আর গোটা এলাকা নয়, কন্টেইনমেন্ট জোন করা হবে শুধু বাড়ির চত্বর
গত কয়েকদিনে কলকাতা পুর এলাকায় কন্টেইনমেন্ট জোনের সংখ্যা ব্যাপক হারে বেড়েছে। বর্তমানে কলকাতা পুলিস ও স্বাস্থ্য দপ্তরের তালিকা অনুযায়ী, ১৪৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১১৩টি ওয়ার্ডই কন্টেইনমেন্ট জোনের মধ্যে পড়েছে। স্বভাবতই সংক্রামিত জোনের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় লকডাউন পরিস্থিতিতে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। এই অবস্থায় নিয়মের বিধিনিষেধ কিছুটা আলগা করার সিদ্ধান্ত নিল কলকাতা পুরসভা। বুধবার কলকাতা পুরভবনে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, কেউ করোনা পজিটিভ হলে এখন আর সংশ্লিষ্ট এলাকা কন্টেইনমেন্ট করা হবে না। বরং কন্টেইনমেন্ট হবে সংশ্লিষ্ট বাড়ি এবং সেই বাড়ির প্যাসেজ। অর্থাৎ একজন আক্রান্ত হলে গোটা এলাকা আর আটকে রাখা হবে না।
সন্ধ্যায় কলকাতা পুরসভার প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম বলেন, গোটা এলাকা কন্টেইনমেন্ট হলে সাধারণ মানুষের খুবই অসুবিধা হচ্ছে। এব্যাপারে আমি কলকাতার পুলিস কমিশনার অনুজ শর্মার সঙ্গেও কথা বলেছি। এরপরেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, বুধবার লালবাজারে শহরের কন্টেইনমেন্ট জোনের নয়া তালিকা তৈরির প্রসঙ্গে পুলিস কমিশনারের উপস্থিতিতে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়। যেখানে পুলিস ও পুরসভার একাধিক কর্তা উপস্থিত ছিলেন। কী পদ্ধতিতে কলকাতার রেড জোনকে তিনটি ভাগ করা হবে এবং গ্রিন-অরেঞ্জ জোনে কোন কোন এলাকাকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে, সেব্যাপারে আলোচনা হয়। সরকারি সূত্রে খবর, আগে যে পদ্ধতিতে শহরকে কন্টেইনমেন্ট জোনে ভাগ করা হয়েছে, তার বদলে, নয়া তালিকা তৈরিতে অন্য পদ্ধতি অবলম্বন করা হবে।
এদিকে এই পরিস্থিতির মধ্যেই আজ, বৃহস্পতিবার রাজ্যের সব পুরসভার চেয়ারম্যানের সঙ্গে আজ, বৃহস্পতিবার বৈঠক করবেন প্রশাসক তথা পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বর্তমানে পুরসভার কী ভূমিকা, তা ব্যাখ্যা করবেন মন্ত্রী।
পুর কর্তাদের কথায়, লকডাউনের জেরে টানা দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে গোটা শহর স্তব্ধ হয়ে রয়েছে। এই অবস্থায় গোটা এলাকা কন্টেইনমেন্ট করে রাখায় সঙ্কট আরও তীব্র হয়েছে। এক্ষেত্রে পুর প্রশাসনের পক্ষেও পরিষেবা দেওয়া সমস্যার হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সেকারণেই প্রশাসন এই সিদ্ধান্ত নিল।
এদিকে, সোয়াব টেস্ট বা লালারসের নমুনা পরীক্ষার কাজে আরও গতি আনতে চাইছে কলকাতা পুরসভা। সেক্ষেত্রে শহর কলকাতায় পথে নামছে আরও ১৪টি মোবাইল ভ্যান বা অ্যাম্বুলেন্স। বর্তমানে এমন ছ’টি মোবাইল ভ্যান কাজ করছে। সেক্ষেত্রে, নতুন করে আরও অ্যাম্বুলেন্স কাজ শুরু করলে প্রতিদিন প্রায় হাজারের কাছাকাছি নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব হবে। বর্তমানে এই সংখ্যা মাত্র ৩০০। ইতিমধ্যেই প্রায় দেড় হাজারের বেশি লোকের লালারসের নমুনা সংগ্রহ হয়েছে।