গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জের! অমিতের সভার কাছেই পুড়ল নেতার কুশপুতুল
রানিবাঁধ থেকে আসা দলের আরও কয়েকজন কর্মী বিক্ষোভ দেখালেন জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে।

বিজেপি–র (BJP) জেলা সংগঠনে চলছে তীব্র গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। বৃহস্পতিবার দলের সর্বভারতীয় নেতা, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের (Amit Shah) বাঁকুড়া (Bankura) সফরের দিনেও সেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বহিঃপ্রকাশ ঘটল। অমিত শাহ যখন বাঁকুড়া রবীন্দ্রভবনে ১৩ জেলার নেতৃত্ব নিয়ে বৈঠক করছেন, ঠিক তখনই শহরের অন্য প্রান্তে জেলা সভাপতি বিবেকানন্দ পাত্রের কুশপুতুল পোড়ালেন দলের কিছু নেতা ও কর্মী। রানিবাঁধ থেকে আসা দলের আরও কয়েকজন কর্মী বিক্ষোভ দেখালেন জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে।
এদিন কুশপুতুল পুড়িয়েছেন ছাতনা ৩ নং মণ্ডল কমিটির নেতা ও কর্মীরা। তঁাদের নেতৃত্বে ছিলেন প্রাক্তন মণ্ডল সম্পাদক সমর মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘পেশায় শিক্ষক সিদ্ধেশ্বর কুণ্ডু ছাতনা মণ্ডল সভাপতির দায়িত্ব পেয়ে দিনরাত পরিশ্রম করে সংগঠনকে মজবুত করেছিলেন। দলের জন্য খাটাখাটি করতে গিয়ে এক দুর্ঘটনায় তাঁর একটি পা ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কয়েকদিন আগে সিদ্ধেশ্বরবাবু ওই ব্লকের শালুনি গ্রামে একটি বড় মাপের সভা করেন। সেই সভায় আসার জন্য জেলা সভাপতিকে তিনি বারংবার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। তিনি জেলার আরও কয়েকজন নেতাকে ওই সভায় আসার জন্য অনুরোধ জানান। শুধুমাত্র সেই কারণে সিদ্ধেশ্বরবাবুকে মণ্ডল সভাপতির পদ থেকে জেলা সভাপতি বরখাস্ত করেন। তার পরিবর্তে যাঁকে ওই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তাঁর বিরুদ্ধে এলাকার মানুষের তীব্র ক্ষোভ আছে। তিনি এলাকায় বসবাসও করেন না। আমরা জানতে চাই, কেন এমন একজনকে মণ্ডল সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হল?’ তাঁরা রাজ্য সভাপতির উদ্দেশে দাবি তোলেন, স্বেচ্ছাচারী জেলা সভাপতিকে অবিলম্বে বরখাস্ত করতে হবে। নতুবা সারা জেলায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আরও ছড়িয়ে পড়বে।
এদিকে রানিবঁাধ থেকে আসা আর একদল বিজেপি কর্মী ও সমর্থক এদিন বিক্ষোভ দেখান। তঁাদেরও অভিযোগ জেলা সভাপতি ও জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। দেবব্রত ধবলদেব ও উত্তম মণ্ডলরা অভিযোগ করেন, ‘মণ্ডল কমিটিতে দলের পুরনোদের কোনও গুরুত্ব না দিয়ে অন্য দল থেকে আসাদের পদ দেওয়া হয়েছে। এটা কোনও মতেই মানা হবে না। ওরা শহিদ অজিত মুর্মুকে ভুলে গেছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে যখন প্রার্থী দিতে পারছিল না দল, তখন তঁারা বুক চিতিয়ে দঁাড়িয়েছিলেন। কিছু আসনে প্রার্থী দিতে পেরেছিলেন। কিন্তু এখন দল তঁাদের আর চিনতেই পারে না।’ দেবব্রত বলেন, ‘তাই তঁারা জেলা নেতৃত্বকে সতর্ক করে দিচ্ছেন, অবিলম্বে এই মনোভাব ত্যাগ করতে হবে। নতুবা আগামী দিনে দলের সর্বনাশ অনিবার্য।’ তঁারা আরও বলেন, ‘জেলা নেতৃত্বের ওপর ক্ষুব্ধ দলের আরও অনেকেই। অনেকেই দল ছেড়ে দিচ্ছেন। আবার কেউ কেউ চুপ করে বসে পড়ছেন। এভাবে চললে আগামী দিন দলের বিপদ ঘনিয়ে আসবে।’