দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখলেন মুখ্যমন্ত্রী, মঙ্গলবার মহাযজ্ঞ, আহুতি হবে দু’ কুইন্টাল ঘি
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে মন্দিরের প্রস্তুতি পরিদর্শনে রয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার-সহ অন্যান্যরা।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: মাঙ্গলিক সানাইয়ের সুরে মুখরিত দিঘা। সৈকতনগরীতে উৎসবের মেজাজ। তারই মাঝে সোমবার দিঘার পৌঁছলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন দুপুরে পুরোহিতদের সঙ্গে একপ্রস্ত কথা বলার পর বিকেলে প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে নবনির্মিত মন্দির চত্বরে পৌঁছে গেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে মন্দিরের প্রস্তুতি পরিদর্শনে রয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার-সহ অন্যান্যরা।
দিঘার মন্দিরের উদ্বোধন উপলক্ষ্যে ইতিমধ্যে ‘নয়নপথগামী জয় জগন্নাথ স্বামী’ গান লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সুরও তাঁর দেওয়া। গানটি গেয়েছেন রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন। গানের সঙ্গে জগন্নাথ মন্দিরের বিভিন্ন দৃশ্য তুলে ধরা হয়েছে। এদিন মুখ্যমন্ত্রী যখন মন্দির পরিদর্শন করছেন, তখন সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর নিজের লেখা ওই গানটি বাজতে শোনা যায়। উদ্বোধনের দিনও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা ও সুর দেওয়া এই গানটি বাজবে।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই শুরু মহাযজ্ঞ। আহুতি হবে দু’ কুইন্টাল ঘি। সেখানে অংশ নেবেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই মতো প্রশাসনিক প্রস্তুতি সারা। এদিকে, ২৯ ও ৩০ এপ্রিল জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনের সাক্ষী থাকতে রবিবার থেকেই দিঘায় ভিড় জমতে শুরু করেছে। মন্দির চত্বরে তৈরি হয়েছে মঞ্চ। সেখানে বিশিষ্ট নৃত্যশিল্পী তথা প্রাক্তন ক্রিকেট অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ঘরণী ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়, সংগীতশিল্পী নচিকেতা, শ্রীরাধা বন্দ্যোপাধ্যায়, ইমন চক্রবর্তী ও জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো সেলিব্রিটিরা থাকবেন। সব মিলিয়ে প্রায় এক হাজার শিল্পীকে নিয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে। সমাজের বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিও অংশগ্রহণ করবেন। মঞ্চের সামনে মোট আট হাজার আসন পাতা হয়েছে।
জগন্নাথ মন্দিরের গেটে নিরাপত্তা কয়েকগুণ বাড়ানো হয়েছে। বাইরের লোকজনের প্রবেশ পুরোপুরি নিষিদ্ধ। এদিন সকাল থেকেই দিঘায় পর্যটকরা আসতে শুরু করেছেন। ভিআইপিরাও আসতে শুরু করে দিয়েছেন। এদিন বিকলের পর বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু সহ রাজ্যের বিভিন্ন দপ্তরের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীরা চলে এসেছেন বলে খবর। মেগা ইভেন্টে বিদ্যুৎ থেকে অগ্নিনির্বাপণ, পানীয় জল প্রভৃতি নিয়ে যাতে কোনও সমস্যা না হয়, তার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এদিন সকাল থেকেই অন্য জেলা থেকে বাহিনী পৌঁছতে শুরু করেছে।
জগন্নাথদেবের প্রাণ প্রতিষ্ঠার আগে পুরীর নিয়ম মেনেই নিষ্ঠা সহকারে মন্দিরে নানা আচারবিধি পালন করা হচ্ছে। সকাল ও সন্ধ্যায় মন্দিরের সামনে পুজোপাঠ এবং হোমযজ্ঞ শুরু হয়েছে। পুরীর মন্দির থেকে ৫৭ জন জগন্নাথদেবের সেবক এবং ইস্কন থেকে ১৭ জন সাধু ওই আচারবিধিতে শামিল হচ্ছেন। মঙ্গলবার সকাল থেকেই মহাযজ্ঞ শুরু হবে। জানা গিয়েছে, দু’ কুইন্টাল ঘি এবং ১০০ কুইন্টাল আম ও বেল কাঠ নিয়ে মহাযজ্ঞ হবে।
এদিন দিঘায় পৌঁছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “অবশ্যই এই মন্দির দিঘার মুকুটে নতুন পালক যোগ করবে, দিঘা আরও উচ্চ শিখরে যাবে। পর্যটকরা যেমন ভ্রমণের জন্য আসবেন তেমন তারা তীর্থস্থানও দেখে যাবেন। অধ্যাত্মবাদ এবং সম্প্রীতি’র মিলনস্থলে পরিণত হল দিঘা, আগামী দিনে যা আন্তর্জাতিক পর্যটন মানচিত্রে জায়গা করে নেবে।”