দুর্গা প্রতিমা বানিয়েছে পঞ্চম শ্রেনীর ছাত্র, পুজো হবে পাড়ার মন্দিরে
বাবার সঙ্গে পালপাড়া দিয়ে যাওয়ার সময় দুর্গা ঠাকুর তৈরি হতে দেখেছিল ছোট্ট ছেলেটি।

বাবার সঙ্গে পালপাড়া দিয়ে যাওয়ার সময় দুর্গা ঠাকুর তৈরি হতে দেখেছিল ছোট্ট ছেলেটি। তখন সে ক্লাস থ্রি’র ছাত্র। ছোট্ট একটি প্রতিমা তৈরি হওয়া দেখে তারও প্রতিমা তৈরির ইচ্ছা জাগে। সেবছরই বাড়িতে দুর্গা ঠাকুর তৈরি শুরু করে। বিচুলি দিয়ে শুরু করলেও শেষ পর্যন্ত তা করে উঠতে পারে নি। পরের বার মাটি দিয়ে প্রতিমা তৈরি শুরু করলেও সে বছরও শেষ পর্যন্ত তা আর হয়ে ওঠেনি। জেদ চেপে যায় ছোট্ট ছেলেটির। অবশেষে এ বছর ছোট্ট একটি দুর্গা প্রতিমা গড়ে সকলকে তাকে লাগিয়ে দিয়েছে বনগাঁ খয়রামারির বাসিন্দা ঋক দাস। তার বাড়ির পাশেই রয়েছে একটি কালীমন্দির। সেখানে দুর্গাপুজোও হয়। ছোট্ট ঋকের আবদার মেনে বড় দুর্গাপ্রতিমার পাশে রেখে সেখানে পুজো করা হবে তার তৈরি ছোট্ট দুর্গাও। কমিটির এই সিদ্ধান্তে খুব খুশি ঋক।
ঋকের বাবা শিক্ষক ও নাট্যকর্মী দুর্লভ দাস। বাবা-মা ছাড়াও বাড়িতে আছেন ঠাকুমা। বাড়ির একমাত্র ছেলের মনের ইচ্ছা ও কিছু গড়ার মানসিকতা দেখে সব সময় উৎসাহ জুগিয়েছেন পরিবারের অন্যরা। পরিবারের কাছ থেকে এমন উৎসাহ পেয়েই আজ দুর্গা প্রতিমা গড়েছে ছোট্ট ঋক। খড়, বোর্ড, মাটি, কাগজ, রঙ দিয়ে সাজিয়ে তুলেছে দেবী দশভুজাকে। ছোট্ট শিল্পীর হাতে গড়া দেবীমূর্তির সাবেকি সাজ। এবছর রথের দিন তৈরি হয় কাঠামো। এরপর ধীরে ধীরে মাকে সাজিয়ে তুলেছে ঋক। মূর্তি গড়ার নেশায় মগ্ন হয়ে কোনও কোনও দিন গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করেছে ছোট্ট ছেলেটি। জরি, চুমকি, কলকা দিয়ে রূপ নিয়েছেন দুর্গা। কাপড়ের বদলে কাগজের ব্যবহার বেশি করেছে ঋক। নিজের হাতেই সে তৈরি করেছে মুকুট ও মায়ের অস্ত্র। শুধু প্রতিমা গড়া নয়। এই বয়সেই ঢাক, ঢোল সহ বেশ কয়েকটি বাদ্যযন্ত্রও বাজাতে পটু বনগাঁর ঋক। তার এই শিল্পকর্মের প্রশংসা করেছেন পাড়ার অনেকেই। আগামীতে অনেক বড় হোক ঋক, এটাই সবার প্রার্থনা।