প্রভাব খাটিয়ে ভ্যাকসিন নিয়ে বিতর্কে বিজেপির দুই নেতা

রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হওয়ায় প্রভাব খাটিয়ে তাঁরা ভ্যাকসিন নিয়েছেন। এই ঘটনায় তৃণমূল নেতৃত্বও বেজায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।

April 16, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

ভ্যাকসিনের পর্যাপ্ত সরবরাহ নেই। যে কারণে বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্য জেলায় নতুন কাউকেই ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে না। হাসপাতালে গিয়ে ফিরে আসতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। এই পরিস্থিতিতে বুধবার বিষ্ণুপুরের দুই বিজেপি নেতার করোনার টিকা নেওয়াকে কেন্দ্র করে এলাকায় গুঞ্জন ছড়িয়েছে। এ ঘটনায় সাধারণ বাসিন্দারা প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ। তাঁদের অভিযোগ, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণ বাড়ার ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে টিকা নেওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। যদিও সরবরাহে ব্যাপক ঘাটতি হওয়ায় বুধবার থেকে বাঁকুড়া জেলাজুড়ে নতুন করে টিকা দেওয়া স্থগিত করা হয়েছে। কেবলমাত্র দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু, ওইদিনই বিজেপির (BJP) বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুজিত অগস্তি এবং প্রাক্তন সভাপতি স্বপন ঘোষ টিকা নিয়েছেন। রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হওয়ায় প্রভাব খাটিয়ে তাঁরা ভ্যাকসিন নিয়েছেন। এই ঘটনায় তৃণমূল নেতৃত্বও বেজায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।

বিষ্ণুপুরের সিএমওএইচ জগন্নাথ সরকার বলেন, বুধবার থেকে নতুন কাউকে করোনার টিকা (Corona Vaccine) দেওয়া বন্ধ রয়েছে। এক্ষেত্রে ঠিক কী ঘটেছে, তা খতিয়ে দেখা হবে।

বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলসভাপতি সুজিতবাবু বলেন, সাধারণ মানুষকে সাহায্য করার জন্য আমাদের দলের কিছু ছেলে হাসপাতালে থাকে। তাঁদের মাধ্যমে খবর পেয়ে বুধবার টিকা নেওয়ার জন্য গিয়েছিলাম। আমার সঙ্গে স্বপনবাবুও ছিলেন। দু’জনেই প্রথম ডোজ নিয়েছি। বর্তমানে তৃণমূল কংগ্রেস সরকারে রয়েছে। তাই আমাদের রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর কোনও ব্যাপার নেই। স্টকে ছিল। তাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দিয়েছে।

স্বপনবাবু বলেন, সরকারি নির্দেশিকার কথা জানতাম না। করোনার টিকা ৪৫ বছরের ঊর্ধ্বে সবাইকে দেওয়া হচ্ছে জেনেই হাসপাতালে গিয়েছিলাম। নার্সরা যথারীতি নিয়ম মেনে টিকা দিয়েছেন। এতে রাজনীতির কী আছে আমি বুঝতে পারলাম না।

তৃণমূল কংগ্রেসের বাঁকুড়া জেলা সভাপতি শ্যামল সাঁতরা বলেন, বিজেপি নেতারা আইন মানেন না। ওদের কালচারই এরকম। যেসব রাজ্যে ওরা ক্ষমতায় রয়েছে, সেখানে সাধারণ মানুষের কথা বলার স্বাধীনতা নেই। সরকারি সব ক্ষেত্রে ওরা একছত্র আধিপত্য চালায়। বিষ্ণুপুরে দুই বিজেপি নেতা হাসপাতালের কিছু লোকের সঙ্গে যোগসাজশ করে টিকা নিয়েছেন। এই অনিয়মের তদন্ত দাবি করব।

বিষ্ণুপুরের স্টেশন রোডের বাসিন্দা মধুসূদন মণ্ডল বলেন, আমি বুধবার টিকা নেওয়ার জন্য হাসপাতালের নির্দিষ্ট ইউনিটে গিয়েছিলাম। সেখানে কর্তব্যরত নার্সরা বললেন, টিকা নেই। নতুনদের এখন দেওয়া হবে না। তাঁরা ১৬ এপ্রিলের পর খোঁজ নিতে বলেন। কাজ কামাই করে গিয়েছিলাম। টিকা না পেয়ে ফিরে আসতে হয়েছে। আমার মতো অনেকেই ওইদিন টিকা না পেয়ে ফিরে গিয়েছেন।

অপর এক বাসিন্দা সুবল পরামানিক বলেন, আমিও বুধবার টিকা নিতে গিয়ে ফিরে এসেছি। পরে শুনলাম বিজেপির দুই নেতা টিকা নিয়েছেন। আমার প্রশ্ন, রাজনৈতিক নেতা বলে ওঁরা যখন যাবেন তখনই টিকা পেয়ে যাবেন। আর আমরা সাধারণ খেটে খাওয়া বাসিন্দা বলে কি কোনও অধিকার নেই?

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen