ওষুধের বেলাগাম দামে রাশ টানতে ব্যর্থ কেন্দ্র

মামলা-মোকদ্দমাতে আটকে আরও ৬,৬১২ কোটি টাকার জরিমানা। এখনও তা উদ্ধার করতে পারেনি কেন্দ্র। ৯,৪০৭ কোটি টাকার মধ্যে কেন্দ্রের ঘরে এসেছে ১,৩০৮ কোটি ৫৮ লক্ষ। মাত্র ১৪ শতাংশ!

January 6, 2022 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

নির্ধারিত দামের তুলনায় চড়া মূল্যে ওষুধ বিক্রি! সাধারণ মানুষের পকেট ফাঁকা করলেও বহু ‘ফার্মা জায়ান্ট’কে বাগে আনতে ব্যর্থ মোদি সরকার। খোদ কেন্দ্রীয় সরকারের ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রক সংস্থা ন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যাল প্রাইজিং অথরিটি (এনপিপিএ)-র রিপোর্ট বলছে একথা। নিয়ম অনুযায়ী, লাগামছাড়া ‘ওভারচার্জিং’ বা বেশি দামে ওষুধ বিক্রির জন্য বিভিন্ন কোম্পানিকে জরিমানা করা হয়। কিন্তু সেই বাবদ ১,১৭৯ কোটি ৩৪ লক্ষ টাকা এখনও বকেয়া। এর মধ্যে বড় অঙ্কের টাকা বাকি রেখেছে ‘ফার্মা জায়ান্ট’ বা বড় বড় ওষুধ নির্মাতা সংস্থাগুলি। মামলা-মোকদ্দমাতে আটকে আরও ৬,৬১২ কোটি টাকার জরিমানা। এখনও তা উদ্ধার করতে পারেনি কেন্দ্র। ৯,৪০৭ কোটি টাকার মধ্যে কেন্দ্রের ঘরে এসেছে ১,৩০৮ কোটি ৫৮ লক্ষ। মাত্র ১৪ শতাংশ!

সূত্রের খবর, এনপিপিএকে নির্ধারিত মূল্যে ওষুধ বিক্রির প্রতিশ্রুতি (ফর্ম V) দেয় সংস্থাগুলি। তারপরেও সেগুলি চড়া দামে বাজারে ছাড়ে বহু বড় কোম্পানি। যতদিনে আইনরক্ষকদের চোখে তা ধরা পড়ে, ততদিনে কোটি কোটি টাকার ওষুধ বিক্রি শেষ। ড্রাগ প্রাইজ কন্ট্রোল অর্ডার বা ডিপিসিও ২০১৩ অনুযায়ী, মূলত দুই ধরনের ওষুধ বাজারে বিক্রি হয়। একটি ‘কন্ট্রোলড ক্যাটিগরি’র—যার দামে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণ থাকে। দ্বিতীয়টি ‘ডিকন্ট্রোলড ক্যাটিগরি’, অর্থাৎ সরকারি নিয়ন্ত্রণহীন। কোনও ওষুধ ‘ডিকন্ট্রোলড’ থেকে ‘কন্ট্রোলড’ ক্যাটিগরিতে এলেই, বহু ফার্মা জায়ান্ট আইন বাঁচিয়ে দাম বাড়ানোর পথ খুঁজতে থাকে। যেমন, ১০ মিলিগ্রামের (মিগ্রা) নির্দিষ্ট উপাদানের ওষুধ ‘কন্ট্রোলড’ পর্যায়ে ঢুকলে নির্মাতারা নিয়ে আসে ১২ বা ১৩ মিগ্রার ওষুধ। ফলে দাম চড়চড় করে বাড়ানো যায়। চিকিৎসার দিক থেকে এর কোনও যুক্তি নেই। বরং বিপজ্জনক। এব্যাপারে জরিমানা দিতে বললেই আদালতের দ্বারস্থ হয় বহু কোম্পানি। দু’পক্ষই জানে, এই সব মামলার নিষ্পত্তি সহজে হয় না। ২০২১ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত ৩০০-র বেশি কোম্পানির বিরুদ্ধে বেশি দামে ওষুধ বিক্রির ২২০৫টি অভিযোগ জমা পড়েছে। ওষুধের দোকানদারদের সর্বভারতীয় সংস্থা অল ইন্ডিয়া কেমিস্ট অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউটর্স ফেডারেশনের সর্বভারতীয় সম্পাদক জয়দীপ সরকার বলেন, এর জ্বলজ্যান্ত উদাহরণ ভিটামিন। এটি একটি নিয়ন্ত্রিত ওষুধ। ঠিক এই কারণে বেশিরভাগ কোম্পানি নানা কৌশলে ভিটামিনকে সার ও রসায়ন মন্ত্রকের ওষুধ দপ্তর থেকে খাদ্যমন্ত্রকের অধীনে নিয়ে এসেছে। ফুড সাপ্লিমেন্ট হিসেবে লাগামছাড়া দামে বিক্রিও করছে। অথচ সেগুলির ৭৫ শতাংশ মূল উপাদানই ওষুধ দপ্তরের আওতার। সব জেনেও হাত গুটিয়ে বসে আছে কেন্দ্র।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen