মমতাকে মুখ্যমন্ত্রী চাই – চুঁচুড়ায় মহিলারা করলেন অকাল দুর্গাপুজো

সোমবার দুপুরে চুঁচুড়ার কাপাসডাঙায় একটি প্রাথমিক স্কুলের পাশের মাঠে মহিলাদের জমায়েত শুরু হয়েছিল।

March 9, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi
চুঁচুড়ার অকাল দুর্গাপুজো

 প্রত্যাশা নারীশক্তির সাফল্য। প্রত্যাশা যাঁরা করছেন, তাঁরাও সকলে নারী। আর যাঁর কাছে প্রত্যাশা, তিনি কখনও বাঙালির ঘরের মেয়ে থেকে দেবী হিসেবে নারীশক্তির জ্বলন্ত বিগ্রহ। আন্তর্জাতিক নারী দিবসের দিন এই অভাবিত যোগের মধ্যে দিয়ে দেবীদুর্গার অকাল আরাধনা করলেন চুঁচুড়ার একদল মহিলা। দেবীর কাছে তাঁদের নিবেদন অবশ্য বাংলার রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে অভাবনীয় নয়। ওই মহিলারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ্যমন্ত্রী চেয়ে দেবীর কাছে প্রার্থনা করেছেন। আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, ওই মহিলাদের সিংহভাগই তৃণমূলের কর্মী বা সদস্য নন। কেবল বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রীর ব্যক্তিগত আকর্ষণ ও কাজই তাঁদের ‘অকাল বোধন’-এ অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।


সোমবার দুপুরে চুঁচুড়ার কাপাসডাঙায় একটি প্রাথমিক স্কুলের পাশের মাঠে মহিলাদের জমায়েত শুরু হয়েছিল। নারী দিবসের দিন এমন চিত্র খুব স্বাভাবিক বলে অনেকেই বিশেষ নজর করেননি। কিন্তু তারপর একে একে দুর্গামূর্তি, পুজোর উপাচারের আয়োজন একটি পৃথক কিছুর ইঙ্গিত দিতে শুরু করে। একদল মহিলা শাঁখে, উলুতে যখন প্রার্থনা শুরু করলেন তখন বিষয়টি নজরে আসে অন্যদের। একদল মহিলার এই উদ্যোগ ঘিরে রাজনৈতিক মহলেও গুঞ্জন ছড়িয়েছে। বলা বাহুল্য, ওসব তৃণমূলের ‘তৈরি করা’ বলেই সামগ্রিকভাবে বিরোধীরা দাবি করেছে। ওই বিশেষ প্রার্থনার অন্যতম উদ্যোক্তা স্থানীয় গৃহবধূ মণিদীপা সরকার। তিনি তৃণমূলের সমর্থক। ওই গৃহবধূ বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকৃত অর্থেই মেয়েদের মর্যাদা দিয়েছেন, সমাজে গুরুত্ব বাড়িয়েছেন। স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে মেয়েদের নামেই কার্ড করা হচ্ছে। কিশোরীদের নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য কন্যাশ্রীর মতো প্রকল্প চালু করেছেন। মেয়েদের জন্য গালভরা প্রতিশ্রুতির বদলে যিনি কাজ করে দেখিয়েছেন, তাঁর জন্য প্রার্থনা করাই তো স্বাভাবিক। শাসকদলের প্রতি মণিদীপাদেবীর দুর্বলতা থাকলেও রাজনীতির সঙ্গে যোগ নেই মণিকা টিকাদারের। বছর দেড়েক আগে স্বামীহারা ওই মধ্যবয়সি মহিলা এদিনের প্রার্থনায় অংশ নিয়েছিলেন। তিনি একটি চায়ের দোকান চালান। কিছুদিন আগে তাঁর দোকানে চা খেয়ে গিয়েছেন বিজেপির মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। মণিকাদেবী বলেন, বিশেষ কিছু বুঝি না, বুঝতে চাইও না। শুধু এটুকু বুঝি, একজন মহিলা রাজ্যের হাল ধরেছেন পরিবারের মতো। সেখানে সকলেই গুরুত্ব পাচ্ছে।

মহিলারাও সম্মান পাচ্ছেন। তাই আমিও প্রার্থনায় যোগ দিয়েছি। বিজেপির প্রাক্তন রাজ্যনেতা স্বপন পাল বলেন, নারীর ক্ষমতায়নে আমিও বিশ্বাস করি। নারীদের শ্রদ্ধা করি। কিন্তু এসব নিখাদ নজর কাড়তেই তৃণমূল এই উদ্যোগ নিয়েছে। তৃণমূল নেত্রী অসীমা পাত্র বলেন, ওই মহিলারা বিজেপি নেতার পুজো করলে সমস্যা হতো না। তাছাড়া দুর্গা তো বিজেপির অপছন্দের দেবী। এসব বিতর্কে অবশ্য কান দিতে চান না কাপাসডাঙার ওই মহিলারা। তাঁরা শুধু বলছেন, মেয়েদের অনুভূতির মূল্যায়ন মা দুর্গাই করবেন। এবং ‘মমতা’র সঙ্গেই করবেন। 

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen