খুব শীঘ্রই রাজ্যে চালু হচ্ছে ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্প
কৃষকবন্ধু প্রকল্পের ভাতা বাড়ানোর পর বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ীই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ বার দুঃস্থ পরিবারের মহিলাদের আর্থিক সাহায্যে ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ প্রকল্প রূপায়ণে তৎপর হয়েছেন। কিছু দিন আগেই রাজ্য মন্ত্রিসভা ওই প্রকল্পকে অনুমোদন করেছে। নবান্ন সূত্রের খবর, ‘কন্যাশ্রী’র মতো ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ প্রকল্পের দায়িত্ব মুখ্যমন্ত্রী নারী ও সমাজ কল্যাণ দপ্তরকেই দিয়েছেন। প্রাথমিক ভাবে স্থির হয়েছে, বছরে এই প্রকল্পের জন্য প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে।
প্রাথমিক ভাবে অর্থ দপ্তর থেকে এই প্রকল্পের একটা অংশ বরাদ্দ করা হচ্ছে। এতে লাভ হবে ১ কোটি ৬০ লক্ষ পরিবারের মহিলাদের। প্রতিটি পরিবারের এক জন মহিলা এই প্রকল্পে সুবিধে পাবেন। সাধারণ পরিবার হলে মাসে মিলবে ৫০০ টাকা। তফসিলি জাতি বা উপজাতি পরিবার হলে মাসে এক হাজার টাকা পাওয়া যাবে।
নারী ও সমাজ কল্যাণ দপ্তর ইতিমধ্যেই এই মহিলাদের তথ্যভাণ্ডার তৈরির কাজ প্রায় চূডান্ত করে ফেলেছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জুলাই মাসেই মুখ্যমন্ত্রী এই নয়া প্রকল্প চালু করে দিতে চান।
ইতিমধ্যেই নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, সাহায্যের পরিমাণ দ্বিগুণ করে মুখ্যমন্ত্রী নয়া কৃষকবন্ধু প্রকল্প চালু করেছেন। সেই জন্য প্রথম দফায় ১০ কোটি ৪৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে অর্থ দপ্তর। সব চেয়ে বেশি বরাদ্দ পেয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা। ৮৫ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। এর পর মুর্শিদাবাদ জেলা পেয়েছে ৭৫ লক্ষ টাকা। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পেয়েছে ৬১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। মুখ্যমন্ত্রী ভোটের প্রচারে দেওয়া তাঁর দশ অঙ্গীকারকেই ধাপে ধাপে রূপায়ণ করতে চান। দুয়ারে রেশন কার্ড প্রকল্প রূপায়ণের আগে ভুয়ো কার্ড ঝাড়াই-বাছাইয়ের কাজ চলছে। স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ড রূপায়ণ কী মডেলে হবে, তা নিয়েও আলোচনা চলছে।
নতুন মন্ত্রিসভার তৃতীয় বৈঠকেই মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ ছাড়পত্র পেয়েছিল। কিন্তু কোন পরিবারের মহিলারা এর সুবিধে পাবেন? প্রশাসনিক নিরিখে সেই সব পরিবারের অর্থনৈতিক মাপকাঠি কী হবে, তার রূপরেখা তৈরি করতে মুখ্যমন্ত্রী একটি টাস্ক ফোর্স গঠন করে দেন মুখ্যসচিবের নেতত্বে। টাস্ক ফোর্স এই প্রকল্পের তথ্যভাণ্ডার তৈরির জন্য নারী কল্যাণ দপ্তরকে দায়িত্ব দিয়েছে।
নবান্ন সূত্রের খবর, রাজ্যে প্রায় ৫৬ লক্ষ বিপিএল পরিবার রয়েছে। এই বিপিএল পরিবারের বহু মানুষ রাজ্য সরকারের বিধবা ভাতা, বার্ধক্য ভাতা ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ভাতার সুবিধে পান। ওই তালিকায় তফসিলি জাতি, উপজাতি ও ওবিসি পরিবারের মানুষ রয়েছেন। আবার বিপিএল তালিকাভুক্ত নন অথচ দুঃস্থ পরিবারের সদস্য, এমন বহু মহিলা এই সব ভাতার সুবিধে যেমন পান, অনেকে আবার পান না। রাজ্য সরকার সমস্ত দুঃস্থ পরিবারের কথা মাথায় রেখেই আর্থিক সাহায্য দিতে চাইছে। মুখ্যমন্ত্রী সেই সহায়তা সরাসরি বাড়ির মহিলাদের হাতে তুলে দিতে চান।