সরকারি পরিসংখ্যানের থেকে গুজরাতে করোনায় মৃত্যু ২৭ গুণ বেশি, বলছে তথ্য

কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিধ্বস্ত হয় গুজরাতের প্রায় সব শহর।

August 17, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

গুজরাতের আমরেলির সবচেয়ে বড় দুটি শ্মশানের একটি কৈলাস মুক্তি ধাম। চারটি চুল্লি রয়েছে সেখানে। অবিরাম চিতার আগুনে গলে গিয়েছে একটি চুল্লির লোহা যা মৃতদেহকে ঠিক জায়গায় ধরে রাখে।

শ্মশানের এক স্বেচ্ছাসেবক এই বিষয়ে বলেন, গত একমাস ধরে চুল্লিগুলিতে ২৪ ঘন্টা চিতা জ্বলছে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এই শহরকে ধ্বংস করে দিয়েছে। চিতার কাঠের যোগান শেষ হয়ে যাওয়ায় কাঠের জন্যে স্থানীয় সংবাদ পত্রে বিজ্ঞাপণও দিতে হয় স্বেচ্ছাসেবকদের। স্বেচ্ছাসেবকদের মধ্যে তিনজনও করোনার বলি হয়েছেন।

দুটি শ্মশানে এই দুমাসে মোট ১,১৬১ টি মৃতদেহ পোড়ানো হয়েছে। এর বেশি মৃতদেহ এই শ্মশানে পোড়ানো যেত না বলে বাকি সব মৃতদেহ আশেপাশের গ্রামে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। মৃতদেহর সংখ্যা এত বেশি ছিল যে প্রায় ১০০ মৃতদেহকে মুসলিম গোরস্থানেও কবর দেওয়া হয়।

কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিধ্বস্ত হয় গুজরাতের প্রায় সব শহর। হাইকোর্টের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও করোনায় মৃত্যু সংখ্যার সঠিক হিসাব দেয়নি গুজরাত সরকার। ২০২০ সালে প্রথম ঢেউয়ে করোনার বলি হয়েছিলেন প্রায় ১০,০৭৫ জন গুজরাতবাসী। কিন্তু এত কিছুর পরেও করোনা মোকাবিলায় দক্ষতা প্রদর্শনের জন্যে গুজরাত সরকারকে বাহবা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

সদ্য প্রকাশিত তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে মৃত্যুর হিসেবে ব্যপক কারচুপি করেছে গুজরাত সরকার। এই নিরীক্ষায় দেখা যায় গুজরাতের ৬৮ পৌরসভায় গত বছরের থেকে ১৬,৮৯২ জন বেশি মানুষ মারা গেছেন ২০২০-র মার্চ থেকে ২০২১- এর এপ্রিলের মধ্যে। এই ৬৮ পৌরসভা রাজ্যের জনসংখ্যার মাত্র ৬%। রাজ্যের জনসংখ্যা ৬.০৩ কোটি। সেই হিসেব মতো গুজরাতে সরকারি পরিসংখ্যানের তুলনায় অন্তত ২.৩ লক্ষ বেশি মানুষ মারা গেছেন এই মহামারিতে। যা সরকারের দেওয়া পরিসংখ্যানের চেয়ে প্রায় ২৭ গুন বেশি।

পৌরসভার দেওয়া তথ্যে গ্রামীণ এলাকার হিসেব নেই। স্বভাবতই বহু মৃত্যুর খবরই পাননি সরকারি আধিকারিকরা। আর সেই সংখ্যাটা জনসংখ্যার প্রায় ৫৭%। শুধু এপ্রিলেই এই ৬৮ পৌরসভায় বাড়তি মৃত্যু ছিল ১০ হাজারেও বেশি। তাহলে পুরো রাজ্যের কথা ভাবলেই পরিস্কার হয়ে যাবে গুজরাতের মৃত্যু মিছিলের ছবি।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen