Bihar Election: NDA-তে অস্থিরতার মাঝেই ৮৩ আসনে দ্বিতীয় দফায় প্রার্থী ঘোষণা BJP-র
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ১৯:১৮: বিহার বিধানসভা নির্বাচনের (Bihar Election 2025) আগে বুধবার ভারতীয় জনতা পার্টি তাদের দ্বিতীয় দফার প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে। এই তালিকায় ১২ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। তালিকার সবচেয়ে চমকপ্রদ নাম জনপ্রিয় লোকগায়িকা মৈথিলী ঠাকুর, যিনি প্রথমবারের মতো রাজনীতিতে পা রাখছেন। দল তাকে দ্বারভাঙা জেলার আলিনগর আসন থেকে প্রার্থী করেছে। মঙ্গলবার পাটনায় রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ জয়সওয়ালের উপস্থিতিতে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে দলে যোগ দেন। তার যোগদানের পর থেকেই জল্পনা চলছিল যে তিনি আলিনগর থেকেই লড়বেন। বর্তমানে এই আসনটি বিজেপিরই মিশ্রিলাল যাদবের দখলে রয়েছে।
এই তালিকায় আরও রয়েছেন প্রাক্তন আইপিএস অফিসার আনন্দ মিশ্র, যিনি সম্প্রতি প্রশান্ত কিশোরের ‘জন সুরাজ’ ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। তিনি বক্সার আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এছাড়া রঞ্জন কুমার মুজফ্ফরপুর থেকে বর্তমান বিধায়ক সুরেশ শর্মার পরিবর্তে লড়বেন। রাম চন্দ্র প্রসাদ হায়াঘাট, সুভাষ সিং গোপালগঞ্জ এবং ছোটি কুমারী বানিয়াপুর থেকে প্রার্থী হয়েছেন। দল ছাপরা, সোনেপুর, রোসেরা (অনু), বারহ, শাহপুর ও আগিয়াঁও (অনু) আসনেও প্রার্থী ঘোষণা করেছে।
এই দ্বিতীয় তালিকা প্রকাশের পর বিজেপি মোট ৮৩টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। মঙ্গলবার প্রকাশিত প্রথম তালিকায় ৭১ জনের নাম ছিল, যার মধ্যে উপমুখ্যমন্ত্রী সম্রাট চৌধুরী, বিজয় সিনহা, রাম কৃপাল যাদব, তারকেশ্বর প্রসাদ ও মঙ্গল পাণ্ডের নাম অন্তর্ভুক্ত ছিল।
এদিকে, জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট (NDA)-এর মধ্যে আসন বণ্টন নিয়ে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। চূড়ান্ত রূপরেখা অনুযায়ী, বিজেপি ও জনতা দল (ইউনাইটেড) উভয়েই ১০১টি করে আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। চিরাগ পাসওয়ানের নেতৃত্বাধীন লোক জনশক্তি পার্টি (রামবিলাস) পেয়েছে ২৯টি আসন। রাষ্ট্রীয় লোক মোর্চা (আরএলএম) ও হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চা (HAM) পেয়েছে ছয়টি করে আসন।
তবে এই ভাগাভাগি নিয়ে জোটের ভেতরে অস্বস্তি দেখা দিয়েছে। জেডিইউ (JDU) অভিযোগ করেছে, তাদের ভাগের কয়েকটি আসন পাসওয়ানের দলে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে সোনবরসা, রাজগির, একমা ও মোরওয়া আসন ছাড়তে রাজি হয়নি তারা এবং শেষ পর্যন্ত নিজেদের প্রার্থীই দিয়েছে। সূত্র অনুযায়ী, জেডিইউ কেবল দুটি আসন – তারাপুর ও তেঘরা ছেড়েছে এবং বিনিময়ে বিজেপির কাহালগাঁও আসন পেয়েছে।
অন্যদিকে, পাসওয়ানের দলকেও বেশ কিছু “ক্রিম সিট” থেকে বঞ্চিত হতে হয়েছে। বিজেপি দানাপুর, লালগঞ্জ, হিশুয়া ও আরওয়াল আসন নিজেই রেখে দিয়েছে। শেষ পর্যন্ত এলজেপি (আরভি)-কে বিজেপি দুটি আসন দিয়েছে -গোবিন্দগঞ্জ ও ব্রহ্মপুর, যেখানে প্রার্থী হয়েছেন হুলাস পাণ্ডে।
আরএলএম প্রধান উপেন্দ্র কুশওয়াহা ক্ষুব্ধ হয়েছেন, কারণ তার দলের ভাগ থেকে মহুয়া আসন পাসওয়ানের দলে দেওয়া হয়েছে। প্রতিবাদস্বরূপ তিনি তার দলের কোনও প্রার্থীকে নির্বাচনী প্রতীক দেননি এবং জরুরি বৈঠক ডেকেছেন। অপরদিকে, এইচএএম প্রধান জিতন রাম মাঝি ইতিমধ্যেই তার সব প্রার্থীকে প্রতীক বণ্টন শেষ করেছেন। জেডিইউ আনুষ্ঠানিক তালিকা প্রকাশের আগেই ৭০ জনেরও বেশি প্রার্থীকে প্রতীক দিয়েছে।
বিহার বিধানসভার মোট ২৪৩টি আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে দুই ধাপে – ৬ নভেম্বর ও ১১ নভেম্বর। ভোটগণনা হবে ১৪ নভেম্বর। বিজেপির দ্বিতীয় তালিকা যেমন চমক দিয়েছে, তেমনই এনডিএ-র (NDA) অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বও প্রকাশ্যে এসেছে। এখন দেখার, এই জোট কীভাবে ঐক্য বজায় রেখে নির্বাচনী লড়াইয়ে এগোয়।
