পুজোয় কোভিডবিধি মানা হচ্ছে তো? মণ্ডপে মণ্ডপে ঘুরে দেখবেন ডাক্তাররা
মাস্ক না পরলে মণ্ডপের চৌহদ্দিতে আসা বারণ। স্রেফ কথার কথা নয়, কাজেও কারা কারা এর প্রমাণ রাখছেন। তা দেখতে আসরে নামছেন চিকিৎসকরাই। শহরের প্রখ্যাত চিকিৎসকরা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ঘুরবেন শহরের নামকরা পুজোগুলি। তৃতীয়া, চতুর্থীতে সমস্ত পুজো (Durga Puja 2021) সরেজমিনে দেখে পঞ্চমীর সকালে জানাবেন, কোন কোন পুজো দেখতে যাওয়ায় ভয় নেই। গত মাসে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ জানিয়েছেন, ‘অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা দেখেছি যে প্রতিটি উৎসবের মরশুমের পর সংক্রমণ বেড়ে যায়।’ সে বার্তাকে হাল্কাভাবে নিতে রাজি নন চিকিৎসকরা।
জনস্বাস্থ্য আধিকারিক অনির্বাণ দলুই জানিয়েছেন, পুজো মণ্ডপে শারীরিক দুরত্ব মানা হচ্ছে কি না, পর্যাপ্ত স্যানিটাইজার রয়েছে কি না সবকিছুই খতিয়ে দেখা হবে। যে পুজোগুলি সঠিকভাবে কোভিড প্রোটোকল মানছে আমরা তাঁদের নাম ঘোষণা করব। যাঁরা কোভিড প্রোটোকল মানছে, তাঁদের ‘কোভিডজয়ী শারদ সম্মান’ পুরস্কার দেওয়া হবে। নির্ভয়ে সে সমস্ত পুজো দেখতে পারবেন আমজনতা।
আপাতত ঠিক হয়েছে ২০ জন চিকিৎসক চষে ফেলবে শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণ। পাঁচজন করে চিকিৎসকদের টিম শহরের উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব, পশ্চিমের বড় বড় পুজোগুলি ঘুরে দেখবেন। চিকিৎসকদের ওই দলে রয়েছেন জনস্বাস্থ্য আধিকারিক অনির্বাণ দলুই, অ্যাপোলো হাসাপাতালের ইএনটি বিশেষজ্ঞ ডা. অভীক ঘোষ, শুদ্ধসত্ত্ব চট্টোপাধ্যায়, আমরি হাসপাতালের ডা. রাজর্ষী দত্ত, জিডি হাসপাতালের ডা. সোমনাথ ভড়, আইএলএস হাসপাতালের ডা. মৈনাক গুপ্ত, ফর্টিস হাসপাতালের ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিট বিশেষজ্ঞ ডা. স্বর্ণপালী মাইতি প্রমুখ। এরা সকলেই প্রোটেক্ট দ্য ওয়ারিয়র্স চিকিৎসক সংগঠনের সদস্য।
এখনও বিদায় নেয়নি করোনা। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৭৪৮ জন। এর মধ্যে আশঙ্কা রয়েছে তৃতীয় ঢেউয়ের। পুজোয় করোনা সংক্রমণ রুখতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা নিয়ে রাজ্য সরকারের তরফে এখনও স্পষ্টভাবে কিছু জানানো হয়নি। পুজো উদ্যোক্তাদের একাংশ জানিয়েছেন, এখনও নবান্ন থেকে কোনও নির্দেশিকা দেওয়া হয়নি। তবে সূত্রের খবর, করোনা সংক্রান্ত বিধি নির্ধারণের জন্য গ্লোবাল অ্যাডভাইজরি বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা করতে পারে রাজ্য। যদিও বিষয়টিকে হাল্কাভাবে দেখতে রাজি নয় চিকিৎসকরা। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে করোনার তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। সেই পরিস্থিতিতে পুজোর সময় ভিড় নিয়ন্ত্রণের উপর বাড়তি জোর দিতে হবে। সেই কাজটা করা না গেলে পুজোর পর সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে বেড়ে যাবে। সেদিকে নজর রাখতেই কলেজ স্কোয়ার, সন্তোষপুর লেকপল্লি, চেতলা অগ্রণী, সুরুচি সঙ্ঘ, শ্রীভূমি স্পোর্টিং ঘুরবেন চিকিৎসকরা।