বাড়িতে গিয়ে অন্তঃসত্ত্বাদের লক্ষ্মী ভাণ্ডারের রেজিস্ট্রেশন করছে প্রশাসন
দুয়ারে সরকারের ক্যাম্পে হাজার মানুষের ভিড়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি খণ্ডঘোষের ইন্দুতি অঞ্চলের বেশ কয়েকজন মহিলার। কারণ তাঁরা প্রত্যেকেই অন্তঃসত্ত্বা। দু’বার ওই অঞ্চলে দুয়ারে সরকারের শিবির হলেও সেখানে যাওয়ার ঝুঁকি নেননি তাঁরা। তাই তাঁদের জন্য এবার সরকার পৌঁছে যাচ্ছে বাড়ির অন্দরমহলে। সেখানেই তৎক্ষণাৎ হয়ে যাবে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের রেজিস্ট্রেশন। আজ শুক্রবার খণ্ডঘোষ ব্লকে পরীক্ষামূলকভাবে এই উদ্যোগ শুরু হবে। বিডিওর উদ্যোগে পাঁচ অন্তঃসত্ত্বার বাড়িতে গিয়ে প্রশাসনের মহিলা আধিকারিকরা লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের আবেদন পূরণ করবেন। তাঁদের আবেদন খতিয়ে দেখে রেজিস্ট্রেশন নম্বরও দিয়ে আসবেন তাঁরা। খণ্ডঘোষ ব্লকের অভিনব এই উদ্যোগ আগামী দিনে জেলার সর্বত্রই করার চিন্তাভাবনা করছে জেলা প্রশাসন।
বর্ধমান(দক্ষিণ) মহকুমা শাসক কৃষ্ণেন্দুকুমার মণ্ডল বলেন, খণ্ডঘোষ ব্লকে যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তা খুবই প্রশংসনীয়। আগামীতে আমরা অন্যান্য ব্লকেও একইভাবে অন্তঃসত্ত্বাদের জন্য এই ব্যবস্থা করতে পারি। যদি একটি এলাকায় এভাবে অন্তঃসত্ত্বাদের চিহ্নিত করে বাড়িতে পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া যায়, সেই ভাবনাও চলছে।
১৬আগস্ট থেকে দ্বিতীয় দফায় দুয়ারে সরকার শুরু হওয়ার পর এই জেলায় বিভিন্ন প্রকল্পে প্রায় সাড়ে ১৪লক্ষ আবেদন জমা পড়েছে। তবে আবেদনের সংখ্যার নিরিখে দুয়ারে সরকারের প্রধান ইউএসপি লক্ষ্মীর ভাণ্ডার। তাতেই নাম লেখানোর উৎসাহ নিয়ে ভিড় বাড়ছে ঘরের মহিলাদের। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে প্রায় ১০লক্ষ মহিলা লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে আবেদন করার জন্য দুয়ারে সরকারের ক্যাম্পে হাজির হয়েছেন। শুধু এই প্রকল্পেই দৈনিক প্রায় ৬৫ থেকে ৭০ হাজার আবেদন জমা পড়ছে জেলায়। বুধবার পর্যন্ত মোট সাড়ে আট লক্ষ আবেদন জমা পড়েছে। চলতি সপ্তাহের মধ্যেই সেই আবেদনের সংখ্যা ১০লক্ষ ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করছেন জেলা প্রশাসনের অধিকারিকরা।
বিডিও সত্যজিৎ কুমার বলেন, ইন্দুতি এলাকায় দুবার ক্যাম্প করা হয়েছে। তারপরেও বেশ কিছু মহিলার আবেদন লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে জমা পড়েনি। আমরা খবর পেলাম গ্রামের আটজন মহিলা অন্তঃসত্ত্বা। আশাকর্মীরা খবর নিয়ে দেখেছেন ও তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছেন। কাগজপত্র ও অন্যান্য সমস্যার জন্য তিনজনের আবেদন এখনই করা যাবে না। বাকি পাঁচজনের আবেদন এবং রেজিস্ট্রেশনের কাজ শুক্রবারই ওঁদের বাড়িতে গিয়ে করে দেওয়া হবে ।
বিডিওর এই উদ্যোগে খুশি আবেদনকারী মহিলারাও। ইন্দুতির নমঃশূদ্র পাড়ার বাসিন্দা মৌসুমি মালিক বলেন, এখন এই অবস্থায় বাড়ির বাইরে খুব একটা বেরনো যাচ্ছে না। সরকার যে আমাদের জন্য এতটা ভেবেছে তারজন্য খুবই ভালো লাগছে।