পুরভোটের আগে দলের ভাঙনে জেরবার গেরুয়া শিবির

বিজেপির গড় নামে খ্যাত খড়্গপুর, তমলুকেও বড় ভাঙন প্রত্যক্ষ করতে হচ্ছে তাদের। সূত্রের খবর অনুযায়ী গোটা রাজ্যেই অব্যহত থাকবে বিজেপির এই ভাঙন।

February 2, 2022 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

পুরভোটের মুখে একের পর এক ধাক্কা খাচ্ছে গেরুয়া শিবির। বিজেপির গড় নামে খ্যাত খড়্গপুর, তমলুকেও বড় ভাঙন প্রত্যক্ষ করতে হচ্ছে তাদের। সূত্রের খবর অনুযায়ী গোটা রাজ্যেই অব্যহত থাকবে বিজেপির এই ভাঙন।

খড়্গপুরে দল ছাড়লেন বিজেপির বেশ কিছু কর্মী সমর্থক। মঙ্গলবার দলের ইন্দা ক্যাম্প অফিসে প্রায় দু’হাজার বিজেপি কর্মী-সমর্থক তৃণমূলে যোগদান করেন। তাঁদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, এঁরা সকলেই একসময় ঘাসফুল শিবিরের লোক ছিলেন। বিধানসভা নির্বাচনের আগে তাঁরা বিজেপিতে চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু ভুল বুঝতে পেরে পুরভোটের মুখে ফের ঘাসফুলে ফিরে এসেছেন।

তৃণমূলের জেলা সভাপতির দাবি, এই যোগদানের ফলে গত বিধানসভা ভোটে পিছিয়ে থাকা চারটি ওয়ার্ডে দলের জয় নিশ্চিত হয়ে গেল। আরও কিছু ওয়ার্ডেও বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা তৃণমূলে যোগ দেবেন বলে যোগাযোগ করেছেন। খুব শীঘ্র তাঁদেরও দলে নিয়ে নেওয়া হবে।

একই চিত্র দেখা গেছে তমলুকে। বিধানসভা ভোটে তমলুক পুরসভায় বিজেপির গড় আগলানো নেতা-কর্মীরাই এবার তৃণমূলকে জেতানোর দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়েছেন। তমলুক পুরসভায় ২০টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১২টি ওয়ার্ডে পদ্মফুল ফোটানোর কারিগররাই এবার বিজেপিকে হারানোর শপথ নিয়ে ময়দানে নেমেছেন। তালিকায় বিজেপির তমলুক বিধানসভার কনভেনার সৌমেন চক্রবর্তী থেকে মহিলা মোর্চার শহর কমিটির সভানেত্রী সহ একঝাঁক নেতানেত্রী রয়েছেন। তাঁরা বিজেপি ত্যাগ করে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। শুরু থেকেই তৃণমূলের সব ধরনের কর্মসূচিতে শামিল হয়ে ২০টি ওয়ার্ডেই জোড়াফুল ফোটানের শপথ নিচ্ছেন। গত সেপ্টেম্বর মাসে বিজেপির তমলুক নগর মণ্ডলের মহিলা মোর্চার সভানেত্রী দেবশ্রী মাইতি তৃণমূলে যোগ দেন।বিধানসভা ভোটে অনেকটা ওই নেত্রীর সাংগঠনিক দক্ষতায় নিজের ১নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপি ৬৭৫ ভোটের লিড নিয়েছিল। যদিও বিজেপি যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট চেয়েছিল, সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করার সুযোগ না থাকায় তিনি তৃণমূলে যোগ দেন।

একই সময়ে জেলার নেতাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে পদ ছাড়লেন বিজেপির বর্ধমান সাংগঠনিক জেলা যুব মোর্চার সভাপতি শুভম নিয়োগী। তিনি রাজ্য সভাপতির কাছে মঙ্গলবারই পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন। এদিন তিনি ইছালাবাদের বাড়িতে সাংবাদিক বৈঠক করে বলেন, জেলা কমিটিতে যোগ্য নেতাদের জায়গা দেওয়া হয়নি। সদস্য নির্বাচনে স্বজনপোষণ করা হয়েছে। যাঁদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে, তাঁদের গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বিজেপির অনেক নেতা-কর্মী হালে দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব দেখে তিতিবিরক্ত। অনেকেই বসে গিয়েছেন। আবার কেউ কেউ হতাশ হয়ে তৃণমূলে ফিরতে চেয়ে আবেদন করছেন। বিধানসভা ভোটের পর থেকে দলে দলবদলু নেতার খবরদারি বাড়তে থাকে। তা নিয়ে চাপা ক্ষোভ ছিল। গত ২৫ জানুয়ারি বিজেপির জেলা কমিটির পদাধিকারী তালিকা বেরনোর পর সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। পুরভোটের মুখে ঘরোয়া কোন্দলের জেরে প্রচার শুরু করতে পারছে না গেরুয়া শিবির।

অপরদিকে, পুরভোটের আগে জনসংযোগে জোর দিতে দুয়ারে পুরপ্রশাসক কর্মসূচিকে হাতিয়ার করেছে শাসক দল।

পুরভোটের আগে দুই ভিন্ন চিত্র দেখা যাচ্ছে বাংলার প্রধান দুই রাজনৈতিক শিবিরে। এক দল জনসংযোগে জোড় দিচ্ছে। অপর দল গোষ্ঠী কোন্দল মেটাতে মেটাতে জনগণের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen