মালদহে দৈনিক করোনা সংক্রমণ শূন্য

জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২০ সালের এপ্রিল মাসের শেষ সপ্তাহ নাগাদ জেলায় প্রথম করোনা রোগীর সন্ধান মেলে।

June 29, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

মালদহে (Malda) দৈনিক করোনা (COVID19) সংক্রমণ শূন্যে নেমে এসেছে। সোমবার জেলায় নতুন করে কোনও করোনা রোগীর সন্ধান পাওয়া যায়নি। এদিন জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর মোট ৪০০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে। কারও করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসেনি। ফলে জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর এবং প্রশাসনের কর্তারা স্বস্তি পেয়েছেন। তবে এই ফলাফলের পিছনে অনেককে করোনার টিকা দেওয়ার বিষয়টিও রয়েছে।  


যদিও করোনা পরীক্ষা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে কিছুটা অনীহা প্রকাশ পাচ্ছে বলে জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরের কর্তারা জানিয়েছেন। তা কাটিয়ে ওঠা গেলে সকলের পক্ষেই ভালো হবে বলে তাঁদের অভিমত। 


মালদহের উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (দুই) ডাঃ অমিতাভ মণ্ডল বলেন, করোনার প্রথম ঢেউয়ের পর গত ফেব্রুয়ারি মাসে কয়েকদিনের জন্য পজিটিভ শূন্যে নেমে এসেছিল। তারপর দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়। দ্বিতীয় দফায় এদিনই প্রথম পজিটিভ শূন্যে নামল। করোনা পরীক্ষা নিয়ে জেলাবাসীর একাংশের অনীহার বিষয়টি নিয়ে আমরাও চিন্তিত।

ইংলিশবাজার শহর সহ জেলার অন্যত্র করোনা পরীক্ষার কিটের সরবরাহ বৃদ্ধি করা হয়েছে। অনেকেই সামান্য উপসর্গ নিয়ে পরীক্ষা করাচ্ছেন। কেউ কেউ আবার উপসর্গ চেপে রেখে বাড়িতেই থেকে যাচ্ছেন। উপসর্গ দেখা দেওয়ার পর যত দ্রুত সম্ভব করোনা পরীক্ষা করানোর জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। 


জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২০ সালের এপ্রিল মাসের শেষ সপ্তাহ নাগাদ জেলায় প্রথম করোনা রোগীর সন্ধান মেলে। মানিকচক ব্লকের ওই করোনা রোগী পেশায় শ্রমিক। উত্তর ২৪ পরগনায় টাওয়ার বসানোর কাজে গিয়ে তিনি সংক্রামিত হয়েছিলেন। ওইসময় মালদহে করোনা চিকিৎসার কোনও ব্যবস্থা ছিল না। শিলিগুড়িতে চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে ওই ব্যক্তি জেলা প্রশাসনের সঙ্গে করোনা নিয়ে প্রচারে যোগ দেন।


 এদিকে, দ্বিতীয় দফায় গত চারমাসে জেলায় এক লক্ষেরও বেশি মানুষের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। জেলায় মূলত আরটিপিসিআর এবং র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন পদ্ধতিতে করোনা পরীক্ষা হয়ে থাকে। তারমধ্যে ১৭০৩১ জনের ফল পজিটিভ এসেছে। প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউ (ওয়েভ) মিলিয়ে জেলায় ২৫০ জনেরও বেশি করোনায় মারা গিয়েছেন। দ্বিতীয় দফায় করোনা জেলায় ভয়াবহ আকার ধারণ করে। একসময় জেলায় দৈনিক সংক্রমণ পাঁচশো ছাড়িয়ে যায়। বিধানসভা নির্বাচনের জেরে করোনার গতি ঊর্ধ্বমুখী হয় বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। রাজ্য সরকার আত্মশাসন বলবৎ করায় অবশ্য করোনা সংক্রমণে রাশ টানা সম্ভব হয়। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, করোনা সংক্রমণ শূন্যে নেমে আসায় আমরা স্বস্তিতে। তবে এতে আত্মতুষ্টির কোনও জায়গা নেই।

আমরা প্রতিদিন গড়ে মাত্র ৪০০ জনের পরীক্ষা করতে পারছি। তার বাইরে বিশাল সংখ্যায় জেলাবাসী থেকে যাচ্ছেন। তাঁদের মধ্যে কেউ যে এখনও সংক্রামিত নন, তা হলফ করে বলা যাবে না। অনেকে আবার উপসর্গহীন অবস্থাতেও থাকতে পারেন। ফলে সরকার নির্দেশিত বিধিনিষেধ আমাদের সকলকে মেনে চলতে হবে। করোনার তৃতীয় ঢেউ নিয়ে অনেক মতামত শোনা যাচ্ছে। বিষয়টি এখনও পর্যন্ত আমাদের কাছে পরিষ্কার নয়। তবে ভাইরাস যে নতুন চেহারায় ফেরে আসবে না, তা জোর দিয়ে বলা যাবে না। ফলে আমাদের সবরকমভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে। জেলায় আগের তুলনায় সরকারি পরিকাঠামোর মধ্যে করোনা চিকিৎসা পরিষেবা অনেক উন্নত হয়েছে। ব্লক স্তরেও বেড পর্যন্ত নলবাহিত অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে। শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি মাথায় রেখে পরিকাঠামো প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জেলাবাসীর সচেতনতা সবার আগে প্রয়োজন। মাস্ক ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হলে চলবে না। টিকাকরণের কাজ জোরকদমে চলছে। সকলকে টিকা নেওয়ার জন্যও আমরা অনুরোধ করছি। 

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen