কোচবিহারে তৃণমূলের মহিলা নেত্রীর ওপর হামলা বিজেপির
কোচবিহার (Cooch Behar) জেলা মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী সুচিস্মিতা দত্তশর্মা (Suchismita Datta Sharma) আহত হয়ে কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁরা মাথায় ও হাতে আঘাত লেগেছে। বিজেপি (BJP) আশ্রিত দুষ্কৃতীদের হামলায় সুচিস্মিতাদেবী জখম হয়েছেন বলে তৃণমূলের দাবি। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার সকালে কোচবিহারের পানিশালা গ্রাম পঞ্চায়েতের পানিগ্রামে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। তৃণমূলের দাবি, বুধবার রাত থেকেই ওই এলাকায় বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা বেশ কয়েকজন তৃণমূল (TMC) সমর্থকের বাড়ি ভাঙচুর করে। এলাকায় বোমাবাজি করে ওরা। এদিন সকালে সেই ঘটনা দেখতে এলাকায় গেলে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের মারধর করা হয়। সেসময় সুচিস্মিতাদেবীও আক্রান্ত হন। তাঁকে হাসপাতালে দেখতে আসে জেলা তৃণমূলের বিভিন্ন স্তরের নেতৃত্ব। বিজেপির জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা রায়ও মেডিক্যালে এসে সুচিস্মিতাদেবীকে দেখে যান।
এদিকে, ঘটনার প্রতিবাদে ঘুঘুমারিতে রাস্তা অবরোধ করেন তৃণমূল সমর্থকরা। কোচবিহার-দিনহাটা রোড অবরুদ্ধ হয়ে যায়। পরে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। পুলিস মারধরের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
সুচিস্মিতা দেবশর্মা সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ২১ জুলাই উপলক্ষে অন্যান্য জায়গার মতো বুধবার পানিশালার পানিগ্রাম বুথেও দলীয় কর্মসূচি পালিত হয়। ২০১৯ সালের পর থেকে সেখানে বিজেপির তাণ্ডবে তৃণমূল কর্মীরা কোনও কর্মসূচি করতে পারছেন না। এবারও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃতীয়বারের সরকার গঠন হয়েছে। ২১ জুলাই দলের কর্মীরা সেখানে কর্মসূচি পালন করেছেন। ওই এলাকা থেকে আমার বাড়ি এক-দেড় কিমি। বুধবার রাতে সেখান থেকে সারারাত বোমা ফাটার আওয়াজ পেয়েছি। আমাদের কর্মীদের বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। এদিন সকালে আমি সেখানে যাই। আমাদের এক কর্মীকে বিজেপি অর্তকিতে আক্রমণ করে। আমি থামাতে গেলে আমার মাথায় ও হাতে আঘাত লাগে। আমাদের আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন। আমি পুলিসকে বলব ওদের গ্রেপ্তার করতে। জেলা তৃণমূলের সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, বুধবার রাতে পানিগ্রামে আমাদের সমর্থকদের বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। সেটা দেখতে সকালে দলের মহিলা শাখার সভানেত্রী সেখানে যান। তাঁর উপর এক বিজেপি কর্মীর নেতৃত্বে হামলা হয়। ওই ঘটনার প্রতিবাদে দলের কর্মীরা ঘুঘুমারিতে রাস্তা অবরোধ করেন।
তৃণমূলের রাজ্য সহ সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, এলাকায় শহিদ দিবস পালন হয়। কিন্তু আমাদের ফ্ল্যাগ, ফেস্টুন খুলে ফেলে হয়, ছিঁড়ে দেওয়া হয়। আমাদের কর্মীরা এর প্রতিবাদ করেন। এরপর বিজেপির কিছু লোক আমাদের কর্মীদের মারধর করে। এসব শুনে সুচিস্মিতাদেবী সেখানে যান। তাঁর মাথায় আঘাত করা হলে তিনি আহত হন।
বিজেপির জেলা সভানেত্রী বলেন, ওই জায়গায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরমে। রাতে আমাদের কিছু কর্মীর বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়। ওরা নিজেদের সমর্থকের বাড়িও ভাঙচুর করেছে। কারণ তাহলে আর নিজেদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসবে না। এদিন সকালে আমাদের এক কর্মীকে ওই এলাকায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা মারছিল। আমার কাছে খবর, ওদের গোষ্ঠীকোন্দলের জেরেই সুচিস্মিতাদেবী আহত হন। বিজেপির কেউ এর সঙ্গে জড়িত নয়। বিজেপির নির্দোষ কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।