কলকাতা পুরসভা সংলগ্ন রাস্তা যানজট মুক্ত করতে উদ্যোগ
কলকাতা পুরভবনে যেতে হলে অসংখ্য গাড়িকে পাশ কাটিয়ে ঢুকতে হয়। এই ভবনকে তিনদিক থেকে ঘিরে রেখেছে গাড়ি-বাইকের সারি। একদিকে চারচাকার গাড়ির লম্বা লাইন, অন্যদিকে বাইকের সারি। তার উপর রাস্তা জুড়ে হকারদের হাঁক-ডাক। সব মিলিয়ে পুরভবনের সামনের রাস্তা দিয়ে হাঁটাচলা করাই দায়। এই পার্কিং লট বহুদিনের। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এই লটেই দাঁড়িয়ে থাকে শ’য়ে শ’য়ে গাড়ি।
এই চেহারার বদল ঘটতে চলেছে। জানা গিয়েছে, পুরসভা লাগোয়া পুবদিকের রাস্তায় তৈরি হবে আধুনিক বহুতল পার্কিং প্লাজা। এমনই পরিকল্পনা করেছে পুর কর্তৃপক্ষ। নীচের রাস্তা থাকবে সাফ-সুতরো। যাতে সহজেই বিনা বাধায় ছুটে যেতে পারে গাড়ি, বাইক। পথচারীরাও বাঁচবেন হাঁফ ছেড়ে।
তবে শুধু পুরসভা সংলগ্ন এলাকা নয়, শহরের আরও পাঁচটি জায়গায় এমন বহুতল পার্কিং প্লাজা তৈরির প্রস্তাব গ্রহণ করেছে পুর কর্তৃপক্ষ। শুরু হয়েছে টেন্ডার প্রক্রিয়া। শহরকে গতিময় করে তোলার লক্ষ্য নিয়েই এই পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। মূলত শহরের ঘিঞ্জি রাস্তায় পার্কিং তুলে দিতে চাইছে পুরসভা। কলকাতা পুলিসকে সঙ্গে নিয়ে সেই সব জায়গা পরিদর্শন করেছেন পুরসভার পার্কিং বিভাগের আধিকারিকরা। কোথায়, কীভাবে কাজ হবে, তার জন্য তৈরি হয়েছে বিস্তারিত রিপোর্ট।
হাওড়া ব্রিজ লাগোয়া মল্লিকঘাট ফুলবাজার সব সময় সরগরম। অথচ এখানে গাড়ি রাখার তেমন কোনও জায়গা নেই। স্ট্র্যান্ড রোডে বন্দরের একটি জমি রয়েছে। সেখানে আগে গুদাম ছিল। আগুনে অবশ্য সেটি ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি স্ট্র্যান্ড ব্যাঙ্ক রোডে পূর্তদপ্তরেরও একটি বড় জমি রয়েছে। সেই জমিও পরিদর্শন করেছেন আধিকারিকরা। পাশাপাশি বড়বাজার, পোদ্দার কোর্ট এবং দক্ষিণে যাদবপুর ৮বি বাস স্ট্যান্ডে বহুতল পার্কিং লট করা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখছেন আধিকারিকরা।
সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হল, পুরসভার কেন্দ্রীয় ভবন লাগোয়া রাস্তায় পার্কিং প্লাজা তৈরির বিষয়টি। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের দিয়ে সমীক্ষা করানো হয়েছে। ঠিক হয়েছে, হেরিটেজ ভবনের কোনও ক্ষতি না করে এই পার্কিং লট বানানো হবে। এই পার্কিং লট হবে ইস্পাতের। একইভাবে যাদবপুরেও ইস্পাতের কাঠামোর উপর গড়ে উঠবে পার্কিং লট। বাকি জায়গায় অবশ্য গাড়ি রাখার জন্য গড়া হবে বিল্ডিং।
এক বিভাগীয় কর্তা বলেন, বন্দর এবং পূর্তদপ্তরকে চিঠি দেওয়া হচ্ছে। জমি হাতে পেলেই তৈরি হবে ডিপিআর। পূর্তদপ্তরের জমি নিয়ে সমস্যা না হলেও বন্দরের জমির একটি অংশ আপাতত মেট্রো রেলের হাতে রয়েছে। বাকি অংশে পার্কিং প্লাজা তৈরির জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষকে প্রস্তাব পাঠানো হচ্ছে। ওরা জমি দিলেই কাজ শুরু করা যাবে। পার্কিং লট নিয়ে পরিবেশ আদালতের নির্দেশকে মান্যতা দেওয়ার পাশাপাশি শহরকে দৃষ্টিনন্দন করে তুলতেই এই উদ্যোগ, বলছেন পুরকর্তারা।