অরুণাচল থেকে গুজরাতে পাচার হচ্ছে হাতি! রুখলেন বাংলার বনকর্মীরা
একেবারে পূর্ব থেকে পশ্চিম! সীমান্তবর্তী অরুণাচল প্রদেশ থেকে ট্রাকে করে দুটি হাতিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল গুজরাটে। অবৈধভাবেই হাতি দুটিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ। কিন্তু রাজ্য বন দপ্তরের তৎপরতায় পশ্চিমবঙ্গের সীমানা পেরোতে পারল না। জলপাইগুড়ি-তিস্তা সেতু সংলগ্ন বন দপ্তরের চেকপোস্টে হাতি দুটিকে আটকে দেন বন দপ্তরের আধিকারিকেরা।
জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত বিভাগীয় বনাধিকারিক রাহুলদেব মুখোপাধ্যায় জানান, রবিবার রাতে তিস্তা সেতু সংলগ্ন চেকপোস্ট থেকেই দুটি হাতিকে আটক করা হয়েছে। হাতি দুটির মধ্যে একটি পূর্ণবয়স্ক মা ও একটি সন্তান রয়েছে। একটি ট্রাকে করে তাদের অরুণাচল প্রদেশ থেকে গুজরাটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। কিন্তু হাতিদের ভিন রাজ্যে নিয়ে যাওয়ার বৈধ কাগজপত্র পাওয়া যায়নি। ওই হাতি দুটির সঙ্গে থাকা মাহুত ও ট্রাক ড্রাইভারকে আটক করা হয়েছে। রাতেই হাতি দুটিকে গরুমারা জাতীয় উদ্যানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। মাহুত ও ট্রাক চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এবং তাঁদের সঙ্গে থাকা কাগজপত্র খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, অরুণাচল প্রদেশ থেকে একটি মা ও একটি সন্তান হাতিকে গুজরাটের এক মন্দিরে দান করে দেওয়ার উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তবে হাতিগুলি নিয়ে যাওয়ার কোনও বৈধ কাগজপত্র নেই। অসম বনবিভাগের আধিকারিকরা এই হাতিবোঝাই ট্রাকটিকে ওই রাজ্যের বিভিন্ন চেকপোস্টে আটকানোর চেষ্টা করলেও আটকাতে পারেননি। বাধ্য হয়ে তাঁরা পশ্চিমবঙ্গ বনবিভাগের আধিকারিকদের খবর দেন। তারপর অসম বনাধিকারিকদের থেকে খবর পেয়ে জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত বিভাগীয় বনাধিকারিক রাহুল দেব মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বনকর্মীরা রবিবার রাতে রাস্তায় নামেন। জলপাইগুড়ির তিস্তা ফরেস্ট চেকপোস্টে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করার পর রাত প্রায় সাড়ে ১১টা নাগাদ দুটি হাতি সহ ট্রাকটিকে আটক করেন তাঁরা৷ তারপর রাতেই হাতি দুটিকে গরুমারা জাতীয় উদ্যানে নিয়ে যাওয়া হয়। পাশাপাশি ওই ট্রাকের চালক এবং হাতিগুলির সঙ্গে থাকা মাহুতকে আটক করা হয়। হাতিগুলিকে এভাবে এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে নিয়ে যাওয়ার জন্য যে সকল অনুমতি প্রয়োজন, সেই কাগজপত্র খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বনাধিকারিকরা।
হাতি দুটির সঙ্গে থাকা ওই মাহুত জানান, তাঁর নাম পিল্লাই। তাঁর দাবি করেন, হাতি দুটিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য অরুণাচল বনবিভাগের সমস্ত কাগজ তাঁরা নিয়ে এসেছেন। তবু তাঁদের কেন আটকানো হল তা তিনি বুঝতে পারছেন না।