কেন্দ্রের সীমিত ছাড়ে কমবে না দুর্ভোগ, অসন্তোষ অব্যাহত

জ্বালানির দাম বাড়ছে সেই করোনাকাল শুরু হওয়ার সময় থেকেই

November 5, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

জ্বালানির দাম বাড়ছে সেই করোনাকাল শুরু হওয়ার সময় থেকেই। কিন্তু এতদিন কেন্দ্রের হুঁশ ফেরেনি। মাঝে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম ক্রমেই কমছিল। তার সুবিধা সেই সময় সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়নি মোদি সরকার। উল্টে তারা জোর দিয়েছিল পেট্রপণ্যের উপর কেন্দ্রীয় শুল্ক আরও বাড়িয়ে কোষাগার ভরার দিকে। ফলে দেড় বছরের মধ্যে সেঞ্চুরি পার করেছে পেট্রল-ডিজেলের দাম।

একবারও কেন্দ্রীয় শুল্ক কমানোর কোনও উদ্যোগ নেয়নি কেন্দ্র। বিজেপি শাসিত কোনও রাজ্য সরকারও উদ্বেগ প্রকাশ করেনি। কিন্তু মঙ্গলবার দেশজুড়ে লোকসভা ও বিধানসভার উপ নির্বাচনে বিজেপি ধাক্কা খাওয়ার ২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতে কমল সেই শুল্ক। কিন্তু, মোদি সরকারের দেওয়া সেই নামমাত্র ছাড়ে কতটা লাভ হল সাধারণ মানুষের? বৃহস্পতিবার এই প্রশ্নই অসন্তোষ বাড়াল আসমুদ্রহিমাচলে। উত্তরপ্রদেশ, কর্ণাটক, গুজরাত, বিহার সহ ১১টি বিজেপি তথা এনডিএ শাসিত রাজ্য এবং ওড়িশা এদিন পেট্রল-ডিজেলের উপর ভ্যালু অ্যাডেড ট্যাক্স (ভ্যাট) কমিয়েছে। কিন্তু তাতেও দুর্ভোগ কমবে না বলেই মত আম জনতার।

২০১৪ সালের মে-জুন মাসে যখন প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী পদে বসেন নরেন্দ্র মোদি, তখন আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দর ছিল ব্যারেল প্রতি ১০৯ ডলার। ভারতে পেট্রলের দাম তখন কত? ৭২ টাকা প্রতি লিটার। আজ আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের প্রতিটি ব্যারেলের মূল্য ৮০ ডলার। অথচ ভারতে পেট্রলের দাম গতকাল কেন্দ্রীয় শুল্ক কমানোর আগে ১১০ টাকা ছুঁয়ে ফেলেছিল। ইউপিএ সরকারের আমলে পেট্রলের উপর কেন্দ্রীয় সরকারের শুল্ক ছিল লিটার প্রতি ৯ টাকা ২০ পয়সা।

আর সেই শুল্ক মোদি জমানায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে লিটার প্রতি ৩২ টাকায়। রাজস্থানের কংগ্রেস সরকারের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটের সাফ জানিয়েছেন, ‘মোদি সরকার কেন্দ্রীয় শুল্ক যা কমিয়েছে, সেটা নামমাত্র। আরও কমানো হোক।’ প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের কটাক্ষ, ‘বিধানসভা উপ নির্বাচনের ফলাফলের বাইপ্রোডাক্ট হল পেট্রল ও ডিজেলের দাম কমানো। আমরা অনেক আগে থেকেই বলে আসছি যে পেট্রল ও ডিজেলের দাম এত বেশি থাকার কারণ—কেন্দ্রীয় শুল্ক। সেটা  কিছুটা কমিয়ে কেন্দ্র কার্যত স্বীকার করে নিল আমাদের অভিযোগ সত্যি। কিন্তু এই হ্রাসে সাধারণ মানুষের বড়সড় উপকার হবে না।’

দেশজুড়ে ৩০টি বিধানসভা আসনে উপ নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ হয় সম্প্রতি। হিমাচল প্রদেশ থেকে কর্ণাটক, হরিয়ানা থেকে বাংলা—একের পর এক রাজ্যে মুখ থুবড়ে পড়েছে বিজেপি। সাধারণ মানুষের ক্ষোভের কথা বুঝতে পেরেই নড়েচড়ে বসে কেন্দ্র এবং বিজেপি। বুধবার সন্ধ্যায় পেট্রল ও ডিজেলের উপর কেন্দ্রীয় শুল্ক কমায় মোদি সরকার। তারপর বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিকে একই পথ অনুসরণের নির্দেশ দেওয়া হয়। বুধবার রাত থেকে শুরু হয়ে যায় ভ্যাট কমানোর সেই প্রবণতা। এর মধ্যে কর্ণাটক ভ্যাট এবং সেলস ট্যাক্স মিলিয়ে ডিজেলে ৯ টাকা ৪৭ পয়সা এবং পেট্রলে ৮ টাকা ৩০ পয়সা দাম কমিয়েছে। ফলে সেখানে ১৯ টাকারও বেশি সস্তা হয়েছে ডিজেল। কিন্তু তাকেও কার্যত ‘বিন্দুতে সিন্ধু’ বলে কটাক্ষ বিরোধীদের। 

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen