতে উঠে পড়েছিলেন। যদিও বিজেপির পাল্টা দাবি, এমন কোনও ঘটনাই ঘটেনি। তৃণমূল হারবে জেনে আজগুবি অভিযোগ করছে। দু’পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছে। জল গড়িয়েছে নির্বাচন কমিশন পর্যন্ত। যদিও জেলাশাসক জানিয়ে দিয়েছেন, পুলিসের প্রাথমিক তদন্তে এরকম কোনও ঘটনার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে জলপাইগুড়ি বিধানসভার রাষ্ট্রীয় বালিকা বিদ্যালয়ের এ ঘটনার রেশ ছিল রবিবারও।

তৃণমূলের (Tronamool) অভিযোগ,শনিবার ভোট শেষে ইভিএম নিয়ে যখন কেন্দ্রীয় বাহিনী ডিসিআরসির দিকে রওনা হয়, সেসময় বিজেপির চারজন এজেন্ট কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে একই গাড়িতে উঠে পড়ে। ইভিএমে গরমিল করার জন্যই ওই গাড়িতে উঠেছিলেন বিজেপির এজেন্টরা। যদিও বিজেপির পাল্টা দাবি, ভোট শেষ হওয়ার পর অশান্তি শুরু করে তৃণমূল। জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের তরফে জানানো হয়েছে, গোটা বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছে তারা। কোতোয়ালি থানাতেও অভিযোগ দায়ের করেছে। উল্টোদিকে বিজেপিও তৃণমূলের বিরুদ্ধে পুলিসের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছে।

কোতোয়ালি থানা সূত্রে খবর, শনিবার রাতে তাদের কাছে খবর আসে, জলপাইগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের গান্ধী মোড়ের কাছে একটি ভোটকেন্দ্রের সামনে জমায়েত হয়ে কিছু মানুষ বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। এরপরই সেখানে যায় বিশাল পুলিস বাহিনী। পুলিসকর্তারা আসতেই পরিস্থিতি শান্ত হয়। জলপাইগুড়ির পুলিস সুপার প্রদীপকুমার যাদবও ঘটনাস্থলে যান। পুলিস জমায়েত হওয়া লোকজনকে সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। জলপাইগুড়ি জেলা পুলিসের ডিএসপি (হেড কোয়ার্টার) সমীর পাল বলেন, অভিযোগ জমা পড়েছে। আমরা দু’পক্ষেরই অভিযোগ খতিয়ে দেখছি।

জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) জেলার যুব তৃণমূল সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায় বলেন, জলপাইগুড়ি বিধানসভার অন্তর্গত ভোটকেন্দ্র রাষ্ট্রীয় বালিকা বিদ্যালয়ের ১০৬, ১০৭, ১০৮, ১০৯—এই চারটি বুথে ভোট শেষ হওয়ার পর বিজেপির পোলিং এজেন্টরা কেন্দ্রীয় বাহিনীর গাড়িতে উঠে পড়ে। ভোট লুট হওয়ার আশঙ্কায় আমরা খবর পাওয়ামাত্র সেখানে যাই। আসলে বিজেপি ভোট লুট করতে চেয়েছিল। আমাদের কর্মীরা সতর্ক থাকায় বাধা দিয়েছেন। না হলে ওরা ইভিএমে কারসাজি করে ভোট লুট করত। জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে রাতেই আমরা এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি। গান্ধী মোড়ে আমাদের দলের লোকজন জমায়েত করে প্রতিবাদও জানান। আমাদের প্রশ্ন, ভোট শেষে কী করে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গাড়িতে বিজেপির এজেন্টরা উঠল। এটা তো বেআইনি কাজ। আমরা এর প্রতিবাদ করেছি। আমাদের অভিযোগ পুলিসের বিরুদ্ধেও। রাতে আমরা এ ব্যাপারে প্রতিবাদ জানালে পুলিস আমাদের কথায় কান না দিয়ে উল্টে আমাদের কর্মীদের উপর লাঠিচার্জ করে। তাতে আমাদের বেশ কয়েকজন মহিলা কর্মী জখম হন। আমরা বিষয়টি কোতোয়ালি থানাতেও লিখিতভাবে জানিয়েছি। শেষ পর্যন্ত পুলিস ও কমিশন কী পদক্ষেপ নেয়, সেটা আমরা লক্ষ্য রাখছি।

জলপাইগুড়ি বিধানসভা আসনের বিজেপি (BJP) প্রার্থী সৌজিৎ সিংহ বলেন, তৃণমূলের পরাজয় এবার নিশ্চিত। ওরা ভোটে হেরে গিয়েছে। তাই ইচ্ছাকৃতভাবে রাতে অশান্তি শুরু করে ওদের দলের লোকজন। আমাদের এক মহিলাকর্মীকে ওরা হেনস্তা করে। আমাদের এক কর্মী ঘটনার ভিডিও করতে গেলে তাঁর মোবাইল ফোন তৃণমূলের ছেলেরা কেড়ে নেয়। আমরা এ ব্যাপারে কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি। দেখি, পুলিস এখন কী পদক্ষেপ করে।

জেলা নির্বাচনী আধিকারিক তথা জলপাইগুড়ির জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু বলেন, কেন্দ্রীয় বাহিনীর গাড়িতে পোলিং এজেন্ট থাকার যে অভিযোগ এসেছিল, সেটা পুলিস প্রাথমিকভাবে তদন্ত করে দেখেছে। তবে ওই অভিযোগ ভিত্তিহীন।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#bjp, #West Bengal Assembly Elections 2021

আরো দেখুন