দলবদলু নেতাকে এনেও আলিপুরদুয়ারে তৃণমূলে ভাঙন ধরল না, হতাশ বিজেপি
আসন্ন ভোটের আগে এই ‘অস্বস্তি’ একদিকে বিজেপিকে চিন্তায় ফেলেছে। অন্যদিকে, তৃণমূলকে উৎসাহিত করেছে।

আলিপুরদুয়ারে (Alipurduar) দলবদলু এক নেতাকে এনে বিজেপি যতটা গর্জাবে বলে ভেবেছিল, ততটা বর্ষাতে পারেনি। ওই সভায় তাঁর উপস্থিতিতে তৃণমূলের পরিচিত মুখ অনেকেই তাদের দলে যোগদান করবে, এমনই প্রচার করা হয়েছিল বিজেপির পক্ষ থেকে। কিন্তু বাস্তবে তা না হওয়ায় এখন অস্বস্তিতে গেরুয়া শিবির। এমনকী শিলিগুড়িতেও দলবদলু ওই নেতার উপস্থিতিতে যোগদান পর্ব হওয়ার কথা ছিল সেদিন। তাও বাতিল করতে হয়েছে বিজেপিকে। আসন্ন ভোটের আগে এই ‘অস্বস্তি’ একদিকে বিজেপিকে চিন্তায় ফেলেছে। অন্যদিকে, তৃণমূলকে উৎসাহিত করেছে।
আসলে বিজেপির স্থানীয় নেতৃত্বের ধারণা ছিল, রাজ্যের প্রাক্তন ওই পরিবহণ মন্ত্রীর সঙ্গে যেহেতু দলত্যাগ করেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের আলিপুরদুয়ারের নেতা দশরথ তিরকি, আশিস দত্ত এবং বাপ্পা মজুমদার। তাই তৃণমূলের ওই দলবদলুদের সামনে রেখে জেলায় ওই প্রাক্তন মন্ত্রীর সফরে রাজ্যের শাসক দলের ঘরে ভাঙন চওড়া করতে পারবে তারা। কিন্তু বাস্তবে দেখা গিয়েছে, বাবুরহাটে গত রবিবারের ওই সভায় তৃণমূলের কোনও পরিচিত মুখই দলবদল করেনি। উপরন্তু তাঁর জনসভায় উপস্থিতির হার ভাবিয়ে তুলেছে বিজেপি নেতৃত্বকে। কেন এমন হল তা নিয়ে আলিপুরদুয়ারে বিজেপির অন্দরেই এখন নানা প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে। অবশ্য এমনটাই যে হবে তৃণমূল (Trinamool) নেতৃত্ব আগে থেকেই তার আঁচ পেয়েছিল বলে দাবি শাসক দলের জেলা নেতাদের। তাঁদের বক্তব্য, স্থানীয় ফুটবল মাঠের অর্ধেক অংশে সভা হয়েছিল। বাকি মাঠ ফাঁকা ছিল। ওই অর্ধেক মাঠে সভা করে মুখরক্ষা করতে হয় গেরুয়া শিবিরকে।
সভায় দেখা যায়নি অনন্ত মহারাজ গোষ্ঠীর গ্রেটার সমর্থকদেরও। উপরন্তু সেদিন সভা শুরু হওয়ার নির্ধারিত সময়সূচি ছিল বিকেল ৩টে। কিন্তু মাঠ ভরেনি বলে প্রধান বক্তাকে মঞ্চে আনা হয় বিকেল ৪টে নাগাদ। আর তাঁর বক্তৃতা শুরু হতেই লোকজনকে ধীরে ধীরে সভা ছেড়ে চলে যেতেও দেখা যায়। এই ‘ব্যর্থতা’ ঢাকতে মরিয়া গেরুয়া শিবিরের দাবি, এটা ঠিক যে রবিবার তাদের সভায় তৃণমূলের পরিচিত কোনও মুখ দলবদল করেনি। কিন্তু সেদিন তৃণমূলের নিচুতলার বহু কর্মী-সমর্থক বিজেপিতে (BJP) যোগ দিয়েছিলেন। তাতে জেলায় দল অনেকটাই শক্তিশালী হয়েছে।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি মৃদুল গোস্বামী বলেন, যাঁরা তৃণমূল করে তাঁরা বাংলার মানুষ ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আছেন। তাঁরা মন্ত্রী, চেয়ারম্যান হওয়ার লোভে দল ছেড়ে যান না। বিজেপির তো রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডা নেই। শুধু জয় শ্রীরাম ধ্বনি দিয়ে রথ চালিয়ে কি মানুষের ক্ষুধা নিবৃত্তি করা যায়। মানুষ সেটা বুঝতে পারছে। তাই দলবদলুদের আলিপুরদুয়ার থেকে খালি হাতে ফিরতে হয়েছে। বুধবার মৃদুলবাবু জানান, বাবুরহাটের ওই খেলার মাঠে দলের রাজবংশী কর্মিসভার সম্ভাব্য দিন ঠিক করা হয়েছে ২৭ ফেব্রুয়ারি।
বিজেপির জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা অবশ্য বলেন, ওই সভায় জনজোয়ার ছিল। আগামী দিনে জেলায় দলবদলে আমরা বড় চমক দেব। শুধু ভোটের দিন ঘোষণা হতে দিন। তৃণমূলে বড় ভাঙন হবে।