যোগী রাজ্যে তুলকালাম, লখিমপুর খেরি যাওয়ার পথে আটকে দেওয়া হল প্রিয়াঙ্কা-অখিলেশকে
কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর ছেলের গাড়ির ধাক্কায় আন্দোলনরত কৃষকেদের মৃত্যুর ঘটনায় উত্তাল যোগীরাজ্য। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্র ও তাঁর ছেলে আশিস মিশ্রের বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে অভিযোগ। যদিও ছেলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তাঁর দাবি, ঘটনার সময় সেখানে না কি উপস্থিতই ছিলেন না তাঁর ছেলে। গোটা বিষয়টিকে কৃষকদের ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেছেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে বিরোধীরা চাপ ক্রমশই বাড়াচ্ছেন। এদিনই লখিমপুর যাওয়ার কথা রয়েছে অখিলেশ যাদবের। কিন্তু সকালেই তাঁর বাড়ির সামনে হাজির হয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। অখিলেশকে লখিমপুর যেতে নিষেধ করা হয়। এর আগেই অবশ্য প্রিয়াঙ্কা গান্ধিকে লখিমপুর যাওয়ার পথে আটকায় পুলিশ। তাঁকে আটকও করা হয়।
প্রিয়াঙ্কাকে আটক করার প্রসঙ্গে ট্যুইট করেছেন রাহুল গান্ধি। লিখেছেন, ‘প্রিয়াঙ্কা, আমি জানি তুমি পিছনে হটবে না। তোমার সাহসের কাছে ওরা ভয় পেয়ে যাবে। ন্য়ায়ের এই অহিংস লড়াইতে আমরা দেশের অন্নদাতাদের জিতিয়েই ছাড়ব।’ প্রিয়াঙ্কা নিজেও অভিযোগ করেছেন, তাঁকে অন্যায়ভাবে আটকানো হয়েছে। কোনও নিয়ম ছাড়াই গণতান্ত্রিক দেশে এভাবে আটকানো যায় না।
এদিকে, সোমবার সকালে উত্তরপ্রদেশে লখিমপুর খেড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ দোলা সেন। বিমানবন্দরে দোলা সেন, জানান দলের পক্ষ থেকে ৫ জনের প্রতিনিধি দল উত্তরপ্রদেশ যাচ্ছে।সেই দলে দোলা সেন ছাড়াও থাকছেন কাকলি ঘোষ দস্তিদার, প্রতিমা মণ্ডল, আবির রঞ্জন বিশ্বাস এবং সুস্মিতা দেব। দোলা আরও বলেন, ”লখিমপুরের খেড়িতে কৃষক পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছি। নৈরাজ্য চলছে উত্তরপ্রদেশে। যেভাবে দেশ জুড়ে মানুষের উপর অত্যাচার চলছে, কৃষকদের ওপর গাড়ি চালিয়ে দেওয়া হল,মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এবার আমরা ঘটনাস্থলে যাচ্ছি।” যদিও এদিনই যেভাবে অখিলেশ যাদবকে লখিমপুর যেতে আটকানো হয়েছে, তাতে দোলারা সেখানে কতটা যেতে দেওয়া হবে, তা নিয়ে আশঙ্কা থাকছেই।
এ প্রসঙ্গে বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ পাল্টা তৃণমূলকে কটাক্ষ করে বলেন, ”যাদের পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্ব রয়েছে, তারা পশ্চিমবঙ্গের কোথাও যায় না। যেখানে পাড়ায় গুলি-বোমা পড়ে, সেখানে রেখে যায় না। এরা সব ত্রিপুরা আসাম উত্তরপ্রদেশ ঘুরে বেড়ায়। স্বপ্ন দেখুন,যাদের পশ্চিমবঙ্গের বাইরে একটা পঞ্চায়েতও নেই, সেই নেতারা উত্তরপ্রদেশ দখল করতে যাচ্ছে।’ দিলীপের দাবি, ”ওখানে কন্ট্রোভার্সিয়াল ব্যাপার হয়েছে। ওখানকার লোকেরা বলতে পারবেন, কী হয়েছে। যেভাবে জিনিসটাকে দেখানো হচ্ছে, সত্যকে ঠিক সামনে আনা হচ্ছে না।”
এদিকে, উত্তরপ্রদেশের লখিমপুরের খেরিতে রবিবারের অশান্তির ঘটনায় আরও একজনের মৃত্যু হল। সোমবার সকালে হাসপাতালে মৃত্যু হল এক আহত সাংবাদিকের। রবিবারের ঘটনায় রমন কাশ্যপ নামে ওই সাংবাদিক আহত হয়েছিলেন। ফলে লখিমপুরের খেরিতে অশান্তির জেরে মোট মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৯।