রাজ্যের মুকুটে নয়া পালক, শিশু মৃত্যু হার কমিয়ে নজির গড়ল বাংলা

১-৫ বছর বয়সি শিশুদের মৃত্যুহারেও ভালমতো রাশ পড়েছে। এই রেঞ্জে প্রতি হাজারে গড়ে মাত্র ১০টির মৃত্যু হয়। আগে যা ছিল ২৬।

September 30, 2020 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

শিশু মৃত্যু নিয়ন্ত্রণে সাফল্যের তালিকায় তিন ধাপ এগোল পশ্চিমবঙ্গ। ষষ্ঠ থেকে একেবারে উঠে এল তৃতীয় স্থানে। করোনা আবহে যে ঘটনাকে রাজ্যের উন্নয়নের মুকুটে আর একটি জ্বলজ্বলে পালক বলেই মনে করছেন শিশু বিশেষজ্ঞ ও প্রশাসনিক কর্তারা।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের শিশু ও প্রসূতিকল্যাণের তথ্য অনুযায়ী, পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুর মৃত্যুহারে কড়া লাগাম পরিয়ে পশ্চিমবঙ্গ এখন এই ক্ষেত্রে দেশের মধ্যে তিন নম্বরে। পাশাপাশি দেশীয় বার্ষিক গড় শিশুমৃত্যু যেখানে ৩৩.৩%, বাংলায় তা কমে হয়েছে ২১.৩%। এটাও নিঃসন্দেহে দুরন্ত সাফল্য। রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরকে দেওয়া কেন্দ্রীয় তথ্য অনুযায়ী, ০-১ বছর বয়স পর্যন্ত প্রতি হাজার শিশুর মধ্যে রাজ্যে গড়ে মাত্র ৯টির মৃত্যু হয়। বছরখানেক আগেও সংখ্যাটা ছিল ১৬। আরও উল্লেখ্যযোগ্য বিষয়, ১-৫ বছর বয়সি শিশুদের মৃত্যুহারেও ভালমতো রাশ পড়েছে। এই রেঞ্জে প্রতি হাজারে গড়ে মাত্র ১০টির মৃত্যু হয়। আগে যা ছিল ২৬।

রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা বলেন, “প্রসূতি ও শিশুর মৃত্যু নিয়ন্ত্রণে সার্বিক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। এসএনসিইউ (সিক নিওনেটাল কেয়ার ইউনিট) বেড়েছে। অত্যন্ত কম ওজনের সদ্যোজাতকেও বাঁচানো যাচ্ছে, কয়েক বছর আগে যা সম্ভব ছিল না।” অধিকর্তা এও জানান, এখন শিশুমৃত্যুর খবর পেলেই অডিট হচ্ছে। কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জন্মের পর থেকে পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত মা ও শিশু যাতে রুটিন প্রতিষেধক ও পুষ্টিকর খাবার পায়, তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আশাকর্মীদের ভূমিকা উল্লেখ্যযোগ্য।

স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, শিশুমৃত্যু রোধ কর্মসূচিতে সাফল্যের নিরিখে প্রথম স্থানে কেরল। ০-১ বছরের প্রতি হাজার শিশুর মধ্যে গড়ে সাকুল্যে তিনটি শিশুর মৃত্যু হয় সে রাজ্যে। দ্বিতীয় তামিলনাড়ু। সেখানে সংখ্যাটা ৭। তৃতীয় পশ্চিমবঙ্গ।

একইভাবে প্রসূতিমৃত্যু রোধেও উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে রাজ্য। স্বাস্থ্য ভবনের তথ্য, বাংলায় প্রতি এক লক্ষ প্রসূতির মধ্যে কয়েক বছর আগেও ৯৮ জনের মৃত্যু হত। এখন কমে হয়েছে ৭০। স্বাস্থ্য অধিকর্তার কথায়, “মাতৃমৃত্যুতে আরও রাশ দিতে বেশ কিছু করা হবে।”

স্বাস্থ্য দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এখন রাজ্যে ৬৯টি এসএনসিইউ রয়েছে। এক বছরের মধ্যে সংখ্যাটা শতাধিক করার পরিকল্পনা। এর দৌলতে এখন ৬০০ গ্রাম ওজনের সদ্যোজাতর জীবন রক্ষাও সম্ভব হচ্ছে। শিশুদের জটিল অস্ত্রোপচার রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে নিখরচায় হয়। পুজোর মাসেই জঙ্গলমহলের সাতটি জেলার পঞ্চায়েত দপ্তরের সঙ্গে যৌথভাবে কয়েকটি ব্লকে প্রসূতিদের জন্য কমিউনিটি কিচেন চালু হবে। এবং পরীক্ষামূলকভাবে এই প্রকল্প চালু হলে অন্য জেলায় তা শুরু হবে। এই বছরই অন্যান্য ভ্যাক্সিনের মতো রোটা ভাইরাসের প্রতিষেধক চালু হয়েছে। এছাড়াও অঙ্গনওয়ারি কেন্দ্রের সংখ্যা আরও বাড়িয়ে প্রসূতি ও গর্ভবতীদের সুষম খাদ্য এবং প্রতিষেধক বণ্টন বাড়ানো হবে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen