রাজ্যের বরাতে আজ আসছে ভ্যাকসিন
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিশ্রুতিমতো ৫ মে থেকে রাজ্যে শুরু হচ্ছে ১৮-৪৪ বছর বয়সিদের বিনামূল্যে টিকাকরণ। প্রথমদিন রাজ্যজুড়ে কয়েকটি কেন্দ্রে শুরু হবে ওই বয়সিদের টিকাদান। তারপর টিকা যেমন আসবে, কর্মসূচি ছড়িয়ে দেওয়া হবে আরও বেশি কেন্দ্রে। এই কর্মসূচি রূপায়ণের জন্য রাজ্য ভারত বায়োটেক এবং সিরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে প্রাথমিকভাবে কিনতে চলেছে ১৪ লক্ষ টিকা। এর মধ্যে সাড়ে ১০ লক্ষ কোভিশিল্ড এবং সাড়ে তিন লক্ষ কোভ্যাকসিন রয়েছে। কোভিশিল্ড পেতে তৃতীয় সপ্তাহ হতে পারে বলে জানা গিয়েছে। তবে কোভ্যাকসিনের কিছুটা আজ, মঙ্গলবার চলে আসছে রাজ্যে। সোমবার সন্ধ্যায় স্বাস্থ্যদপ্তরের এক পদস্থ কর্তা এ খবর জানিয়েছে। সূত্রের খবর, সাধারণ মানুষকে বিনামূল্যে টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছেন। সেইমতো রাজ্যের তরফে টিকার দাম মেটানোর সরকারি প্রক্রিয়া চলে রাত পর্যন্ত। বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল তাদের কত টিকা লাগতে পারে, সেই হিসেব সরকারকে জানিয়েছে। এদিকে কেন্দ্রের তরফে টিকার সরবরাহ পর্যাপ্ত না হওয়ায় ৪৫ ঊর্ধ্বদের টিকাকারণ এদিনও চাহিদামতো হয়নি।
দু’লক্ষাধিক টিকাদান চললেও তার মধ্যে মাত্র ১০ শতাংশই ছিল প্রথম ডোজ। তাও তা সাধারণ মানুষ পায়নি। পূর্ব ঘোষণামতো পেয়েছেন প্রথম সারির করোনা-যোদ্ধা এবং স্বাস্থ্যকর্মী-চিকিৎসকরা। দ্বিতীয় ডোজের টিকাদানের ক্ষেত্রে রাজ্যজুড়ে বহু কেন্দ্রে লম্বা লাইনে থাকা শয়ে শয়ে লোকজনের বড় অংশই শেষ পর্যন্ত টিকা পাননি। বিভিন্ন জেলা থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী, রাজ্য সরকার করোনা পরিস্থিতিতে দ্রুত বেড়ে চলা অক্সিজেনের চাহিদা মেটাতে ১০টি জরুরি ব্যবস্থা নিয়েছে। অক্সিজেন প্লান্ট, সেন্ট্রাল অক্সিজেন পাইপলাইন করা ইত্যাদি কাজেই তারা নিজেদের সীমাবদ্ধ রাখছে না। প্রায় ছ’হাজার করে ডি টাইপ জাম্বো ও বি টাইপ মিলিয়ে মোট ১২ হাজার অক্সিজেন সিলিন্ডার কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়া দু’হাজার অক্সিজেন কনসেনট্রেটার কেনা হচ্ছে এবং ২০ হাজার বাণিজ্যিক সিলিন্ডারকে রোগীদের প্রয়োজনে ব্যবহারের কাজে রূপান্তরিত করা হচ্ছে। প্রস্তাবিত ৫৫টি অক্সিজেন প্লান্টের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে ১৫ মে’র মধ্যে। জুন মাসের মধ্যে এইসব জায়গা থেকে অক্সিজেন সরবরাহ শুরু হয়ে যাবে। ২০ মে’র মধ্যে ৪১টি সরকারি হাসপাতালে অক্সিজেন পাইপলাইনও বসে যাচ্ছে।
স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১৭ হাজার ৫০১ জন রোগী করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গিয়েছেন ৯৮ জন। ‘আংশিক লকডাউন’-এর জন্য কিছুটা হলেও সংক্রমণে বেড়ি পড়ানো গিয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসতে আরও কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হবে। এদিকে করোনা পরিস্থিতিতে আশঙ্কাজনক রোগীদের পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে রাজ্য অস্থায়ীভাবে দু’মাসের জন্য ৩৮৫ জন ক্রিটিক্যাল কেয়ার টেকনিশিয়ান নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এদিকে নিট পিজি পরীক্ষা চার মাসের জন্য পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর।